সুভাষ পারিয়াল
বেশি দামে আদানি গোষ্ঠীর থেকে কয়লা কিনতে হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাগুলিকে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারই বাধ্য করছে। দেশের কয়লা উৎপাদন পর্যাপ্ত হলেও বিদেশ থেকে আদানির কয়লা বেশি দামে কেনায় ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ বাড়ছে। বিদ্যুতের দাম ও বাড়বে চড়া হারে।
বিদ্যুৎ আইন সংশোধনী বিলের বিষয়ে এ কথা বলেছেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তিনি মনে করিয়েছেন যে কৃষক আন্দোলন এই বিল বাতিল করার দাবি জানিয়েছিল। বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’ কেন, ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। রাজ্যভিত্তিক লড়াইয়ের ফারাকও ব্যাখ্যা করেছেন চক্রবর্তী।
শনিবার সিপিআই(এম) উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটি আয়োজিত কর্মীসভায় বক্তব্য রাখেন তিনি। মধ্যমগ্রামের নজরুল মঞ্চে এই সভার বিষয় ছিল স্মার্ট মিটার ও জনবিরোধী বিদ্যুৎ নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন।
স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে এই রাজ্যেও সাধারণ মানুষকে নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ৩ নভেম্বর এই বিলের বিরুদ্ধ প্রতিবাদ দিবস আছে।
এদিনের সভার সভাপতি ছিলেন সিপিআই(এম) উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী। রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য পলাশ দাস এবং সিআইটিইউ নেতা সুদীপ দত্তও বক্তব্য রেখেছেন।
সুদীপ দত্ত বলেন, স্মার্ট মিটারগুলির দাম পড়বে প্রায় ১২ হাজার টাকা। দাম তোলা হবে গ্রাহকদের কাছ থেকে। প্রতি মাসে দিতে হবে বাড়তি ১৮০ টাকা, মিটারের দামের কিস্তি হিসাবে। পারস্পরিক ভরতুকি, বা বেশি ব্যবহার করলে বাড়তি হারে মাশুলের পদ্ধতি উঠে যাবে।
এদিন সুজন চক্রবর্তী বলেন, আগামী ৫ অক্টোবর সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান। ১০ বছর হয়ে গেছে এখনো চিট ফান্ডের চার্জশিট পেশ করা হলো না। ৮ বছর হলো নারদ মামলার কোন ফয়সালা হলো না। এর থেকে দিল্লির বিজেপি সরকারের মনোভাব স্পষ্ট বোঝা যায়। তৃণমূল সাংসদ ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ড’ গোষ্ঠীর অবৈধ লেনদেনে শাস্তি হচ্ছে না কেন, নারদ মামলায় কেন অপরাধীদের ধরছে হচ্ছে না, তোলা হয়েছে সেই প্রশ্ন।
চক্রবর্তী বলেন, ভারত ও তার সংবিধানকে রক্ষা করা যাবে কীনা তা ঠিক হবে আগামী লোকসভার নির্বাচনে। বিজেপি-র পরাজয়কে নিশ্চিত করতে হবে। ব্যাঙ্ক লুট, জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি, দেশের সম্পদ আদানীদের হাতে তুলে দেওয়া, নির্বাচন কমিশন গঠন করতে কমিটি থেকে দেশের প্রধান বিচারপতিকে বাদ দেওয়ার বিল, বিচার ব্যবস্থার ওপর আঘাত নামিয়ে আনার বিরুদ্ধে এক জোট হয়ে লড়াইয়ে নামতে হবে।
চক্রবর্তী বলেন, কেন্দ্রে আসীন বিজেপি এই সংবিধানকে পছন্দ করে না। অনেক রাজ্য নিয়ে ভারতবর্ষ। যত রাজ্য তত ভাষা। কিন্তু দিল্লির সরকার যা বলতে চাইছে তা ভয়াবহ। এক দেশ, এক ভাষা, এক নেতা। দেশের বিভিন্ন উপনির্বাচন এবং নির্বাচনে স্পষ্ট বিজেপি’র ওপর ক্ষোভ বাড়ছে। বিজেপি’কে কেন্দ্রের সরকার থেকে সরাতে হবে। তার জন্য ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ।
সেই সঙ্গেই রাজ্যভিত্তিক বাস্তবতাকে মনে করিয়েছেন চক্রবর্তী। তিনি বলেছেন, ‘‘ বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’-তে কংগ্রেস এবং বামপন্থীরা রয়েছে। কিন্তু কেরলে বামপন্থী জোট লড়বে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থীরা লড়বে বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েত নির্বাচনেই তা স্পষ্ট হয়েছে।’’
Comments :0