প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের অপরাধ চক্রের একাধিক খাস প্রমাণ জোগার করেছে সিবিআই। তাঁর যে সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের সঙ্গে মিলে ব্যক্তিগত আর্থিক লাভের বিষয়েও নিশ্চিত কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা।
সিবিআই’র সূত্রের উল্লেখ করে এমনই জানাচ্ছে সংবাদসংস্থা। তবে আর জি কর কাণ্ডে প্রতিবাদী আন্দোলন জানতে চাইছে কেবল সন্দীপ ঘোষেই সিবিআই থেমে যাবে কিনা। রাজ্যের প্রায় সব সরকারি হাসপাতালে এই দুর্নীতি চক্র এবং শাসানির সংস্কৃতি প্রতিবাদ জানাচ্ছেন চিকিৎসকরাই। ফলে প্রশ্ন রয়েছে দুর্নীতি চক্রের তদন্তে মাথাদের ভূমিকা আসবে কিনা তদন্তে আওতায়।
আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে এরমধ্যেই আর্থিক তছরুপের মামলায় গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে চিকিৎসক ছাত্রী ধর্ষণ ও খুন সংক্রান্ত মামলার শুনানির দিন নির্ধারিত রয়েছে। আগের শুনানিতে সিবিআই জানিয়েছিল যে খুনের অকুস্থল বদলানো হয়েছে। তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগও শোনা গিয়েছে সিবিআই’র পক্ষে আইনজীবীর বক্তব্যে। চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চ জানিয়েছে যে ৯ আগস্ট, দেহ পাওয়ার পর, ঘটনাস্থলে স্বাস্থ্য প্রশাসনের এমন অনেককে দেখা গিয়েছে যাঁদের উপস্থিতি সন্দেহজনক।
সিবিআই সূত্রের দাবি, সন্দীপ ঘোষ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুর্নীতির চক্র চালাতেন সহযোগীদের নিয়ে। সন্দীপ ঘোষ আরজি করের আগে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ২০১৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ছিলেন। তারপর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে যোগ দেন তিনি। ২০২১ সালের ফেব্রয়ারি মাস পর্যন্ত তিনি সেখানেই ছিলেন। যে দুই ভেন্ডারদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁদের সঙ্গে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজেই সন্দীপের যোগাযোগ। সন্দীপ আরজি কর হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ার পর তাদের মুর্শিদাবাদ থেকে এখানে নিয়ে আসেন। শুধুমাত্র তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই এই ব্যবসায়ীরা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার সরঞ্জাম দেওয়ার বরাত পায়।
সিবিআই সূত্রের দাবি, সন্দীপ ঘোষের নিরাপত্তারক্ষীর স্ত্রীর সংস্থাকে আরজি কর হাসপাতালের অভ্যন্তরে একটি ক্যাফে নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়। সেই নিরাপত্তা রক্ষীই হাসপাতালের জৈব বর্জ্য বিক্রি করার জন্য বিক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।
সুপ্রিম কোর্টে খুন-ধর্ষণের তথ্য লোপাট প্রসঙ্গে সিবিআই কী বলে তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে বিপুল অংশ। হাসপাতালের সেমিনার রুম, যেখানে চিকিৎসক-ছাত্রীর দেহ মিলেছিল, তার পাশের বাথরুম সংস্কারের নামে ভাঙার জন্য সন্দীপ ঘোষের চিঠি পেয়েছে সিবিআই। গত ১৩ আগস্ট কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। তারপরই বাথরুমে রক্ত ধুয়ে ফেলার মতো প্রমাণ লোপাটে খোদ স্বাস্থ্যভবনের এক শীর্ষ আধিকারিক সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে বৈঠক করে ছিলেন বলে অভিযোগ। চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চ জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরসের লিখিত বিবৃতিতেই তোলা হয় এমন অভিযোগ।
সিবিআই তদন্ত এ বিষয়ে কতদূর এগিয়েছে তার অপেক্ষায় রয়েছে সব অংশ।
SANDIP GHOSH CBI
সন্দীপের অপরাধ চক্রের প্রমাণ মিলেছে, দাবি সিবিআই’র
×
Comments :0