গরমে পুড়ছে দেশের একাধিক রাজ্য। আরও বেশ কয়েকদিন চলবে তীব্র তাপ প্রবাহ। আগামী পাঁচদিন পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় মৌসম ভবন। একইরকম আবহাওয়া শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয় থাকবে পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্যে। কেন্দ্রীয় মৌসম ভবন বেশ কিছু রাজ্যে তাপপ্রবাহের সতর্কতাও জারি করেছে। একদিকে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং অন্যদিকে এক গুমোট অস্বস্তিকর গরমে দগ্ধ শহর গ্রাম বাংলা। জ্বলছে কলকাতা সহ জেলাগুলি, তীব্র তাপদাহে পুড়ছে রাজ্যবাসী। আগামী ৫ দিন এভাবেই চলবে, তাপমাত্রা থাকবে ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির মধ্যে। অতএব এখনই মিলছে না রেহাই, আপাতত স্বস্তির কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। রোদের তাপে জ্বলছে মাঠের শাক সবজি। এই অতিরিক্ত গরমে কমে গেছে যান বাহনের সংখ্যা। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই। আগুনের হলকা যেন বয়ে যাচ্ছে শরীরের উপর দিয়ে। সবুজ গাছপালাও যেন সূর্যের প্রখর তাপে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। ত্রাহি ত্রাহি রব পশু পাখিদেরও। একটু বৃষ্টির অপেক্ষায়।
বিশেষত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম সহ বেশ কয়েকটি জেলায় দেখা দিচ্ছে তীব্র জল সঙ্কট। গরম প্রতি বছরেই পড়ে, কিন্তু এবছর এই সময়ের তাপমাত্রা গত কয়েকবছরের তুলনায় বেশ কিছুটা বেশি-বলছে আবহাওয়া দপ্তর।
কখনো ৪০ ডিগ্রি, কখনো বা ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রা ছুঁয়ে ফেলছে পারদ। কলকাতা সহ বাকি জেলাগুলির একইরকম অবস্থা। গত কয়েকদিন ধরেই কমবেশি এই তাপমাত্রা চলছে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্তও ঘাম সেভাবে অনুভূত হয়নি। লু বাতাস বইলেও তা ছিল শুষ্ক। শুক্রবার রাত থেকেই ঘর্মাক্ত হতে শুরু করেছেন মানুষ। শনিবার তা চরম আকার নিয়েছে। রবিবার সকাল পর্যন্তও প্যাঁচপ্যাঁচে ঘামে নাজেহাল হতে হয়েছে। রবিবার দুপুর থেকে আবার কিছুটা বদল এসেছে বাতাসে। রাস্তায় বেরিয়ে গরম বাতাসে শ্বাস নিতে বেশ কষ্ট হয়েছে। তবে রবিবার দুপুর থেকে ঘামের পরিমাণ সামান্য একটু কমেছে। কিন্তু স্বস্তি মিলছে না ফ্যানের হাওয়াতেও। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, তাপমাত্রা ৪০ হোক বা ৪২, লু বাতাসে কষ্ট হয় বটে, কিন্তু প্রচ্ন্ড ঘাম হতে থাকলে সেই কষ্টটাই প্রধান হয়ে দাঁড়ায়।
আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, অন্তত আগামী ৫ দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই গরম চলবে। মাঝে মাঝে তাপপ্রবাহ হবে বা লু বইবে। আবার বাতাসে জলীয় বাস্প ঢুকে আদ্রতা বাড়িয়েও দিতে পারে কখনো কখনো। সেক্ষেত্রে ঘামের অস্বস্তিতে ভুগতে হতে পারে রাজ্যবাসীকে। একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা ঝাড়খন্ড থেকে ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ হয়ে তামিলনাড়ু পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এর প্রভাবেই বাতাসে কিছু কিছু জলীয় বাস্পের প্রবেশ ঘটবে। তবে তা বৃষ্টির অনুকূল অবস্থা তৈরি করবে না, ফলে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে না। এই নিম্নচাপ অক্ষরেখার ফলেই শুক্রবার রাত থেকে আদ্রতা বেড়ে ঘর্মাক্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই নিম্নচাপ অক্ষরেখাটির গতিপ্রকৃতির ওপর নির্ভর করবে এরাজ্যে গরম শুসষ্ক লু বাতাস বইবে নাকি আদ্র পরিস্থিতির সম্ভাবনা বাড়বে। যদি আদ্রতা বাড়ে তবে প্যাঁচপ্যাঁচে ঘামে অস্বস্তি অনেকটা বেড়ে যায় মানুষের।
Comments :0