Narendra Modi

জাতিবিদ্বেষ, হিংসার মুখে মোদীর দাবি সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত হবে ভারত

জাতীয়

‘‘স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তির সময় ভারত একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে। দুর্নীতি, জাতবিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িকতার কোন স্থান থাকবে না ভারতে।’’ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। 
মোদি সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আজাদির অমৃত কাল চলছে। প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎকারে বলছেন ভারতে কোন জাত বিদ্বেষ থাকবে না। সত্যি কি তাই? প্রধানমন্ত্রী যখন এই সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন তখন কয়েকদিন আগে যেই রাজ্য থেকে তিনি সাংসদ সেই উত্তরপ্রদেশে মুসলিম হওয়ার জন্য শিক্ষিকার নির্দেশে এক দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রকে ক্লাসের মধ্যে চড় মারছেন সহপাঠীরা। আর মণিপুরে দুই জাতিগোষ্ঠীর লাগাতার হিংসা, নারীদের নগ্ন করে হাঁটানো সত্ত্বেও সংসদে জবাবদিহি এড়াতে চান প্রধানমন্ত্রী।


তিনি দাবি করেছেন দুর্নীতি মুক্ত হবে ভারত। নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালিন সারদা, নারদার মতো একাধিক দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই, আদালতের নির্দেশে। দোষীদের শাস্তি হয়নি। তাঁর দলের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের বিরুদ্ধে রয়েছে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ। বরং বলা হয়, মোদীর বিজেপি হলো ওয়াশিং মেশিন। অন্য দলের কেউ দুর্নীতি করে তাঁর দলে যোগ দিলেই বন্ধ দুর্নীতি। চলতি বছর আদানি শেয়ার কেলেঙ্কারি নিয়ে উত্তাল হয়েছে গোটা দেশ। দফায় দফায় মুলতুবি হয়েছে সংসদের অধিবেশন। এই সব দুর্নীতির কোন সুরাহা হয়নি। 


২০১৪ সালের পর থেকে দেশে ক্রমশ ছড়িয়েছে সাম্প্রদায়িকতার বিষ। বিজেপির নেতা মন্ত্রীদের মুখে শোনা গিয়েছে সাম্প্রদায়িকতা উস্কানির স্লোগান। এনআরসি আন্দোলনের সময় শাহেনবাগের আন্দোলনকারীদের গুলি মারার নিদান দিয়েছিলেন মোদী মন্ত্রীসভার সদস্য অনুরাগ ঠাকুর। ‘লাভ জিহাদ’-র নাম করে ভিন ধর্মের যুবকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। ‘ভারত একটি হিন্দু রাষ্ট্র’ এই ধরনের কথা শোনা গিয়েছে আরএসএসের নেতাদের মুখে। তবু জি-২০ গোষ্ঠীর বৈঠকে আন্তর্জাতিক স্তরে ভাবমূর্তি বিচারে রেখে এই প্রচার প্রধানমন্ত্রী। আন্তর্জাতিক স্তরে সমালোচনার মুখে পড়ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সরকার।  


সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন যে, ‘‘বহু বছর ধরে ভারতকে ভুখা পেটের দেশ হিসাবে দেখা হয়েছে। কিন্তু এখন ভারতে ১০০ কোটি মানুষ নতুন কিছু করার প্রত্যাশা করেন। আর ২০০ কোটি দক্ষ হাত রয়েছে এই ভারতে।’’ 
স্বাধীনতার ৭৫ বছর পার করেছে ভারত। গত ৭৫ বছরের মধ্যে দেশে বেকারত্বের হার সর্বাধিক মোদীর জমানায়। করোনা অতিমারির সময় কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। গত ন’বছর বেকারত্বের হার বেড়েছে প্রতিনিয়ত। বিশ্ব ক্ষুধা তালিকাতে ভারতের স্থান ক্রমশ নিচে নামছে। ১২১ টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১০৭।

Comments :0

Login to leave a comment