একদিকে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের চূড়ান্ত অভাব দেখা দিয়েছে সরকারি হাসপাতালে, অন্যদিকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বহু জরুরি অপারেশন বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। ফলে বিপদে পড়ছেন সাধারণ গরিব মানুষ। এই অনৈতিকতার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে জয়েন্ট প্ল্যাটফরম অব ডক্টরস, পশ্চিমবঙ্গ।
সংগঠনের বক্তব্য, শুরু হওয়ার পর থেকেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসা নিয়ে সাধারণ মানুষ চূড়ান্ত হয়রানির শিকার। কোথায় কোন রোগের কিভাবে চিকিৎসা হবে— এ নিয়ে নানা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। আর এই বিতর্কের মধ্যেই হার্নিয়া, হাইড্রোসিল, ফিসার, ফিশ্চুলার মতো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অপারেশন স্বাস্থ্যসাথীর আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আবার একই সঙ্গে বিনামূল্যে চিকিৎসার ফ্লেক্স, হোর্ডিংয়ে ভরে যাওয়া সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সুপার, প্রিন্সিপালদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ওষুধ চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা থেকে হাসপাতাল চালানোর সমস্ত খরচ, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসা দিয়ে, তাদের নিজেদেরকেই তুলতে হবে।
ফলে প্রতিদিন খবর মিলছে, বহু সরকারি হাসপাতালে টাকা না পাওয়ায় ঠিকাদারেরা ওষুধ, সরঞ্জাম সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। বহু পরিষেবা কার্যত বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে বর্তমান ব্যবস্থায়। বিপদে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
শুধু তাই নয়, জয়েন্ট প্ল্যাটফরম অব ডক্টরস, পশ্চিমবঙ্গর যুগ্ম আহ্বায়ক ডাঃ পুণ্যব্রত গুণ ও ডাঃ হীরালাল কোঙার বুধবার এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, বেসরকারি নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিরও কোটি কোটি টাকার বিল বকেয়া রেখে হুমকি দেওয়া হচ্ছে যে, স্বাস্থ্যসাথীর পরিষেবা না দিলে লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে। কোটি কোটি টাকা বকেয়া থাকলে তারাই বা পরিষেবা দেবেন কি করে? স্বাস্থ্য দপ্তর টাকার ব্যবস্থা না করে এক্ষেত্রেও দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে বলেই আমরা মনে করি।
সংগঠনের বক্তব্য, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের চিকিৎসায় মানুষের সমস্ত হয়রানি অবিলম্বে দূর করতে হবে এবং একই সাথে প্রতিটি মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়া সুনিশ্চিত করতে হবে। এবং অবশ্যই সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথীর চিকিৎসা বন্ধ করতে হবে। রোগীর ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে তাঁকে কত টাকার পরিষেবা দেওয়া হলো তার উল্লেখ করার অপমানসূচক ভাবনা ও সম্ভাব্য আদেশনামা প্রকাশের চিন্তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। বিনামূল্যে স্বাস্থ্য মানুষের অধিকার এবং পরিষেবা দেওয়ার টাকা সাধারণ মানুষের ট্যাক্স থেকেই আসে, কারো বাড়ি থেকে নয়। সুতরাং সরকার অনৈতিক চিন্তাভাবনা নিয়ে চলেছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
Comments :0