দেশ জুড়ে আক্রান্ত মহিলারা। কর্মক্ষেত্রেও নিরাপত্তাহীন মহিলারা যার ফলশ্রুতি হিসেবে এরাজ্যে কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজে কর্মরত চিকিৎসককে খুন হতে হয়েছে। চা শ্রমিক থেকে কৃষি শ্রমিক শ্রম নীবিড় বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত মহিলারা তাদের পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে উৎপাদনকে এগিয়ে নিয়ে গেলেও মিলছে না সম্মানজনক মজুরি। রাজ্যের সরকার ১০ বছর আগের চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করলেও আজ পর্যন্ত তা কার্যকরী হয়নি। দেশ জুড়ে মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি, বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে সমস্ত শ্রমজীবী মহিলাদের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়ে, বিজেপি ও আরএসএস এর শক্তিকে বিচ্ছিন্ন করতে কর্পোরেট স্বার্থবাহী নয়া উদারনীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামকে আরও তীব্র করার লক্ষ্যে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির বিশেষ অধিবেশন আগামী ৩০, ৩১ মে ও ১লা জুন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জলপাইগুড়িতে।
অধিবেশনের প্রথম দিন ৩০ মে শহরের কদমতলা সংলগ্ন মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে হতে চলা প্রকাশ্য সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন মহ: সেলিম , দেবলীনা হেমব্রম, মরিয়ম ধাওয়ালে কনীনিকা ঘোষ বোস, সুভাষিনী আলি, জিয়াউল আলম সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। প্রচারের শেষ রবিবার জলপাইগুড়ি শহরের বিভিন্ন বাজার ও জেলাজুড়ে বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় প্রচার ও অর্থ সংগ্রহ করলেন মহিলা নেতৃবৃন্দ সঙ্গে ছিলেন অভ্যর্থনা কমিটির সাথে যুক্ত বিভিন্ন গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেতৃত্ব পিয়ালী গুহরায় জানান, ‘গোটা বিশ্বে যখন নারীরা পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে। তখন এদেশের বুকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার মনুবাদের ভাবনাকে সামনে এনে মহিলাদের তার প্রাপ্য যোগ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত করছে, দেশ জুড়ে বিঘ্নিত নারী নিরাপত্তা এ রাখছে কর্মক্ষেত্রেও আক্রান্ত মহিলারা, কাজের অভাবে গ্রাম শহরের পুরুষরা রাজ্য ছাড়া পাথর ভাঙার কাজ থেকে, খেতের কাজ, চা শ্রমিকের কাজে যুক্ত রাজ্যের উত্তরের অংশের অধিকাংশ শ্রমজীবী মহিলা। চা বাগানে রাজ্য সরকার ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করলেও এখনো তা কার্যকরী হয়নি ছোট বড় বিভিন্ন বাগান তাদের মর্জি মাফিক মজুরি দিয়ে চলেছে চা শ্রমিকদের, চা বাগানের লিস হোল্ড জমিকে ফ্রি হোল্ড করে চা সুন্দরী প্রকল্পের নামে কর্পোরেটের হাতে তুলে দিতে চাইছে রাজ্য সরকার, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা হলেও এ রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত মহিলারা। আজকের দিনে মহিলাদের অভাব অভিযোগ দাবিকে সামনে রেখে কোন পরিস্থিতিতে জলপাইগুড়ি জেলার বুকে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির বিশেষ অধিবেশন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সে কথা তুলে ধরেই প্রচার চলছে জেলা জুড়ে।’’
নেতৃত্ব আরও জানান প্রসাশনিক ব্যার্থতা এবং বিভাজনের ঘৃন্য রাজনীতির কারনে কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে ভারতীয় নাগরিকদের প্রাণ গিয়েছে। এর দায় কেন্দ্র সরকার না নিয়ে দেশে যুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টির মধ্য দিয়ে মানুষের দৈনন্দিন সমস্যাকে ভুলিয়ে দিতে চাইছে। এর বিরুদ্ধে ধিক্কার ও প্রতিবাদ মিছিল সভা চলছে রাজ্য জুড়ে। অসাংবিধানিক বিভাজনের ওয়াকফ আইন বাতিল, শিক্ষা, কাজ, মজুরি সহ আইনি অধিকার থেকে প্রান্তিক মানুষ ক্রমশ বঞ্চিত হচ্ছেন প্রচারে উঠে আসছে এ সমস্ত বিষয়ও। শহর সংলগ্ন অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গোমস্তাপারা এলাকায় প্রচারে বের হওয়া অভ্যর্থনা কমিটির সাথে যুক্ত শ্রমিক নেতৃত্ব শুভাশিস সরকার বলেন চা বাগান, পাহাড়, পাহাড়ি নদী, বনাঞ্চল, বনবস্তি, বিস্তীর্ণ নক সীমান্ত এলাকা সম্মিলিত জলপাইগুড়ি জেলা যে জেলাকে ভারতবর্ষের ক্ষুদ্র সংস্করণ বলা যেতে পারে। আদিবাসী নেপালি রাজবংশী বাঙালি সহ বিভিন্ন জনজাতির মানুষের বাস যে জেলায় সেই জলপাইগুড়ি জেলার বুকে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির বিশেষ অধিবেশনকে সামনে রেখে সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য উত্তরের জেলাগুলিতে নিবিড় প্রচারের মধ্য দিয়ে শুধু মহিলাদের নয় সমস্ত অংশের মানুষকে সংগঠিত করতে পারলে আজকের পরিস্থিতি মোকাবিলা করা কিছুটা হলেও সম্ভব সেই লক্ষ্যেই চলছে প্রচার। গোটা দেশ জুড়ে যেভাবে বিভাজনের রাজনীতি চলছে পাশাপাশি এ রাজ্যে যেভাবে তৃণমূলের সরকার চাকরি চুরি থেকে সমস্ত রকম চুরির দুর্নীতির সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছে তার বিরুদ্ধে সমস্ত আন্দোলনে মহিলাদের অংশগ্রহণ রয়েছে মহিলাদের এই লড়াইকে আরও তীব্রতর করার লক্ষ্যে জলপাইগুড়ি জেলার বুকে কেন্দ্রীয় কমিটির এই বিশেষ অধিবেশন কে সামনে রেখে জলপাইগুড়ি সহ রাজ্যের উত্তরের বিভিন্ন জেলা জুড়ে মহিলা সহ সমস্ত অংশের মানুষের মধ্যে নিবিড় প্রচারকে নিয়ে যাওয়াই হবে এই অধিবেশনের অন্যতম অভিমুখ সেই লক্ষ্যেই চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচার।
Comments :0