ডুয়ার্স-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় একের পর এক হাতির মৃত্যুর ঘটনায় চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বনদপ্তর ও রেলের চরম উদাসীনতা এবং পারস্পরিক সমন্বয়ের অভাবের অভিযোগ তুলে রবিবার জলপাইগুড়ি জেলার চালসায় রেলস্টেশন চত্বরে ধিক্কার মিছিল সংগঠিত হল।
এদিন সকাল থেকেই চালসা রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় জমায়েত হন পরিবেশপ্রেমী ও সচেতন নাগরিকরা। রেলস্টেশন চত্বর পরিক্রমা করে প্রতিবাদী মিছিলটি। হাতে প্ল্যাকার্ড, মুখে স্লোগান “হাতি মারা বন্ধ করো”, “রেলের গাফিলতি চলবে না” এই দাবিতে সোচ্চার হন আন্দোলনকারীরা।
প্রতিবাদের পেছনে মূল কারণ হিসেবে উঠে আসে সম্প্রতি ধূপগুড়িতে ট্রেনের ধাক্কায় দুটি হাতির মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই খবর সামনে আসে শনিবার আসামে ট্রেনের ধাক্কায় একসঙ্গে আটটি হাতির মর্মান্তিক মৃত্যু। লাগাতার এই ঘটনায় বন্যপ্রাণ সুরক্ষা নিয়ে রেল ও বনদপ্তরের ভূমিকায় বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে বলে মত আন্দোলনকারীদের।
বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন পরিবেশপ্রেমী মানবেন্দ্র দে সরকার ও সুমন চৌধুরী। তাঁরা অভিযোগ করেন, হাতি চলাচলের পরিচিত করিডোরগুলিতে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণের কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেই। বনদপ্তর ও রেলের মধ্যে ন্যূনতম সমন্বয়ের অভাবের কারণেই বারবার এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা চালু করা হলে বহু প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব বলেও তাঁরা দাবি করেন।
এই দিনের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে সামিল হয় চালসা আসিহারা ক্যারাটের খুদে খেলোয়াড়রাও। শিশুদের অংশগ্রহণ আন্দোলনকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে বলে মনে করছেন পরিবেশপ্রেমীরা।
আন্দোলনকারীদের স্পষ্ট দাবি, অবিলম্বে রেল ও বনদপ্তরকে যৌথভাবে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। হাতি করিডোর এলাকায় ট্রেনের গতি সীমিত করা, পর্যাপ্ত নজরদারি এবং আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ নিশ্চিত না হলে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
Protest Rally
হাতি মৃত্যু, বনদপ্তর ও রেলের উদাসীনতার বিরুদ্ধে চালসায় ধিক্কার মিছিল
ছবি- প্রবীর দাশগুপ্ত
×
Comments :0