WIKIPEDIA ADANI CPI(M)

উইকিপিডিয়ার তথ্যেও কারচুপি আদানির,
ফের তদন্তের দাবি সিপিআই(এম)’র

জাতীয়

WIKIPEDIA ADANI CPIM বুধবার সিপিআই(এম)’র টুইট।

উইকিপিডিয়ার নিবন্ধেও কারচুপি করতে ছাড়েনি আদানি গোষ্ঠী। গোষ্ঠীর প্রধান গৌতম আদানির কর্মীরা তথ্যের বদল তো বটেই, ব্যবসার পক্ষে সমস্যার কারণ হতে পারে এমন তথ্য লোপাট করে দিয়েছে। 

আদানিকাণ্ডে নতুন এই অভিযোগ তুলেছে ইউকিপিডিয়া। এই মর্মে নিবন্ধও প্রকাশ করেছে। ব্যবসায়িক ইংরেজি দৈনিক ‘ইকনমিক টাইমস’-র প্রতিবেদন জানাচ্ছে, গোষ্ঠীর কর সংক্রান্ত সতর্কতা রয়েছে, এমন তথ্যও হাওয়া হয়ে গিয়েছে উইকিপিডিয়া থেকে। 

তথ্য কারচুপি, সতর্কতা উড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ফের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত করার দাবি তুলেছে সিপিআই(এম)। পার্টি বলেছে, ‘‘নতুন নতুন সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে সব রকমের কারচুপির অভিযোগ রয়েছে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। তবু দেশের সরকার তদন্ত করতে নারাজ কেন? প্রধানমন্ত্রীকে আড়াল করতেই কি?’’ 

সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে উচ্চপর্যায়ের দাবিতে সিপিআই(এম)’র সঙ্গে সহমত একাধিক বিরোধী দল। অন্ততত সংসদেরই তদন্ত কমিটি গড়ার দাবিও বাজেট অধিবেশনে তুলেছেন বিরোধীরা। বস্তুত আদানিকাণ্ড নিয়ে গোটা দেশ শঙ্কিত হলেও বিজেপি সরকার তদন্তের নির্দেশ দেয়নি। বরং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গৌতম আদানির সংযোগ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস পাঠানো হয়েছে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে। 

উইকিপিডিয়া বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের কাছে ইন্টারনেটে তথ্য বা নিবন্ধের ভরসা। স্বেচ্ছামূলক এই উদ্যোগে প্রকাশিত নিবন্ধ সম্পাদনা করার স্বাধীনতাও থাকে। উইকিপিডিয়ার অভিযোগ, ‘‘পরিচয় গোপন রেখে কিছু লোকজন, পরিভাষায় ‘সকপাপেট’, দিনের পর দিন নিবন্ধে তথ্যের বিকৃতি করে চলেছে। তাদের একজন আবার সংস্থার নামে নথিভুক্ত ইন্টারনেট প্রোটোকল ব্যবহারও করেছে।’’ 

উইকিপিডিয়ার অভিযোগ, ‘‘৯টি গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধে এই কারচুপি করা হয়েছে। কর সংক্রান্ত সতর্কতার অংশ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সব নিবন্ধ এখন আটকে দেওয়া হয়েছে। উইকিপিডিয়ার নিজস্ব গুনমান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে চলেছে কারচুপি।’’ সংস্থার বক্তব্য, পরিচয় গোপন রেখে অর্থের বিনিময়ে এই কাজ চলেছে। বেশ কয়েকজন একাধিকবার নিবন্ধ সম্পাদনায় জড়িত। 

২৪ জানুয়ারি ‘হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট’ প্রকাশের পর থেকে আদানির শেয়ারে ধস নেমেছে। আদানির বিভিন্ন সংস্থায় বিনিয়োগ করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা এলআইসি। স্টেট ব্যাঙ্কের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এই সংস্থায় ঋণ দিয়ে গিয়েছে। শেয়ারের দাম পড়ার সময়েও এই লেনদেন চালানোর ঘোষণা করেছে সরকার নিয়ন্ত্রিত একাধিক আর্থিক সংস্থার কর্তৃপক্ষ। 

সিপিআই(এম) এবং বিরোধীরা বলছেন, দেশের কোটি কোটি মানুষের কষ্টের অর্থ এই সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানে জড়িত। শেয়ার দাম পড়ে যাওয়ায় এই প্রতিষ্ঠানগুলি আর্থিক সংকটে পড়বে। সঙ্কটের দায় চাপিয়ে দেওয়া হবে আমানতকারী এবং সঞ্চয়কারী কোটি কোটি ভারতবাসীর ওপর।’’ 

বুধবার সিপিআই(এম) মনে করিয়েছে যে প্রতিদিন শুনানির ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের তদন্ত হওয়া জরুরি দেশ এবং দেশের মানুষের স্বার্থেই। 

হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে বলা হয় যে আদানির বেশিরভাগ শেয়ারের দাম ফাঁপানো হয়েছে কারচুপি করে। সংস্থার বিপুল ঋণের অঙ্ক চেপে যাওয়ার জন্য হিসেবের খাতায় কারচুপি করা হয়েছে। শেয়ার দাম ৮০ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে যেতে পারে। দেখা গিয়েছে রিপোর্ট প্রকাশের পর থেকে সমানে পড়ছে আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন শেয়ারের দাম। আদানির নিট সম্পদ ১২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে অর্ধেকের বেশি কমে ঠেকেছে ৪৯ বিলিয়ন ডলারে। শেয়ারদরে বাজারমূল্য ১২৫ বিলিয়ন ডলার কমেছে। ধনীর তালিকায় তিন থেকে ২৫ চলে গিয়েছেন গৌতম আদানিও। 

হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট অভিযোগ তুলেছে আদানির বিদেশি লেনদেনে টাকা তছরুপেরও। দেশের টাকা বিদেশের একাধিক সংস্থাকে পাঠানো হয়েছে। এই সংস্থাগুলি আবার ভারতের শেয়ার বাজারে কেবল আদানিরই শেয়ার কিনেছে। লেনদেনে শেয়ারের দাম বেড়েছে, প্রত্যাশিত দাম আরও বেড়েছে। 

বিরোধীরা বলেছেন, আদানি ঘিরে অভিযোগের তদন্তে ইডি বা সিবিআই’কে নামতে নির্দেশ দেওয়া হবে না কেন?  

Comments :0

Login to leave a comment