DYFI

আদানির মুনাফায় কাটা পড়েছে হাজারো গাছ, যুব নেতৃত্বের কাছে ক্ষোভ উগড়ে দিল ফারাক্কা

রাজ্য জেলা

CPIM TMC BJP AIKS WEST BENGAL PANCHAYAT ELECTION WEST BENGAL POLITICS 2023 BENGALI NEWSDYFI INSAAF YATRA

অনির্বাণ দে

আদানির ব্যবসা বাড়াতে রাজ্য সরকারের পুলিশ আমাদের উপর লাঠি চালিয়েছে। ওরা শক্তিশালী। তবে আমারাও একজোট”। ইনসাফ যাত্রায় শামিল যুবকর্মীদের সামনে এমনই অভিযোগ করলেন ফারাক্কার দাদানটোলার বাসিন্দা মুক্তার আনসারি। 

আদানিদের প্রকল্পের বিরুদ্ধে সামনে রুখে দাঁড়িয়েছে ফারাক্কার দাদানটোলা গ্রাম। গ্রামবাসীদের আম, লিচুর বাগান কেটে বিদ্যুতের তার বাংলাদেশ নিয়ে যাচ্ছে আদানিরা। ভুল বুঝিয়ে সই করানো হয়েছিল অনেককে দিয়েই। দেওয়া হয়নি পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ। গ্রামের মানুষ জানান, তাঁরা এই অন্যায় মানবেন না। প্রকল্পের কাজ আটকে দেন ঐক্যবদ্ধ গ্রামবাসীরা। এর পালটা তৃণমূল সরকারের পুলিশকে সাথে নিয়েই গ্রামে ঢোকে কোম্পানির কর্মচারীরা । বাধা দেওয়ায় গ্রামবাসীদের উপর চড়াও হয় পুলিশ । জুটেছে মার। পুলিশ ঢুকে ভাঙচুর করে বাড়ির ভেতরেও। সেটা ২০২২ সালের জুলাই মাস। এরপর  গ্রামবাসীদের নামে দেওয়া হয় মিথ্যা মামলা। তারপর দীর্ঘ ইংনিস। রাজ্য সরকার আর আদানির বিরুদ্ধে এখনও চলছে আইনি লড়াই।

দাদানটোলার আলতাফ হোসেন, ওয়াশিকুল আলমরা জানিয়েছেন, গাছ পিছু এক সিজিনে আয় হয় প্রায়  ২০ হাজার টাকা।  যে ক্ষতি হয়েছে তার হিসেব না করেই টাকা ধরানো হয়েছে গ্রামবাসীদের হাতে। দেওয়া হয়ছে পুলিশ প্রশাসনের চাপ। 

ফারাক্কার বেনিয়াগ্রামের দাদনটোলা গ্রামে গিয়ে রবিবার লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন ইনসাফ যাত্রায় শামিল ডিওয়াইএফআই কর্মীরা। আদানির ব্যবসায়িক প্রজেক্টে   ফারাক্কা ব্লকের ইমামনগর ও বেনিয়াগ্রাম অঞ্চলের  ৪ টি মৌজা ও ১১ টি গ্রামের উপর দিয়ে হাই টেনশন বিদ্যুৎ’এর তার নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রকল্পের জন্য হাই টেনশন তার নিয়ে যাওয়ার জন্য কয়েক হাজার আম ও লিচু গাছ কাটা হয়েছে  সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন চারশো’র কাছে কৃষক। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ফলচাষির সংখ্যা হাজারের বেশি। 

এদিন ডিওয়াইএফআই’র রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখার্জি, রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, গণআন্দোলনের নেতা দিলীপ মিশ্র প্রমুখ গ্রামে যান। ধ্রুবজ্যোতি সাহা বলেন, “গ্রামের মানুষের লাগাতার লড়াইয়ের পাশে থাকবে যুবরা। তৃণমূল আর বিজেপি দুই দলই আদানির সাথে  আছে। তাও  গ্রামের মানুষের ঐক্যের কাছে ওদের হারতেই হবে”।

যুব নেতৃত্ব বলছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই এলাকায় ব্যাপক সন্ত্রাস চালিয়েছে তৃণমূল। সেই কথাও তুলে ধরেছেন গ্রামের মানুষ। এদিন ভিন রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে এমন শ্রমিকদের বাড়ি গিয়ে শ্রমিক পরিবারগুলির সাথে কথা বলছেন যুব নেতৃত্ব।  করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় মৃত ফারাক্কার পরিযায়ী শ্রমিক দীপঙ্কর মন্ডলের বাড়িতেও এদিন যান তাঁরা। বেওয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পলাশী গ্রামের বাড়িতে গিয়ে কথা বললেন মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের পিতা লক্ষণ মন্ডলের সাথে। লক্ষণ মণ্ডল যুবকর্মীদের সামনে পেয়ে জানান, গ্রামে কাজ নেই বলেই চেন্নাই যাচ্ছিল ছেলে। 

এদিন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখার্জি বলেন, “রাজ্যে কাজের অভাব স্পষ্ট। প্রতিদিন মুর্শিদাবাদ, মালদার গ্রামে ভিনরাজ্যে থেকে যুবকদের মরদেহ ফিরছে। দেখেও দেখছে না সরকার।  রাজ্যে কাজের দাবিতে তীব্রতর হবে যুবদের লড়াই”।

এর পাশাপাশি ওডিশায় ঢালাইয়ের কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারান ফারাক্কার আমতলার যুবক রাহুল শেখ। রবিবার তাঁর পরিজনদের সঙ্গেও দেখা করেন যুবরা। 

এদিকে শনিবার ফের মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলায় এসে পৌঁছেছে এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু সংবাদ।

গ্রামে কাজ না থাকায় মাস খানেক আগে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে গিয়েছিলেন ভগবানগোলা থানার ওলাপুর গ্রামের বাসিন্দা  ছবি সেখ। সেখানে  রেলের এক ঠিকাদার সংস্থায় শ্রমিকের কাজ করছিলেন তিনি। 

শনিবার দুপুরে বাড়িতে মৃত্যু সংবাদ আসে । কাজ চলার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। ছবি শেখের বাড়িতে রয়ছেন স্ত্রী, আছে তিন সন্তান। 

 

Comments :0

Login to leave a comment