রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দাবি, এর নেপথ্যে রয়েছে খাদ্যপণ্যের লাগামছাড়া দাম নিয়ন্ত্রণে না আসা। সেই যুক্তিতেই বিনিয়োগের হার শ্লথ হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও সুদের হার কমালে না রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বৃহস্পতিবার সুদের হার ঘোষণা করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
এদিনই লোকসভায় তিনদিনের অনস্থা প্রস্তাবের ওপর জবারী ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এবং মন্ত্রীসভায় তাঁর সহযোগী অমিত শাহ এবং নির্মলা সীতারামনরা সরকারের সাফল্যের দাবিতে মুখর হয়েছেন। মোদীর দাবি, জনতার জন্য এত দরদি ভূমিকা অতীতে আর কোনও সরকার নেয়নি। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্যই স্পষ্ট করেছে মূল্যবৃদ্ধি, বিশেষ করে খাদ্যদ্রব্যের, তার চাপ কিভাবে সামলাতে হচ্ছে নিম্নবিত্ত, গরিব এমনকি মধ্যবিত্তকেও।
টানা তৃতীয় বারের জন্য সুদের হার অপরিবর্তিত রাখল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সুদের হার না বাড়ালেও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাশ ইঙ্গিত দিয়েছেন, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মানিটারি পলিসি কমিটির বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দাশ। তিনি জানান, রেপো রেট ৬.৫০ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দাশ জানান, সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার ৪ শতাংশের নীচে থাকা উচিত। কিন্তু সেটা নিয়ন্ত্রণে না এলে নতুন পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।
প্রসঙ্গত, ব্যাঙ্কগুলিকে আমানতের একটা অংশ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে নগদে জমা রাখতে হয়। এই অনুপাত সিআরআর। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে সেই হার নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় সময়ে সময়ে। এর এই হার বৃদ্ধি পাওয়া মানে, বাজার থেকে বাড়তি নগদ বা লিকুইডিটি শুষে নিতে চাইছে আরবিআই। সাধারণত মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে থাকে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, বাতিল ২ হাজার টাকার নোট ব্যাঙ্কগুলির কাছে জমা থাকার ফলে ব্যাঙ্কের আমানত এমনিতেই অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। কড়া হাতে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ না নিলে এই টাকা ঋণের মাধ্যমে বাজারে ছড়িয়ে পড়বে। এবং তখন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আনা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
যদিও একইসঙ্গে দেশের আর্থিক বিকাশের হার সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছে আরবিআই। সেই পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি আর্থিক বছরে জিডিপি বৃদ্ধির হার থাকবে ৬.৫ শতাংশে। আরবিআই জানিয়েছে, চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারফলেই এই হিসেব।
Comments :0