Sagardighi bypolls

সাগরদিঘি উপনির্বাচন, হুমকি উপেক্ষা করে ভোট জনতার

রাজ্য

Sagardighi bypolls

 

ছাপ্পার চেষ্টা  রুখে ভোট দিলেন সাগরদিঘির মানুষ। দিনভর গ্রামে ঘুরলেন তৃণমূলের বহিরাগত নেতারা। তবে ভোট লুটের ঘটনা ঘটে নি। এদিন সকালে ৭১ নম্বর বুথে বামফ্রন্ট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বুথে গেলে অশান্তির চেষ্টা করে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে সফল হয় নি তারা। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭৩.৪৯ শতাংশ।

নবগ্রামের কড়াইদিঘি গ্রামে সর্দারপাড়ায় মদের দোকানে ঘাঁটি গেড়েছল তৃণমূল কর্মীরা। তীর ধনুক নিয়ে রাস্তায় দাঁড়ান  সমসাবাদের মানুষ। এই গ্রামেই বাড়ি তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবাশিষ ব্যানার্জির। তবে এগবার সাহস করেনি তৃণমূল কংগ্রেস।

রতনপুর ৭৩ নং বুথের কাছে জমায়েত করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। সিপিআই(এম) কংগ্রেস কর্মীরা প্রতিবাদ করায় হস্তক্ষেপে বাধ্য হয়।  
জমায়েত কে কেন্দ্র করে হয় বচসাও। পুলিশ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর হস্তক্ষেপে পিছু হটে তৃণমূল কর্মীরা। বালিয়ার গোপালপুরে গ্রামবাসীদের চাপে তৃণমূলের সমাজবিরোধীদের আটক করতে বাধ্য হয় পুলিশ। 
কোন পোলিং এজেন্ট উপস্থিত হওয়ার আগেই মকপোল হয়েছিল ডাঙরাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫৩ নম্বর বুথে।  প্রিসাইডিং অফিসারকে সরিয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন।


সাগরদিঘির বোখরায় ৪৮ নম্বর বুথে ঢোকার চেষ্টা করেন ধুলিয়ান পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মেহেবুব আলম। সাথে ছিলেন সাঙ্গপাঙ্গরা। সিপিআই(এম) , কংগ্রেস কর্মীদের প্রতিবাদে সেখান থেকে সরে যান তিনি। সাগরদিঘিতে দিনভর ঘুরেছেন তৃণমূলের ছোট, বড় নেতারা। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছিলেন তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে।  পাটকেলডাঙ্গায় ঘুরছিলেন তৃনমূল নেতা, জিয়াগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ ঘোষ। গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে এলাকা ছাড়েন তিনিও।  
ভাগীরথী নদীর উত্তরপাড়ে তেজরাইপুরে, তৃণমূল কর্মীরা জমায়েত হয়েছিল এদিন। চলছিল তৃণমূলের ‘পিকনিক’ তবে নদী পেড়িয়ে তৃণমূল কর্মীদের সাগরদিঘিতে ঢুকতে দেন নি সিপিআই(এম), কংগ্রেস কর্মীরা। 
তবে এদিন ভোট ছিল শান্তিপূর্ণ। সাগরদিঘির বাড়ালায় ঢোকার চেষ্টা নবগ্রামের তৃণমূলের কর্মীদের একাংশ। তবে প্রতিরোধের মেজাজ টের পেয়ে এগিয়ে আসে নি তারাও। 

বুথে দাপট দেখাতে না পেরে সাগরদিঘির হাজি জুবেদ আলি বিদ্যাপীঠের ৫৪ নম্বর বুথে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল কর্মীরা। বালিয়া অঞ্চলের ১৪৯ নম্বর বুথে ভুয়ো ভোটারকে আটকে রাখেন গ্রামের মানুষ।
সারারাত পুলিশের নিরাপত্তা নিয়েই এলাকায় ঘুরেছে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। চলেছে ভোটকে প্রভাবিত করার। সিপিআই(এম), কংগ্রেস কর্মীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা। 
নির্বাচন প্রসঙ্গে এদিন বহরমপুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “এই নির্বাচনে সাগরদিঘির সাধারণ মানুষ প্রমাণ করে দিয়েছেন ভয় ভীতির কাছে তাঁরা মাথা নওয়াবেন না। তৃণমূল গত কয়েক দিন ধরে সন্ত্রাস করার চেষ্টা করেছে।  তবে সাধারণ মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ তা রুখে দিয়েছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও নির্বাচন কমিশন এখানে শান্তিপুর্ণ নির্বাচন করার জন্য সদর্থক ভুমিকা পালন করেছে। মানুষের ভোট দেওয়ার ইচ্ছা আর কেন্দ্রীয় বাহিনীর মানুষের সেই অধিকারকে বাস্তবায়িত করার যে নৈতিকতা দুটোর মিলন এবং সাগরদিঘির উপনির্বাচন কংগ্রেস জিতছে”।
সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদপক জামির মোল্লা বলেন, " এই নির্বাচনে দীর্ঘ সময় পরে মানুষের ভোট দানের ইচ্ছে পূরণ হল। সরকারে আসার পর প্রথম তৃণমূল সব বুথে এজেন্ট দিতে পারে নি। সব বুথে এজেন্ট হিসেবে ছিলেন কংগ্রেস, সিপিআই(এম) কর্মীরা। মানুষের সম্মিলিত ইচ্ছার জয় হবে নির্বাচনে"।  

তিনি আরো বলেন, এই ভোটে খারাপ অবস্থা বুঝেই  ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীরা। শাসক নেতারা তাড়া খেয়েছেন মানুষের কাছে। সাহসী প্রতিরোধের উদাহরণ তৈরী করেছেন সাগরদিঘির মানুষ। বামফ্রন্ট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীর জয়ের পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে।
কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস বলেন, ভয় দেখিয়েছে তৃণমূল তবুও মানুষ বেরিয়েছেন ভোট দেওয়ার জন্য।

 

Comments :0

Login to leave a comment