MODI

এসআইআর-এ বাদ, সেই আসামেই অনুপ্রবেশের গল্প মোদীর

জাতীয়

আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচন আসামে। তার আগে শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসামে পৌঁছে সমাবেশ,  জনসভা দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে নির্বাচনী বৈঠক করেছেন। 
কেরালা, বাংলা, তামিলনাডুর মতো রাজ্যগুলির পাশাপাশি ২০২৬-এ বিধানসভা ভোট আসামেও। বাকি রাজ্যগুলিতে এসআইআর হলেও আসামে করেনি নির্বাচন কমিশন। অথচ শনিবার মোদী ভাষণে এসআইআর করে ‘অনুপ্রবেশকারী’ ধরার জন্য কমিশনের প্রশংসায় মুখর থেকেছেন। উল্লেখ্য, আসামে এর আগে এনআরসি-কে কেন্দ্র করে মেরুকরণ করেছিল বিজেপি। নাগরিকত্ব নিয়ে সমস্যায় বেশি পড়েছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী গরিব মানুষ।  
সরুসাজাই থেকে ৩.৮ কিলোমিটার রোড শো শেষে সন্ধ্যায় বাজপেয়ী ভবনে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী মোদী। বাজপেয়ী ভবনে প্রায় ঘন্টাব্যাপী বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সরকারের জনসাধারণের ভাবমূর্তি,  সংগঠনের অবস্থা এবং নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। বৈঠকে প্রাক্তন ও বর্তমান সাংসদ, মন্ত্রী, বিধায়ক এবং প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সহ প্রায় ২৮০ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী দুই দিনের সফরে আসামে গিয়ে প্রথম প্রথম মুখ্যমন্ত্রী গোপীনাথ বোরদোলইয়ের একটি মূর্তি উন্মোচন করেন। তারপর বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল উদ্বোধন করে জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। গুয়াহাটির জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আসামের উন্নয়নে একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, যেমন আসামে শক্তিশালী ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহ কখনও থামে না, তেমনি বিজেপির ডাবল-ইঞ্জিন সরকারের অধীনেও উন্নয়নের ধারা অবিরাম প্রবাহিত হচ্ছে। আজ এখানে জনপ্রিয় গোপীনাথ বোরদোলোই বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনালের উদ্বোধন এই সংকল্পেরই সাক্ষী।’’
আসামে এসআইআর নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোদী বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন এসআইআর চালু করেছে যাতে অনুপ্রবেশকারীদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা যায়। কিন্তু ‘বিশ্বাসঘাতকরা‘ তাদের রক্ষা করার চেষ্টা করছে।’’ 
উল্লেখ্য, বিহারে এসআইআর’র পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নাম বাদও দেওয়া হয়েছে ভোটার তালিকা থেকে। কিন্তু তার মধ্যে অনুপ্রবেশকারী কারা প্রক্রিয়া মিটে ভোট হয়ে যাওয়ার পরও স্পষ্ট করে জানাতে পারছে না নির্বাচন কমিশন।  
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, যা একসময় হিংসার রাজ্য ছিল এখন ফোর-জি এবং ফাইভ-জি  প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল সংযোগ উপভোগ করছে। একসময় হিংসা প্রবণ বলে বিবেচিত জেলাগুলি এখন ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষী জেলা‘ হিসাবে বিকশিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে, এই অঞ্চলগুলিও শিল্প করিডোরে পরিণত হবে। 
ঘটনা হলো সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর -পূর্বাঞ্চলের মণিপুরেই ভয়ঙ্কর হিংসা হয়েছে সে রাজ্যে বিজেপি সরকারের শাসনে। ‘ডবল ইঞ্জিনের’ মহিমা দেখেছে গোটা উত্তর-পূর্ব। 
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেস সরকারের কাছে আসাম এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন তাদের এজেন্ডায় ছিল না। এই মানসিকতার কারণেই কংগ্রেস কয়েক দশক ধরে এই সমগ্র অঞ্চলকে অবহেলা করেছে।’’
আসামে যদিও আন্দোলন হয়েছে গরিব মানুষকে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে। সে রাজ্যের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা লাগাতার বিভাজনে উসকানি দিয়েছেন। এমনকি রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা’ গাওয়ায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা এনে গ্রেপ্তার করিয়েছেন। মোদী তাকেই বলছেন সুশাসন। এরাজ্যেই গরিব মানুষকে উচ্ছেদ করে আদানি গোষ্ঠীকে নামমাত্র দামে বিপুল জমি দেওয়ার অভিযোগে সরব সারা দেশ।

Comments :0

Login to leave a comment