মীর আফরোজ জামান
পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়নোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিদেশ সচিবের ঢাকায় তা নিয়ে আলোচনাও করেছেন অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে। তবে, ১৯৭১’র গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার দাবিও উঠছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঘিরে মত বিনিময়ের মাঝেই।
গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিদেশ সচিব আমনা বালুচ বাংলাদেশের অন্তরব্তী সরকারে প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার আগে দুই দেশের বিদেশ সচিব স্তরের বৈঠকও হয়েছে। গত ১৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম পাকিস্তানের বিদেশ সচিব এলেন বাংলাদেশ সফরে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়েই বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। ১৯৭১’র সেই পর্বে পাকিস্তানের সেনা বাংলাদেশের মাটিতে গণহত্যা চালায়। দু’দেশের সম্পর্কে ঘটনাক্রমের গভীর প্রভাবও থেকেছে। গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আসীন হয়েছেন ইউনুস। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধিতে তাঁর আগ্রহ ঘিরে যদিও সন্দিহান দেশেরই বিভিন্ন অংশ।
আমনা বালুচ অতীতের ঘটনাক্রমকে স্বীকার করে বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে অবশ্যই দুই দেশের মধ্যে সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’’ তিনি বলেন,
‘‘দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে নিয়মিত পারস্পারিক যোগাযোগ এবং সব পর্যায়ে দু’দেশের মধ্যে সফর আয়োজনের প্রয়োজন।’’
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফপিসিসিআইয়ের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে এবং বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিদেশ সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশের বিদেশ সচিব মহম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, ‘‘১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পাকিস্তানের মধ্যে ক্ষমা চাওয়া, ক্ষতিপূরণ, সম্পদ ভাগাভাগি, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ফেরত পাঠানোসহ বেশ কিছু অমীমাংসিত বিষয় রয়েছে। বাংলাদেশ মনে করে, এসব অমীমাংসিত বিষয়গুলো মীমাংসা হওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়।’’
তিনি বলেন, ’পাকিস্তানি প্রতিনিধি দলকে বলেছি যে দু’দেশের সম্পর্ক শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে গেলে আমাদের অমীমাংসিত বিষয়গুলোর মীমাংসা আশু প্রয়োজন।’’
Comments :0