STORY | SOURISH MISHRA | AUTOGRAPH VIRAT | NATUNPATA | 2025 MARCH 2

গল্প | সৌরীশ মিশ্র | বিরাটের অটোগ্রাফ | নতুনপাতা | ২০২৫ মার্চ ২

ছোটদের বিভাগ

STORY  SOURISH MISHRA  AUTOGRAPH VIRAT  NATUNPATA  2025 MARCH 2

গল্প | নতুনপাতা

বিরাটের অটোগ্রাফ

সৌরীশ মিশ্র


সকাল থেকেই আজ ভারি খুশি-খুশি হয়ে আছে মনটা ঋজুর। হবে না! ওর দাদা ঋতুরাজ যে এসছে আজ বাড়ি, পুরো ছ'-ছ'টামাস পর দিল্লি থেকে।
ঋতুরাজ আর ঋজুর মধ্যে বয়সের ফারাক বেশ অনেকটাই। ঋতুরাজ এখন পড়ছে দিল্লির একটা নামজাদা ইউনিভার্সিটিতে।
আজ রবিবার। তাই, স্কুল নেই ঋজুর। সারাটাদিন টিউশন-ও নেই ওর। ঋতুরাজ আসার পর থেকে তাই দাদার সঙ্গে ঠিক এঁটুলির মতোন আটকে আছে ঋজু। সে যে একেবারে ছোট থেকেই তার দাদার খুব খুব ন্যাওটা। 
এখন, ঋতুরাজ ব্যাগ থেকে তার জিনিসপত্র সব বের করছে। আর খাটে বসে তাই দেখছে ঋজু। টুকটাক কথা বলছে দু'জনে।
জামাকাপড় কয়েকটা বের করে, ঋতুরাজ এবার একটা ছোট্ট খাতার মতোন কি যেন বের করল তার ব্যাগ থেকে। তারপর সেটা ঋজুর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, "ঋজু, এই নে। এটা তোর জন্য।"
"কি রে দাদা?" হাত বাড়িয়ে ছোট্ট খাতাটা নিতে নিতে জানতে চায় ঋজু।
"দ্যাখ না কি!"
ঋজু হাতে নিয়ে দেখে, সেটা একটা অটোগ্রাফ বুক।
"অটোগ্রাফ বুক?"
"হ্যাঁ। তবে এটা ফাঁকা অটোগ্রাফ বুক নয়। পাতা উল্টে দ্যাখ, ভিতরে তোর ফেভারিট একজনের অটোগ্রাফও আছে।"
কার অটোগ্রাফ এনেছে দাদা আমার জন্য? প্রশ্নটা ঘুরতে থাকে ঋজুর মনে। আর, সেকথা ভাবতে ভাবতেই প্রথম থেকে একটা একটা করে অটোগ্রাফ বুকটার রঙিন পাতাগুলো ওল্টাতে থাকে সে। 
তবে, কয়েকটা পাতা উল্টেই অধৈর্য্য হয়ে ওঠে ঋজু। কারণ, এতক্ষণ যে ক'টা পৃষ্ঠা সে দেখেছে সবগুলো পাতাই যে খালি। সে তাই বলেই বসে, "পাতাগুলো যে সবই ফাঁকা রে দাদা!"
"সব ফাঁকা নয়। ভাল করে দ্যাখ, ভিতরের একটা পাতায় আছে।" 
আরো, কয়েকটা পৃষ্ঠা ঝটপট ওল্টায় ঋজু। আর ওল্টাতেই এবার সে দেখতে পায়, একটা পাতায় একজনের সই। আর, অটোগ্রাফটায় কয়েকক্ষণ চোখ রাখতেই, বিদ্যুতের মতো ঝলক দিয়ে মাথায় এল তার, কার অটোগ্রাফ সেটা। এটা তো ওর প্রিয়তম ক্রিকেটার বিরাট কোহলির অটোগ্রাফ! কতবার তো দেখেছে ও বিরাটের সই ইন্টারনেটে, বিভিন্ন ওয়েবসাইটে।
ঋতুরাজ আড় চোখে দেখে, ওর ভাই-এর মুখটা ঝলমল করছে খুশিতে। ভাইটাকে এতো খুশি দেখে ঋতুরাজেরও খুব ভাল লাগে।
"দাদা, বিরাটের অটোগ্রাফ! পেলি কোথায়!" জিজ্ঞেস না করে পারে না ঋজু।
"ক'দিন আগে রঞ্জি খেলতে এসছিল না দিল্লিতে! ইন্ডিয়া টিমের সঙ্গে যখন থাকে তখন তো ধারেকাছে ঘেঁষাই যায় না। এখানে অতটা ছিল না কড়াকড়ি। তবু, ম্যাচের দিনগুলোয় নেওয়া যাবে না জানতাম। তাই, প্র্যাকটিসের দিনগুলোতে গিয়েছিলাম। প্রথম দিন তো সারাদিন থেকেও পেলাম না। সেকেন্ড দিন পেলাম। তাও অনেককে বলে-কয়ে, তারপর।"
"আমার জন্য তুই এতো কষ্ট করলি রে দাদা?"
"করব না! তুই যে আমার ভাই। তোর জন্য করব না তো, কার জন্য করব!"
দাদার কথাগুলো শুনে মুহূর্তে দু'চোখ ভিজে যায় ঋজুর। কত্তো ভালবাসে ওকে ওর দাদা! নিজেকে ধরে রাখতে পারেনা সে আর। এগিয়ে গিয়ে দু'হাতে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে ঋজু তার দাদাকে।
ঋতুরাজও জড়িয়ে ধরে ঋজুকে তার বুকের মাঝে। সে মনে মনে ভাবে, তার এতো কষ্ট করে অটোগ্রাফটা জোগাড় করা সার্থক হয়েছে।
 

Comments :0

Login to leave a comment