সরকার স্থিতিশীল, ভয়হীন এবং নির্ণায়ক। সমাজের সব অংশের মঙ্গলের জন্য সমানভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বাজেট অধিবেশন শুরু ভাষণে কেন্দ্রের সরকারকে এই মর্মে ব্যাখ্যা করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালদের ভাষণ কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারই ঠিক করে দেয়। ফলে রাষ্ট্রপতির ভাষণকে দেখা হয় সরকারের নিজের সম্পর্কে নিজের বর্ণনা হিসেবে।
মুর্মুর ভাষণে ফিরে এসেছে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’, তিন তালাক এবং জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রসঙ্গ।
তিনি বলেছেন, ‘‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক থেকে সন্ত্রাসবাদের কড়া মোকাবিলা, নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা, ৩৭০ ধারা বিলোপ থেকে তিন তালাক প্রথার অবসান, আমার সরকার চিহ্নিত হয়েছে নির্ণায়ক সরকার হিসেবে।’’
৩৭০ ধারা বাতিলের সংবিধান সংশোধনী পাশ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা খারিজ করা হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের পরই। জম্মু ও কাশ্মীরকে ভেঙে আলাদা লাদাখ করে দু’টিকেই কেন্দ্রশাসিত রাজ্য করা হয়েছে। পূর্ণরাজ্যের মর্যাদাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ‘সব অংশের জন্য সমানভাবে কাজ’ বক্তব্যে প্রশ্ন তুলবেন বিরোধীরা। তামিলনাডুতে দেশে প্রথম কেন্দ্রের পাঠানো রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের বক্তব্যের বাইরে ভাষণ দিয়েছেন বিধানসভায়। রাজ্যপালদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিরোধীরা। দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী গুজরাটের গণহত্যাকে ‘উচিত শিক্ষা’ বলেন কী করে, উঠতে পারে সেই প্রশ্নও।
একসময়ে এই পদক্ষেপের সমর্থক প্রযুক্তিবিদ এবং পরিবেশ কর্মী সোনম ওয়াংচুককে এখন ঘরবন্দি থাকতে হচ্ছে কেন্দ্রশাসিত লাদাখ প্রশাসনের সিদ্ধান্তে। ওয়াংচুক পাঁচদিন পরিবেশ অনশনের পর জানিয়েছেন, আগের ব্যবস্থাই ভালো ছিল। যখন গোটাটা একসঙ্গে পূর্ণ রাজ্য ছিল।’’
মুর্মু ভাষণে বলেছেন, ‘‘জনগণকে ধন্যবাদ, পরপর দু’বার স্থিতিশীল সরকারকে নির্বাচিত করার জন্য।’’ নিয়ম অনুযায়ী নরেন্দ্র মোদীর দ্বিতীয় বারের সরকারে এই বছরই শেষ পূর্ণ বাজেট পেশ হবে। ২০২৪-এ নির্বাচনের আগে হবে বাজেট অধিবেশন। তখন স্বল্প সময়ের ‘ভোট অন অ্যাকাউন্ট’ পেশ হবে।
রাষ্ট্রপতির ভাষণে সরকারের দাবি, ‘‘বিশ্বের যেখানেই রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা গিয়েছে সেখানেই দেশগুলি সঙ্কটে পড়েছে। জাতীয় স্বার্থে একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে ভারতের সরকার। তাই অন্য দেশগুলির তুলনায় ভারত নিরাপদ অবস্থায় রয়েছে।’’
বিরোধী দলগুলি এর মধ্যেই আলোচনা করেছেন যাতে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্কটে দেশ লুটের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা যায়। ডলারের তুলনায় সমানে টাকার দাম পড়ার সঙ্কট মোকাবিলার বিষয়টিও আসতে পারে আলোচনায়। ‘স্থিতিশীল’, ‘নির্ণায়ক‘ সরকারের মেয়াদে বেকারির হার ৮ শতাংশের বিপজ্জনক স্তরে কেন বিরোধীরা তুলবেন সেই প্রশ্ন। উঠবে চড়া হারে মূল্যবৃদ্ধি, ছাঁটাই মোকাবিলা করা যাচ্ছে না কেন। ভুখা মানুষের বিচারে ভারত বিশ্বে এক নম্বরে কেন।
সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘আমাদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো জনগণের সঞ্চয়ের কী হবে। এলআইসি সমানে বিনিয়োগ করে গিয়েছে আদানির বিভিন্ন সংস্থায়। আদানি গোষ্ঠীর ঋণে ৪০ শতাংশ অবদান স্টেট ব্যাঙ্কের। এবার আদানির শেয়ার পতনের আর্থিক দায় যাতে মানুষের ঘাড়ে না চাপে দেখতে হবে। সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। সময় বেঁধে তদন্ত করতে হবে।’
Comments :0