এসএফআই’র তেজের কাছে হার মানলো মমতা ব্যানার্জির পুলিশ। ছাত্র ভোটের দাবিতে এসএফআই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়ারা ভোট করানোর দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে।
ছাত্র ভোটের দাবিতে সোমবার এসএফআই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অভিযানের ডাক দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলির ছাত্র-ছাত্রীরা এদিন জড়ো হন রাজাবাজারে। সেখান থেকে মিছিলের অভিযান শুরু হবে। হয়েছেও তাই। মিছিলের শুরু থেকে এসএফআই কর্মী ও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের দৃপ্তময় স্লোগানই বুঝিয়ে দিচ্ছিল কোনও শক্তি ছাত্রদের স্রোতকে আটকাতে পারবে না। হলোও তাই। মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে গেটে প্রবেশ করতে গেলে পুলিশ আটকায়। ক্যাম্পাসে যাতে মিছিল না প্রবেশ করে, সেই চেষ্টা করছিল পুলিশ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল মূল ফটক। কিন্তু কার্যত গেট ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে এসএফআই ও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের মিছিল। মিছিল আটকাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। শেষপর্যন্ত মিছিল আটকানো যায়নি। ক্যাম্পাসে ঢুকে মিছিলের স্লোগানে গমগম করতে থাকে গোটা চত্বর। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইউনিয়নের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা টিএমসিপি’র কর্মীরা গোটা ঘটনায় হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। মিছিলের তেজে তাদের সাহস হয়নি বাধা দিতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট পেরিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা যখন ঢোকার চেষ্টা করে তখন কলেজ স্ট্রিট চত্বর কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। দীর্ঘক্ষণ কলেজ ষ্ট্রিট ও ক্যাম্পাস চত্বর স্তব্ধ হয়ে থাকে। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মিছিলের একটা অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে থাকলে তার থেকে অনেক বেশি ছাত্র-ছাত্রী ক্যাম্পাসে বাইরে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছিল। ছাত্র ভোট ছাড়াও কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার পরীক্ষার সমস্যা, সময় মতো রেজাল্ট প্রকাশ না হওয়া, পঠনপাঠনে সিবিসিএস পদ্ধতি সমস্যা মেটানোর দাবি নিয়ে স্লোগানে মুখরিত ছিল গোটা চত্বর। এসএফআই’র রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘ছাত্র ভোট সরকারকে করতেই হবে। ছাত্র ভোট করলেই শাসক দলের ছাত্র সংগঠন হারবে জেনে সরকার ছাত্র ভোট করাচ্ছে না। আমরা সরকারকে ছাত্র ভোট করাতে বাধ্য করবোই। এদিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অভিযান দিয়ে সেই লড়াই শুরু হলো। এমন লড়াই সারা রাজ্যের ক্যাম্পাসগুলিতে হবে। দেখি পুলিশ কিভাবে বাধা দেয়।’’ এসএফআই’র কলকাতা জেলা সভাপতি দেবাঞ্জন দে জানিয়েছেন, এদিন যদি টিএমসিপি বাধা দিতে আসতো তাহলে এসএফআই তার যোগ্য জবাব দিত। আমরা ঠিকই করেছিলাম, পুলিশ বাধা দিতে আসলে মানবো না। তাই হয়েছে। পুলিশকে হটিয়ে এসএফআই এদিন ক্যাম্পাস দখল নিয়েছে।
তবে ক্যাম্পাসে ছাত্র ভোট করানোর দাবি নিয়ে এসএফআই অনেকদিন ধরে লড়াই শুরু করে দিয়েছে। ২০১৭সালে রাজ্যে সর্বশেষ ছাত্র ভোট হয়েছিল। তারপর থেকে সরকার ছাত্র ভোট স্থগিত রেখেছে। রাজ্যের বহু কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। জোর করে টিএমসিপি ইউনিয়ন দখল করে রেখেছে। এই সময়ের মধ্যে ভিক্টোরিয়া কলেজ, প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ভোট হলে এসএফআই জিতেছে। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা টিএমসিপি’কে ধারে কাছে ঘেঁষতে দেয়নি। যদিও নির্বাচনে জিতে আসা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইউনিয়ন বহিরাগতদের নিয়ে দখল করতে গেছিল টিএমসিপি। প্রতিরোধ করে হটিয়ে দেওয়া হয়েছিল টিএমসিপি’কে।
SFI CU movement
পুলিশের বাধা টপকেই ক্যাম্পাসে স্লোগান, করতেই হবে ছাত্র ভোট
×
Comments :0