Cooch Behar to kolkata Flight

অবশেষে চালু হলো কোচবিহার কলকাতা বিমান চলাচল

রাজ্য

Cooch Behar to kolkata Flight

অমিত কুমার দেব- কোচবিহার


 

অবশেষে চালু হলো কোচবিহার-কলকাতা বিমান চলাচল। কলকাতা দমদম এয়ারপোর্ট থেকে ইন্ডিয়া ওয়ান সংস্থার ৯আসন বিশিষ্ট এই বিমানে চেপে এদিন কোচবিহার এলেন কোচবিহার জেলার বিজেপির পাঁচ বিধায়ক। মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুটো নাগাদ কোচবিহার বিমানবন্দরে অবতরণ করে এই বিমানটি। বেলা ৩ টে নাগাদ কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে দমদম বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য এই বিমানে রওনা হন ৫ জন কোচবিহারবাসী।
কেন্দ্রীয় সরকারের উড়ান স্কিমের আওতায় চালু হলো এই বিমান পরিষেবা। আমেদাবাদের একটি বিমান সংস্থা ইন্ডিয়া ওয়ান এয়ার এর দায়িত্ব পেয়েছে। প্রতিদিন কোচবিহার থেকে কলকাতা, কলকাতা থেকে জামশেদপুর এবং জামশেদপুর থেকে ভুবনেশ্বর পর্যন্ত চলাচল করবে এই বিমান বলে সূত্রে খবর। 


বহু পুরোনো এই কোচবিহার বিমানবন্দর। ১৯৩৪ সালে প্রথম বিমান নামে কোচবিহারে। ১৯৩৮ সাল নাগাদ তৈরী হয় এই বিমান বন্দর। কোচবিহারের রাজাদের উদ্যোগেই নির্মিত হয় এই বিমানবন্দর। উত্তর পূর্ব ভারতের অন্যান্য এয়ারপোর্টগুলি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রয়োজনের তাগিদে তৈরী হয়েছিল। ব্যতিক্রম কোচবিহার। এই রাজনগরে একসময় দিনে ২৪ আসনের ৩টি করে বিমান ওঠা নামা করতো নিয়মিত। এছাড়া মহারাজাদের নিজস্ব বোনাঞ্জো বিচ ক্রাফ্‌ট প্লেন তো ছিলই। ১৯৪৮ সালে বিমানবন্দরটি বাণিজ্যিক বাহকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ১৯৬২ সাল পর্যন্ত হিমালয়ান এভিয়েশন, দ্বারভাঙ্গা এয়ারওয়েজ, কলিঙ্গা এয়ারওয়েজ, এয়ারওয়েজ ইন্ডিয়া, ভারত এয়ারওয়েজ এবং জামির এয়ারওয়েজের মতো বেশ কয়েকটি ছোট বেসরকারি বাহক বিমানবন্দর থেকে চলাচল করত। ১৯৭২ সাল থেকে পূর্ববর্তী ভারতীয় এয়ারলাইন্স তিন বছর ধরে এখান থেকে উড়ান পরিচালনা করেছিল। এরপর বায়ুদূত বিমান চালায়। ১৯৯৫ সালে পাকাপাকিভাবে বিমান চলাচল বন্ধ হয়। এরপর বাম আমলে একাধিকবার চালু করার প্রয়াস নেওয়া হলেও, উড়ান চালু করা যায়নি। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর বেশ কয়েকবার বিমান চলাচল করলেও কয়েকদিন পরেই তা বন্ধ হয়ে যায়। শেষবার ২০১৬ সালে এই বিমানবন্দর থেকে বিমান ওঠানামা করে। তবে শেষ ২০১৯সালের জুলাই মাসে বিমান চলাচলের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল কোচবিহারের সাংসদের পক্ষ থেকে। কিন্তু এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া এবং কোচবিহার জেলা প্রশাসনের মধ্যে কিছু ত্রুটির কারণে তার বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।


 এই বিমানবন্দর থেকে বিমান চলাচল নিয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের ক্ষমতাসীনদের কৃতিত্বের দড়ি টানাটানি এই মুহূর্তে সংবাদ শিরোনামে এলেও, ভুলে গেলে চলবে না এই বিমান বন্দরটি পুনরুজ্জীবনের জন্য চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকার। ২০০৭ সালে কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় এবং এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার সাথে একাধিকবার দরবার করেন রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তার আবেদনে সাড়া দিয়েই এই কোচবিহার বিমানবন্দর সংস্কারের জন্য ২০কোটি টাকা বরাদ্দ করে এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া। এরপর শুরু হয় এই বিমানবন্দর সংস্কারের কাজ। কলকাতা-কোচবিহার রুটে বিমান পরিষেবা চালু হওয়ায় খুশি যাত্রীরা।
 

Comments :0

Login to leave a comment