নিহত ইরানের নতুন সেনা প্রধান আলি শাদমানি। মঙ্গলবার ইজরায়েলের পক্ষ থেকে এমনই দাবি করা হয়েছে। ইজরায়েলের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, গতকাল সারা রাত তাদের সেনা হামলা চালিয়েছে ইরানের ওপর। সেই হামলায় নিহত হয়েছেন সেনা প্রধান। ইজরায়েল সেনার দাবি খামেনির ঘনিষ্ট ছিলেন আলি শাদমানি। এই পরিস্থিতিতে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দাবি করেছেন যে তার সেনা মধ্য প্রাচ্যের মানচিত্র বদলে দেবে। জানা যাচ্ছে ইরানের শীর্ষ নেতা খামেনি বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন।
সামরিক সংঘাতের প্রথম থেকেই ইরানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মদতেই তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েল। সোমবার সামাজিকমাধ্যমে মার্কিন রাষ্ট্রপতি তেহরান ছাড়ার হুঙ্কার দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি যে ‘চুক্তি’তে ইরানকে সই করতে বলেছিলাম, তা ইরানের করে নেওয়া উচিত ছিল। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, ইরানের পরমাণু অস্ত্র রাখার অধিকার নেই। আমি বার বার বলেছি।’ এখানেই প্রশন তাহলে কি একমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই অধিকার আছে পরামনু অস্ত্র রাখার? আর যদি হয়েও থাকে তাহলে তাদের সেই অধিকার দিল কে?
আমেরিকার দাবি আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ ভেঙে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালাচ্ছে ইরান। ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাক চায় না ট্রাম্প প্রশাসন। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরান ইতিমধ্যেই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৬০ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে। পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে এই বিশুদ্ধতার পরিমাণ আরও কয়েক শতাংশ বৃদ্ধি করতে হবে ইরানকে। এই নিয়ে আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে বৈঠকের কথা হলেও তা বার বার ভেস্তে গিয়েছে। ৬০ দিনের সময় সীমা বেধে দিয়েছিল মার্কি যুক্তরাষ্ট্র সেই সময়ও পার করে গিয়েছে।
ইতিমধ্যে ইরানের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রসঙ্ঘে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রপতি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, ‘‘মার্কিন অস্ত্র, গোয়েন্দা তথ্য এবং রাজনৈতিক মদত ছাড়া এই আক্রমণ ঘটতে পারত না। এই বেআইনি কাজের জন্য আমেরিকাও দায়ী থাকবে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, ইরান ইজ়রায়েলে আক্রমণ করেনি। ইরান কোনও যুদ্ধ শুরু করেনি। অস্তিত্বসঙ্কটের যে গল্প ওরা শোনাচ্ছে, তা মিথ্যা।’’ ইরানের কথায় তারা ইজরায়েলের ওপর হামলা চালিয়েছে আত্মরক্ষার জন্য।
চলতি পর্বে ইজরায়েলের হামলায় তিনটি উদ্দেশ্য সামনে এসেছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
এই অংশের মত অনুযায়ী একটি উদ্দেশ্য হলো, পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করিয়ে আমেরিকার সঙ্গে চুক্তি সই করতে ইরানকে বাধ্য করা। দুই, পশ্চিম এশিয়ায় মুলুক দখলে বাধা দেওয়ার মতো কেউ আর না থাকে নিশ্চিত করা। ২০২৩’র অক্টোবরের পর হামাস এবং হিজবোল্লার একাধিক শীর্ষ নেতাকে হত্যা করেছে ইজরায়েল। তিন, ইরানে জমানা বদল বা আমেরিকার ‘রেজিম চেঞ্জ’ নীতি কায়েম করা।
Iran Israel
নিহত ইরানের সেনা প্রধান, দাবি ইজরায়েলের

×
Comments :0