ঘাস ফুলকে পদ্ম ফুল জব্দ করবে না। রাজ্যে তৃণমূল এসেছে, সঙ্গে বিজেপি’ও এসেছে। তৃণমূল না থাকলে বিজেপি’ও থাকবে না। দুই ফুল মিলে রাজ্যের মানুষকে বোকা বানাচ্ছে। মানুষ বুঝে গিয়েছেন দুই ফুলকে এক সঙ্গে বিদায় করতে হবে। দিল্লিতে মোদীর লুট, রাজ্যে দিদির লুট চলবে না। রবিবার সাগরদিঘির শেখদিঘিতে বামফ্রন্ট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের প্রচারে সমাবেশে বললেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
সেলিম বলেন, বিজেপিকে তৃণমূল দূর করতে পারে না। বিজেপিকে দূর করতে পারে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের জোট। মহম্মদ সেলিম সাগরদিঘির মানুষকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, সাগরদিঘির মানুষের ভোটে একটা ঢিলে দুটো পাখি মারবে। একটা ভোটে তৃণমূল, বিজেপিকে পরাস্ত করবে। বাংলার মানুষকে বোঝাবে বিজেপি’কে হারাতে পারে মানুষের জোট।
তিনি বলেন, রাজ্যে ১২ বছর ধরে তৃণমূলের সরকার মানুষের অধিকার কেড়েছে। রাজ্যের সম্পদ লুট করছে। সব দুর্নীতিবাজ আর দুষ্কৃতির জোট হয়েছে। তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রীদের ঘরে ঘরে লুটের টাকা জমা পড়েছে। নকল টোল প্লাজা বসিয়ে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা তৃণমূলের ঘরে তোলা হচ্ছে। এই জন্যই এককাট্টা হতে হবে লুটেরাদের বিরুদ্ধে। নিজেদের মধ্যে সব বিবাদ, বিভাজন ভুলে লুটেরাদের রুখতে হবে।
দেশজুড়ে বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ছবি সমাবেশে মানুষের সামনে তুলে ধরে মহম্মদ সেলিম বলেন, মানুষের ঐক্য না থাকলে গণতন্ত্র, অধিকার বাঁচবে না। মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে হারবে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি। একদিকে বিভাজনের রাজনীতি চলছে, অন্যদিকে কোথাও ডিটেশনক্যাম্পের নাম করে মানুষকে দেশছাড়া করা হচ্ছে। কোথাও পিটিয়ে মারা হচ্ছে মানুষকে। বিজেপি কাশ্মীর থেকে আসাম বুলডোজারের রাজনীতি করছে। বামপন্থীরা বুলডোজারের সামনে দাঁড়িয়েছে।
সেলিম বলেন, যারা গরিব মানুষের বিরুদ্ধে তারা চান না মানুষ ঐক্যবদ্ধ হোক। তাই কখনো হিন্দু, মুসলাম, আদিবাসি, তফশিলি, রাজবংশী কথা বলে মানুষকে ভাগ করা হচ্ছে। আরএসএস বুঝেছিল বাংলার মাটিতে বিভাজন কঠিন তাই তৃণমূলকে দায়িত্ব দিয়েছিল।
মহম্মদ সেলিম ছাড়াও এদিন শেখদিঘির সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্টির জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা, পার্টি নেতা সোমনাথ সিংহ রায়, জ্যোতিরুপ ব্যানার্জি, কংগ্রেস নেতা মাফজুল আলম ডালিম, শিল্পপতি বাবর আলি বিশ্বাস।
সমাবেশে মহম্মদ সেলিম বলেন, বিড়ি শ্রমিক থেকে খেতমজুরদের মজুরি বৃদ্ধির লড়াই ঘাস ফুল, কমল ফুল নিয়ে লড়াই হয় না। কাস্তে হাতুড়ি নিয়েই মজুরি বৃদ্ধির লড়াই হয়। এদিন সকালে বাইরন বিশ্বাসের সমর্থনে সন্তোষপুর থেকে শুরু হয়ে সাগরদিঘি স্টেশন, বাজার পরিক্রম করে শেষ হয় বাসস্ট্যান্ডে।
রবিবার সাগরদিঘিতে সভা করে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি। কংগ্রেস প্রার্থীকে বামফ্রন্ট সমর্থন করায়, বাইরন বিশ্বাসের প্রচারে মানুষের ভিড় বাড়ায় তৃণমূলের হতাশার কথাই উঠে এসেছে অভিষেক ব্যানার্জির ভাষণে। অভিষেক বলেন, যদি কোনও বুথে, তৃণমূল হারে। সেই বুথকে মিরজাফরের বুথ হিসেবে দেখবেন জেলার মানুষ। যদিও হেলিকাপ্টারে উড়ে আসা অভিষেকের কথায় গুরুত্ব দিতে নারাজ সাগরদিঘির মানুষ।
Comments :0