Awas Yojana scam protest

ভাঙা ঘরের ছবি নিয়ে বিক্ষোভে গীতা সরেন

রাজ্য

আবাস যোজনায় দলবাজি, দুর্নীতি যে হয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েও আবাস প্লাসের নতুন তালিকা বিডিও দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিলেন প্রতিনিধিদলকে। কারা ঘর পাচ্ছেন তার তালিকা প্রকাশ্যে আনা নিষেধ! শুধু তাই নয়, গ্রামবাসীদের বক্তব্য, নিয়ম মেনে যদি তালিকা তৈরি হয় তাহলে কেন এত ভয়? তাঁদের প্রশ্ন, এর পেছনে কি শাসকদলের চাপ রয়েছে?
শুক্রবার সিপিআই (এম)’র ডাকে বিডিও অফিসে বিক্ষোভ ডেপুটেশনের সময়ে প্রতিনিধি দলকে যখন বিডিও বলছেন তালিকা দেবার বা তালিকা টাঙানোর অর্ডার নেই, তখন বহু বঞ্চিত মানুষ ব্লক অফিস ঘিরে রেখেছেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন গীতা সোরেনও। তাঁর ঘরে ছাদ নেই, ত্রিপল টাঙিয়ে খুব কষ্টে বাস করেন। তিনি তাঁর ভাঙা ঘরের ছবি গলায় ঝুলিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। মেমারী-২ ব্লকের বিজুর-২ পঞ্চায়েতের ধুনুই গ্রামে বাড়ি অত্যন্ত গরিব এই মহিলা। তাঁর স্বামী ১৯৮০ সালে বসতপুরে মজুরি আন্দোলন করতে গিয়ে জোতদার বাহিনীর হাতে খুন হন। 
গীতা সোরেন এদিন বিডিও অফিসের বিক্ষোভে অংশ নিয়ে জানিয়েছেন, তিনি ২০১৫ সালে এবং ২০২২ সালে ঘরের জন্য আবেদন করেন। ব্লক অফিসে সেই প্রমাণও আছে কিন্তু তাঁর নাম নথিভুক্ত হয়নি। কারণ তিনি সিপিআই(এম) সমর্থক। কিন্তু তাঁর গ্রামেই যাদের পাকা বাড়ি, আছে, ধনী লোক তারা তৃণমূল করেন তাই তাদের ঘর দেওয়া হয়েছে। গীতা সোরেনের মতো এমন অনেক গরিব মানুষ এদিন মেমারী-২ ব্লকে হাজির হয়ে তাঁদের বাড়ির দাবিকে জোরদার করেছেন, বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। 
গীতা সোরেন এদিন চিৎকার করে বলেছেন, টাকার বিনিময়ে তৃণমূল যেমন চাকরি বিক্রি করেছে তেমন গরিবের ঘর বিক্রি করে দিয়েছে বড়লোকদের। টাকা নিয়ে শাসকদলের নেতারা গরিবের প্রাপ্য বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছে। তিনি এদিন স্পষ্ট বলেছেন হকের বাড়ি আদায় করতে লড়াই চলবে। লড়েই আদায় করে নিতে হবে বাড়ির অধিকার। তিনি একথাও বলেছে তৃণমূল লোভ দেখিয়েছে বারে বারে কিন্তু তিনি লালঝান্ডাটা কখনো হাত থেকে ছাড়েননি।  
এদিন মেমারী-২ ব্লকের ৯টি অঞ্চল থেকে দলে দলে মানুষ তাঁদের হকের ঘর চাইতে বিডিও অফিসে বিক্ষোভ দেখান। আগে থেকে বিডিও ভয় পেয়ে প্রচুর পুলিশ বাহিনী ব্লকে মোতায়েন করে। যদিও এই পুলিশ ও প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করেই সিপিআই(এম) নেতৃত্ব বলেছেন, চোরেদের পাহারাদার বিডিও। পুলিশ লাঠি নিয়ে প্রতিবাদী মানুষকে বেশিদিন ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। যদি দাবি না পূরণ হয় তাহলে এরপর পঞ্চায়েতগুলিতে তালা চাবি দিয়ে দেবেন বিক্ষুব্ধ মানুষ। চোরেদের তাড়াতে গ্রামে গ্রামে সেই প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে এদিনের সভা থেকে। 
এদিন সিপিআই(এম) মেমারী-২ এরিয়া কমিটির পক্ষ থেকে, মেমারী-২ ব্লক অফিসে(পাহাড়হাটী) বিডিও’কে আবাস যোজনার তালিকায় থাকা অযোগ্য ব্যক্তিদের নাম বাতিল করার জোরালো দাবির মুখে পড়তে হয়। দাবি, যে সকল গরিব যোগ্য ব্যক্তিদের নাম বাদ গেছে তাঁদের অবিলম্বে তালিকাভুক্ত করতে হবে। গ্রাম সংসদ সভায় সেই তালিকা অনুমোদন করে তা প্রকাশ্যে টাঙাতে হবে। তালিকা দিতে হবে স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলিকে। 
এছাড়াও দাবি, ১০০ দিনের কাজ অবিলম্বে চালু করতে হবে। দেড় বছর আগে কাজ করেছেন, মজুরি এখনো পাননি যাঁরা, অবিলম্বে তাঁদের সেই ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরি মিটিয়ে দিতে হবে। এদিন ব্লক ডেপুটেশনের পর ডেপুটেশন শেষে ব্লক অফিস থেকে মিছিলে শামিল হন অসংখ্য মানুষ। এদিন ডেপুটেশনের আগে প্রতিবাদী মানুষের জমায়েতে বক্তব্য রাখেন পার্টি নেতা তাপস বসু, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, সুদেব ঘোষ, বলাই মুর্মু, বাবলু পাল প্রমুখ। 
 

Comments :0

Login to leave a comment