ব্রিটেনের সঙ্গে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি (FTA) সম্পন্ন করার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০৩০’র মধ্যে ভারত-ব্রিটেন বাণিজ্য ১২০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য জানানো হয়েছে চুক্তিতে।
ভারত-ব্রিটেন বাণিজ্য ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ২০.৩৬ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ২১.৩৪ বিলিয়ন ডলার। ভারতের পণ্যে ব্রিটেনে গড় আমদানি শুল্ক ৪.২ শতাংশ।
অবাধ বাণিজ্য চুক্তির সঙ্গেই দ্বৈত অনুদান রোধ সমঝোতা (Double Contribution Convention) সই করেছে দুই দেশ। ভারতের পক্ষে বলা হয়েছে যে এই সমঝোতায় ব্রিটেনে কর্মরত ভারতীয় শ্রমজীবী অংশ সুবিধা পাবে।
বলা হয়েছে যে কোনও কর্মীকে দু’দেশে সামাজিক সুরক্ষার জন্য অর্থ দেওয়ার দায় থেকে মুক্ত করবে এই সমঝোতা। ভারতীয় সংস্থার ব্রিটেনে কর্মরত কর্মীদের তিন বছরের জন্য ব্রিটেনে সামাজিক সুরক্ষা বাবদ অর্থ দিতে হবে না। ব্রিটেনের বাজারে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে তাদের সুবিধা হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থার।
ভারতের সঙ্গে সামাজিক সুরক্ষা চুক্তি রয়েছে বেলজিয়াম, জার্মানি, সুৎজারল্যান্ড, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশের। ভারতীয় সংস্থার কর্মীরা এই দেশগুলিতে কাজ করলে সেদেশের সামাজিক সুরক্ষা তহবিলে অর্থ দিতে হয় না। তাঁরা ভারতের এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড আর্গানাইজেশন বা ইপিএফও-তে সামাজিক সুরক্ষা বাবদ অর্থ দিতে পারে। কর্মীদের কথা বলা হলেও এই অর্থ বেতনের থেকে নেওয়ার পাশাপাশি মালিকদেরও দিতে হয়। মালিকরা সেই দায় থেকে অব্যাহতি পায়। ব্রিটেনের সঙ্গে দ্বৈত অনুদান রোধ সমঝোতাতে সেই সুবিধা মালিকপক্ষের হাতেই যাবে।
এখন ব্রিটেনে জাতীয় বিমা বাবদ কর্মী পিছু ৫০০ পাউন্ড দিতে হয় সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে। জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্যও অর্থ দিতে হয়। ব্রিটেন বা ভারত, কোনও দেশেই সামাজিক সুরক্ষা বাবদ কোনও কর্মীর নামে অর্থ জমা না পড়লে কী হবে স্পষ্ট করে বলেননি মোদী।
মঙ্গলবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কের স্টারমারের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর মোদী অবাধ বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে বলে ঘোষণা করেন। ২০২১’র মে-তে ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রাথমিক বোঝাপড়া হয়েছিল।
মোদী বলেছেন, ‘‘এই চুক্তি ঐতিহাসিক। দু’দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধিতে উপকার হবে দুই অর্থনীতিরই। বাড়বে বিনিয়োগ, বৃদ্ধি, কাজের সুযোগও।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘যৌথ উদ্যোগে পণ্য ও পরিষেবা উৎপাদনের সম্ভাবনাও বাড়াবে এই চুক্তি।’’
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘ব্রিটেনের অর্থনীতির পক্ষে এই চুক্তি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।’’ স্টারমার বলেছেন, ‘‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচছিন্ন হওয়ার পর ব্রিটেনের ক্ষেত্রে এই চুক্তি সবচেয়ে বড়।’’
অবাধ বাণিজ্য চুক্তিতে দেশের কৃষকদের সঙ্কট নিয়ে বারবারই মুখর হয়েছে বিভিন্ন কৃষক সংগঠন। কৃষিপণ্যের আমদানি অবাধ হওয়ায় দেশের কৃষকদের ফসলের দাম বাবদ প্রাপ্য আরও কমেছে। অথচ দেশের বাজারে ক্রেতা সাধারণ সুবিধা পাননি। লাভ ঘরে তুলেছে কৃষিপণ্যের বড় ব্যবসায়ীরা।
FTA INDIA BRITAIN
ব্রিটেনের সঙ্গে অবাধ বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা মোদীর

×
Comments :0