তল্লাশি তো চলছে। মাঝেমাঝেই দেখা যাচ্ছে। কিন্তু অপরাধের কিনারা হচ্ছে না। শাস্তি ঘোষণা হচ্ছে না। ইডি বা সিবিআই’কে রাজনৈতিক যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা দুর্নীতির তদন্তের পক্ষে। কিন্তু তদন্ত সংস্থাকে ব্যবহার করে লেনদেনের বিপক্ষে। ইডি বা সিবিআই’র অপব্যবহারের বিরুদ্ধে।
শনিবার হাওড়ায় সাংবাদিক সম্মেলনে এই অবস্থান স্পষ্ট জানিয়েছেন সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ। এদিন সিপিআই(এম) জেলা দপ্তর অনিল বিশ্বাস ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এখানেই চলছে পার্টির রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন।
শনিবারও রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ, নদীয়ার রানাঘাট, হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলছে।
উলুবেড়িয়ার কুলগাছিয়ার শ্রীরামপুরে অঙ্কিত রাইস মিলেও হানা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থা। গত সপ্তাহে এই দুর্নীতি কান্ডে গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রাক্তন খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
সারা দেশে ইডি এবং সিবিআই’কে অপব্যবহারের জন্য বিজেপি সরকারকে দায়ী করেন ইয়েচুরি। তিনি বলেন, ‘‘বিরোধী স্বর তুললেই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে সন্ত্রাসদমনের আইন প্রয়োগের উল্লেখ করেন। ভীমা কোরেগাঁও মামলায় দিনের পর দিন সমাজকর্মীদের জেলে আটকে রাখা হয়েছে ইউএপিএ আইনের ধারা প্রয়োগ করে। অথচ চার্জশিট দিতে পারছে না।’’
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্ন ছিল, রাজ্যে দুর্নীতির তদন্তেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাকে অপব্যবহারের অভিযোগ তুলছে তৃণমূল।
ইয়েচুরি বলেন, ‘‘ইডি বা সিবিআই দক্ষ। তাদের নিজের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সারদা মামলায় আদালতের নির্দেশে তদন্ত শুরু করেছিল সিবিআই। আজ পর্যন্ত কারও শাস্তি হলো না কেন?’’ বিজেপি এবং তৃণমূলের বোঝাপড়াকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের আপত্তি দুর্নীতির তদন্তে নয়। দুর্নীতি ধরা হোক আমরা বরাবর চেয়েছি। কারণ জনতার অর্থ লুট হয়েছে। কিন্তু ইডি, সিবিআই-কে ব্যবহার করে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করে বিজেপি। বারবার দেখা গিয়েছে। ভোটে হারলেও দল ভাঙিয়ে সরকার গড়ে। এখানেই অপব্যবহার। আমরা তার বিরোধিতা করছি।’’
তৃণমূলের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, ‘‘লেনদেনে দু’পক্ষই যুক্ত থাকে।’’ কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের মেয়াদে ৫ হাজারের বেশি অভিযোগের তদন্ত করেছে ইডি। মাত্র ২৭টি তদন্তে অভিযুক্তদের শাস্তি হয়েছে আদালতে। ইয়েচুরি এই তথ্যের উল্লেখ করেন।
ইডি তল্লাশি প্রসঙ্গেই সেলিম বলেন, ‘‘তল্লাশি তো অনেকবারই হচ্ছে। শুভেন্দু অধিকারীকেও ডেকেছিল। তারপর কী হয়েছে? চার্জশিট দাখিল হচ্ছে না কোনও তদন্তে। আমরা বলছি দুর্নীতি করলে শাস্তি দিতে হবে। ইডি বা সিবিআই’র মতো সংস্থা যেন রাজনৈতিক দরকষাকষির অংশ না হয়। তাতে দুর্নীতিগ্রস্তরা দল বদলায়, দুর্নীতি খতম হয় না।’’
Comments :0