গল্প
নতুনপাতা
------------------------
এল এম টেন
------------------------
সৌরীশ মিশ্র
গভীর রাত। এতো রাতেও এয়ারপোর্টের এই গেটের সামনে থিকথিকে ভিড়। এরা সব্বাই ফুটবল ফ্যান। ভিড় করবে না ওরা! মেসির যে একটি বিশেষ বিমানে এই এয়ারপোর্টে পৌঁছে, এই গেট দিয়েই বেড়োনোর কথা আছে। পৃথিবীর এই সময়ের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবলারকে স্বচক্ষে দেখার এমন সুযোগ ছাড়তে চায় কোন্ ফুটবল ভক্ত! তাছাড়া, মেসি এই শহরে আসছেন এবার কতো বছর পর! আবার কবে আসবেন, কেউ কি তা বলতে পারে?
বাবাই-ও, ওর মামদিদির সাথে দাঁড়িয়ে আছে এই ভিড়ে। মামের তেমন ইন্টারেস্ট নেই ফুটবলে। ও ক্রিকেট ভালোবাসে। তবুও ও-ই নিয়ে এসছে বাবাইকে এখানে। ও যে ওর এই ছোট্ট ভাইটাকে ভালোবাসে খুব।
ক'দিন আগে মামাতোদিদি মামের কাছে কথায় কথায় বাবাই বলেছিল, ওর একটিবার মেসিকে দেখার ইচ্ছার কথা। বাবাই মেসির ভীষণ ফ্যান। এর আগেরবার যখন মেসি এ'শহরে এসেছিলেন তখন তো বাবাই-এর জন্মই হয়নি। তাই সেইদিন বাবাই-এর মুখে ওর, মেসিকে দেখার ইচ্ছার কথা শোনার পর থেকেই ছোট্ট ভাইটার ঐ উইশটা যাতে সে ফুলফিল করতে পারে তার জন্য চেষ্টা করে গেছে টানা, মাম। প্রথমে, স্টেডিয়ামে যে অনুষ্ঠানে মেসি থাকবেন, সেটার টিকিটের চেষ্টা করেছিল সে। কিন্তু, পায় নি। তাই অগত্যা আর কোনও উপায় না দেখে মেসিকে দেখাতে, বাবাই-কে নিয়ে সোজা সে হাজির হয়ে গেছে এতো রাতে এই এয়ারপোর্টের সামনে আজ।
ঘন্টা দুয়েক হয়ে গেছে ওরা দাঁড়িয়ে আছে ঠায়। মামের এইবার যেন ধৈর্য্যচ্যুতি হয় একটু। বাবাই-কে সে বলল, "কি রে, তোর মেসি আসবে কখন?"
বাবাই একদৃষ্টিতে তাকিয়েছিল গেটের দিকে। ঐদিক থেকে চোখ না সড়িয়েই মামকে কি যেন একটা বলতে যাচ্ছিল সে, তখুনি শোরগোল উঠল জোড়। আর দেখা গেল, ঠিক তার পর মুহূর্তেই, "এল এম টেন" বেড়িয়ে আসছেন এয়ারপোর্টের ঐ গেট দিয়ে। উপস্থিত সবাই চেঁচিয়ে উঠল সাথে সাথে প্রায় সমস্বরে, "মেসি... মেসি..."
বাবাই-ও গলা মেলায় ওদের সাথে।
মাম ভাই-এর দিকে তাকায়। দেখে, বাবাই-এর চোখ-মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে পুরো, খুশিতে। সে দু'হাত উঁচু করে হাত নাড়াচ্ছে জোড়ে জোড়ে মেসির দিকে। ছোট্ট ভাইটার এতো উৎসাহ দেখে মজা লাগে মামের। সাথে ভালোও লাগে তার কম না। এটাই তো ও-ও চেয়েছিল। ভাইটাকে এই আনন্দটা দিতে। সে স্বগতোক্তি করে, "'মিশন মেসি-দর্শন' একমপ্লিশ্ড্।"
----------------------------
Comments :0