Kanpur

৩ মার্চ পাটনায় যৌথ সভা বিরোধী মঞ্চের

জাতীয়

মোদীর তথাকথিত রাম রাজ্যে দেশের দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু এবং সমাজের অন্যান্য অনগ্রসর অংশের মানুষ যাঁরা দেশের জনসংখ্যার প্রশ্নে ৯০ শতাংশ তাঁরা কাজ পেতে বঞ্চিত। গত দশ বছরে বিজেপি’র শাসনে কর্মসংস্থানের কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি এদেশে। মঙ্গলবার ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা কর্মসূচিতে কানপুর শহরে ঘণ্টাঘর অঞ্চলে এক জনসভায় মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে একথা বলেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। 
এদিকে লোকসভার নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশের আগেই রাজ্যে রাজ্যে প্রচারে নেমে পড়েছে বিরোধীরা। আগামী ৩ মার্চ পাটনায় যৌথ সমাবেশ করতে চলেছে বিরোধীরা। ওই দিন বিশাল জনসভায় সিপিআই(এম)’র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, আরজেডি প্রধান এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের সঙ্গেই উপস্থিত থাকবেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। পাটনায় ঐতিহাসিক গান্ধী ময়াদানে ‘জনবিশ্বাস মহার‌্যালি’তে সিপিআই’র সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা, সিপিআই(এমএল)’র সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এবং প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবও ভাষণ দেবেন। এদিন যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা জানিয়েছেন বিহারে কংগ্রেসের সভাপতি অখিলেশ প্রসাদ সিং এবং আরজেডি’র সভাপতি জগদানন্দ সিং।      
এদিন কানপুরে জসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে রাহুল গান্ধী বিভিন্ন দিক থেকে বঞ্চনার শিকার হওয়া দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু এবং অন্যান্য অনগ্রসর অংশের মানুষের দাবির পক্ষে সরব হন। এই প্রশ্নে তিনি বলেন, দেশের জনসংখ্যার ৫০ শতাংশই সমাজের অনগ্রসর অংশের মানুষ। এছাড়া ১৫ শতাংশই দলিত, ৮ শতাংশ আদিবাসী এবং ১৫ শতাংশ সংখ্যালঘু। অথচ এদেশে এই বিশাল অংশের মানুষের হাতে কাজ নেই। একথা উল্লেখ করে রাহুল বলেন, পিছিয়ে থাকা অংশ, দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু সহ গরিব মানুষরা কোনও অবস্থাতেই তাঁরা কাজ পাবেন না। কারণ এই অংশের মানুষ কাজ করে রোজগার করুক তা প্রধানমন্ত্রী মোদী কখনই চান না। অথচ রোজগার না করতে পেরে অভুক্ত অবস্থায় অপুষ্টির শিকার হয়ে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ আকালে মারা যাচ্ছেন। 
এদিনের সভায় রাহুল বলেন, শ্রেণি ও জাতপাতে বিভক্ত এদেশের সমাজ। অথচ ভারতে বড় বড় মিডিয়ায় এবং কর্পোরেট সংস্থায় দলিত, আদিবাসীরা কোনও কাজ পান না। এমনকি সরকারি আধিকারিকদের মধ্যেও সমাজের এই অংশের প্রতিনিধির সংখ্যা একেবারেই কম।
অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমাজের অনগ্রসর অংশের মানুষকে আমন্ত্রণ না জানানোয় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে রাহুল বলেন, এই অনুষ্ঠানে কতজন দলিত, আদিবাসী উপস্থিত ছিলেন ওই দিন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আদিবাসী হওয়ায় তাঁকেও ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ দলিত হওয়ায় তাঁকেও ডাকা হয়নি এই অনুষ্ঠানে। 
এই পরিস্থিতি গোটা দেশে জাতগণনা জরুরি বলে এদিন দাবি করেন রাহুল। তিনি বলেন, এই সমীক্ষা থেকেই উঠে আসবে সমাজিকভাবে বঞ্চিত মানুষের চিত্র। এই অনুসারেই তাঁদের উন্নয়ণে অর্থবরাদ্দ করা হবে বলে জানান। একই সঙ্গে মোদী সরকারের আমলে দেশের যাবতীয় সম্পদ কিছু পরিবারের হাতে চলে যাওয়ার বিষয়ে এদিনের ভাষণে উল্লেখ করেন রাহুল। তিনি বলেন, আদানি, আম্বানি, টাটা, বিড়লাদের মতো ২-৩ শতাংশ ধনী পরিবারের হাতেই এখন সমস্ত সম্পদ। তারাই দেশকে চালাচ্ছে। তারা নতুন ভারতের মহারাজা হয়ে বসেছেন। 
এদিনের ভাষণে যোগী সরকারের শিক্ষক দুর্নীতি নিয়েও সরব হন রাহুল। তিনি বলেন, যাবতীয় আইন কানুনকে উপেক্ষা করে এই রাজ্যে দলিত আদিবাসীদের হাত থেকে সরকারি স্কুলে শিক্ষক হওয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছে বিজেপি সরকার। চাকরিতে সংরক্ষণ ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে দিয়ে ৬৮ হাজার শিক্ষক পদে তফসিলি জাতি (এসসি), আদিবাসী (এসটি) এবং অন্যান্য অনগ্রসর অংশ (ওবিসি) চাকরি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে একজনকেও নিয়োগ করেনি উত্তর প্রদেশের সরকার।   

Comments :0

Login to leave a comment