মার্কিন অর্থনীতিতে শঙ্কা বাড়ালো সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক। এই বিনিয়োগ ব্যাঙ্কের লেনদেন বন্ধ হয়েছে শেয়ার বাজারে। হু-হু করে ব্যাঙ্কের শেয়ারের দর পড়ে যাওয়ায় আপাতত লেনদেন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রকরা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম শনিবার জানাচ্ছে যে মাত্র চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে ৬ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকারও বেশি সম্পদমূল্য কমেছে এই ব্যাঙ্কের।
আমানতকারীরা ব্যাঙ্কে নগদে টাকা তুলতে চাইছিলেন অনেকে। একসঙ্গে নগদে অনেক অর্থের প্রয়োজন হওয়ার সম্পদ বিক্রিতে নামে সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক। শেয়ার বাজারে আর্থিক সম্পদ বিক্রি করতে নামে। তখনই দেখা যায় সম্পদের মূল্য দ্রুত পড়তে শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, মার্কিন অর্থনীতিতে চড়া মাত্রায় সুদের হার বাড়ার পরিণতি সিলিকন ব্যাঙ্কে ধস। আরেকদল বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, সুদের হার কম থাকার সময় অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে বিনিয়োগ করেছিল এই ব্যাঙ্ক। যার দরুন এখন সম্পদের প্রত্যাশিত দাম মিলছে না।
মার্কিন অর্থনীতিতে এই ব্যাঙ্কের পতন কেমন প্রভাব ফেল তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে বিভিন্ন অংশই। কেউ কেউ বলেছেন, ২০০৮’র পর এভাবে দ্রুত কোনও ব্যাঙ্কে ধস নামেনি।
পিনটারেস্ট, শপিফাই’র মতো তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর নতুন সংস্থা বা ‘স্টার্ট আপ’-এ বিনিয়োগের জন্য আর্থিক লেনদেন বাজারে চোখ টেনেছিল সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক। আমানতও বেড়েছিল লাফিয়ে। ২০২১’এ যখন মার্কিন অর্থনীতিতে সুদের হার শূন্যের কাছে, সেই সময়ে বন্ডে বিনিয়োগ করে এই ব্যাঙ্ক।
মার্কিন অর্থনীতিতে প্রায় পনেরো বছর সুদের হার নিচে থাকার পর গত এক বছরে বাড়তে থাকে। সে দেশের কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান ফেডারাল ব্যাঙ্ক সুদের হার দফায় দফায় বাড়িয়েছে। এরপরই শুরু হয় আমানত থেকে অর্থ তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া। সুদের হার বাড়ায় অন্য ব্যাঙ্কে আকর্ষণীয় ‘অফার’ ছিল। অর্থনৈতিক মন্দার ভয় থাকায় অনেকেই নগদে টাকা তুলে নিচ্ছেন বা তুলনামূলক বিচারে ভরসা বেশি এমন সম্পদে বিনিয়োগ করতে চাইছেন। তার প্রচাব পড়েছে সিলিকন ভ্যালিতে।
প্রশ্ন হচ্ছে অন্য ব্যাঙ্কের আমানতকারীরা যদি একই মনোভাব দেখান তা’হলে কী হবে। যদিও মার্কিন সংবাদমাধ্যমে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলেছেন যে এখনই এমন কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
Comments :0