Left on US-IRAN Conflict

মোদীকে আমেরিকা-ইজরায়েলের পক্ষ ছাড়তে হবে, দাবি বামপন্থীদের, প্রতিবাদের ডাক

জাতীয়

ইরানের ওপর আমেরিকার বোমা ফেলার তীব্র নিন্দা করল বামপন্থী পাঁচ দল। সিপিআই(এম) সহ পাঁচ দলের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে এই আক্রমণ ইরানের সার্বভৌমত্বকে লঙ্ঘন করেছে। লঙ্ঘন করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সনদকে। বলা হয়েছে, এই আক্রমণ সারা বিশ্বের অশান্তির আগুন জ্বালাবে, অস্থির করবে পশ্চিম এশিয়াকে এবং তার গুরুতর অর্থনৈতিক প্রভাব রয়েছে। 
ইরানে অন্তত তিনটি পরমাণু কেন্দ্রে বোমা ফেলেছে আমেরিকা। ব্যবহার করা হয়েছে বি-২ বোমারু বিমান। যার মধ্যে বাঙ্কার ভেঙে আঘাত করার ক্ষমতাধর ক্ষেপণাস্ত্র বয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ব্যবহার করেছে টোমাহল ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। অথচ আন্তর্জাতিক পরমাণু নজরদারি সংস্থা আইএইএ নিজেই জানিয়েছে যে ইরান পরমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে এমন কোনও প্রমাণ তাদের হাতে নেই। এমনকি আমেরিকার নিজস্ব গোয়েন্দা বিভাগের তথ্যও জানিয়েছে ইরানের হাতে পরমাণু অস্ত্র নেই। আমেরিকার হাতে পারমাণবিক অস্ত্র ভান্ডার সবচেয়ে বেশি। তার দোসর ইজরায়েল। আমেরিকার মদতে ইজরায়েল গত ১৩ জুন রাতে আক্রমণ করে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অজুহাত দেখিয়ে।
পাঁচ বামপন্থী দল বলেছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির একেবারে কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে আক্রমণ করা হয়েছে। অথচ গত ১৯ জুন আইএইএ’র ডিরেক্টর জেনারেল রাফাল গ্রসি নিজেই স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছিলেন যে পরমাণু অস্ত্র তৈরির মতো ধারাবাহিক কোনও প্রয়াস চলছে এমন প্রমাণ হাতে নেই। তাছাড়া, ইরান পরমাণু অস্ত্র প্রসার রোধ চুক্তিতে সই করা দেশগুলির অন্যতম। 
বামপন্থী দলগুলি বলেছে, প্রথমে ইজরায়েল আক্রমণ চালায় হয়েছে ইরান-আমেরিকা আলোচনা প্রক্রিয়া ভেস্তে দিতে। এবার আমেরিকা নিজে আক্রমণে যোগ দিয়েছে। অথচ আগের দিনই রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প আলোচনা প্রক্রিয়ার জন্য দু’সপ্তাহ সময় দিয়েছিলেন। এ থেকেই বোঝা যায় যে কূটনীতির পথ অথবা নিজের গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য, কোনোকিছুর ওপরই ভরসা নেই আমেরিকার। স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে পশ্চিম এশিয়ায় একাধিপত্য কায়েমের জন্য ইরানকে ধ্বংস করাই একমাত্র উদ্দেশ্য। 
বামপন্থীরা আরও বলেছে, এই আক্রমণ আমেরিকা সামরিক শিল্প পরিকাঠামোর স্বার্থে যাতে আন্তর্জাতিক লগ্নি পুঁজি অর্থনৈতিক সঙ্কটের সময়ে বেরনোর রাস্তা পায়। অতীতে ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরির অজুহাত দেখিয়ে হামলা করেছিল আমেরিকা। যদিও এমন কোনও অস্ত্র মেলেনি। মার্কিন হামলায় সংঘাতের মাত্রা বাড়বে, বিশ্বশান্তির পক্ষে ধবংসাত্মক প্রভাব পড়বে। সাধারণ মানুষের জীবনজীবিকায় প্রভাব পড়বে। কারণ পশ্চিম এশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানির ওপর ভারতের দেশগুলি নির্ভর করে থাকে। 
বামপন্থীদের দাবি, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আমেরিকা-ইজরায়েলের পক্ষে থাকার অবস্থান ছাড়তে হবে। বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ থামানোর পক্ষে উদ্যোগে শামিল হতে হবে ভারতকে। বামপন্থীরা সবস্তরে এই হামলার প্রতিবাদ সংগঠিত করার ডাক দিয়েছেন।
সিপিআই(এম)’র পাশাপাশি সিপিআই, সিপিআই(এম-এল), আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লক দিয়েছে এই বিবৃতি।

Comments :0

Login to leave a comment