‘শিলিগুড়ি শহরের উন্নয়নমূলক কাজ ও পৌর পরিষেবা স্তব্ধতার বিরুদ্ধে গণতন্ত্র, বিকেন্দ্রীকরন, স্বচ্ছতা, আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সমগ্র শিলিগুড়িবাসী এক হও’ আহ্বান জানানো হলো জেলা বামফ্রন্টের স্বাক্ষর অভিযান কর্মসূচী থেকে। শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের তৃণমূল কংগ্রেস বোর্ডের মেয়াদ এই সময়ে এক বছর পূর্ণ হলেও শহর জুড়ে পৌর পরিষেবা একেবারেই তলানিতে এসে ঠেকেছে। এই এক বছরে সরকারী পয়সার অপচয় করে কর্পোরেশনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশাধনী উন্নয়নের কাজ হয়েছে। নাগরিক জীবনের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে নাগরিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিলিগুড়ি শহরের ৪৭টি ওয়ার্ডে এদিন দার্জিলিঙ জেলা বামফ্রন্টের উদ্যোগে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে সাধারন মানুষের ঢল নেমেছিলো। পৌর পরিষেবার বাস্তব উপলব্ধিতার মধ্য দিয়েই শনিবার সকাল সকাল মহিলা, পুরুষ সহ সব বয়সীরাই বাড়ি ঘর থেকে বাইরে বেরিয়েছিলেন।
শিলিগুড়ির পৌর কর্পোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাতৃসদনের সামনে থেকে এদিন স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে অংশ নেন সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকার। এলাকার বিভিন্ন বাড়ি ও ছোট বড় ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ঘুরে তৃণমূলী পৌর বোর্ডের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে সাধারন মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন। মতামত বিনিময় করেছেন। ২০নং ওয়ার্ডে সুভাষপল্লী এলাকায় রাজ্য নেতা অশোক ভট্টাচার্য এই কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকেছেন। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডগুলিতে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন নুরুল ইসলাম, জয় চক্রবর্তী, দিলীপ সিং, সৌরভ সরকার প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
শহরের দুর্বিষহ যানজট কাটাতে পরিকল্পিত উদ্যোগ, পুনর্বাসন ও বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া হকার উচ্ছেদ না করা, উৎপাদন ভিত্তিক শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক কার্যাবলী বৃদ্ধি, সরকারি জমিতে বসবাসকারী গরীব মানুষের পাট্টা, গৃহ সমীক্ষার নামে বস্তির গরীব মানুষের ওপর জুলুম বন্ধ, অবিলম্বে প্রস্তাবিত চার লেন রাস্তার কাজ শুরু করা, এই প্রকল্পে জমি, বাস্তী, জীবিকাচ্যুত মানুষদের পুর্নবাসন ও এশিয়ান হাইওয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া, বন্ধ সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলি চালু করা, পানীয় জল প্রকল্পের সম্প্রসারনের কাজ দ্রুত কার্যকরী করা, এসজেডিএ’তে ২০০কোটি টাকার দুর্নীতিগ্রস্তদের উপযুক্ত শাস্তি ইত্যাদি দাবিতে তৃণমূলীদের মিথ্যে প্রতিশ্রুতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ওয়ার্ডগুলিতে বাসিন্দারা ঐক্যবদ্ধভাবে নাগরিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে এদিন প্রাথমিকভাবে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে সামিল হয়েছিলেন।
এছাড়াও কাঞ্চনজঙ্ঘা ও ইন্ডোর স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা, বেআইনী নির্মান ও জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বন্ধ, মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা, জলবায়ু অ্যাকশন প্ল্যান কার্যকরী করা, মহানন্দা, ফুলেশ্বরী ও জোরাপানি নদীর সংষ্কার ও সংরক্ষনের পরিকল্পনা, পৌরসভার শূন্যপদ পূরন অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করে তাদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধি, সর্বোপরি শহরের সম্প্রীতি ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখার বিষয়গুলিও এদিনের অভিযান কর্মসুচী চলাকালীন উঠে এসেছে।
Comments :0