Md Salim

আদালতের নির্দেশে স্পষ্ট রাজ্যের অপদার্থতা: সেলিম

রাজ্য

 

রাজ্যে সাম্প্রদায়িক অশান্তি রুখতে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানোর আদালতের নির্দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজ্য সরকারের অপদার্থতা স্পষ্ট হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বুধবার বিকালে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ধর্মের নামে উন্মাদনাকে রাস্তায় নিয়ে এসেছে তৃণমূল এবং বিজেপি একসঙ্গে পরিকল্পনা করে। মুখ্যমন্ত্রী এখন বিজেপি’র সঙ্গে হাত মিলিয়ে তামাশা করছেন, মন্দির তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, রাজ্যের প্রশাসন চালাতে পারছেন না। একমাস আগে থেকে সাম্প্রদায়িক অশান্তির খবর থাকা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী কঠোর হাতে ব্যবস্থা নেননি কেন? এখন আরএসএস’এর তৈরি করা স্ক্রিপ্টে বিজেপি’র সঙ্গে নাটক করছেন মুখ্যমন্ত্রী। 

 


আদালতের নির্দেশের থেকেও সাম্প্রদায়িক অশান্তি বন্ধে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা যে অনেক বেশি জরুরী সেকথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সেলিম বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ বাহিনী এত অযোগ্য? অপদার্থ? ৯ এর দশকে দাঙ্গা ঠেকাতে কেন্দ্রীয় সরকারের পুলিশ আধুনিকীকরণের টাকায় সব রাজ্যের পুলিশ বাহিনীতে দাঙ্গা দমনের বিশেষ গাড়ি ও সরঞ্জাম কেনা হয়, অ্যান্টি রায়ট স্কোয়াড, র‌্যাপিড
অ্যাকশন ফোর্স ইত্যাদি তৈরি হয়। পশ্চিমবঙ্গে মানুষ যখন শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন করেছে মমতা ব্যানার্জির সরকার তাদের ওপরে এগুলো প্রয়োগ করেছে। হাওড়ায়, রিষড়ায় এগুলো যথাসময়ে ব্যবহার হয়নি কেন?

 


সেলিম আরও প্রশ্ন তুলেছেন, হাওড়ার পুলিশ কমিশনার বিশ্বহিন্দু পরিষদকে চিঠি দিয়ে মিছিলে বাইক থাকবে না শর্ত দিয়েছিলেন, মিছিলের সময় ও রুট সব নির্দিষ্ট করেছিলেন। এর কোনোটাই প্রয়োগ করা হয়নি কেন? মুখ্যমন্ত্রী ধর্ণার তামাশা করলে সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচে পূর্ত দপ্তরের ব্যারিকেড করা যায়, পুলিশ ঘিরে রাখে, আর উসকানি মূলক মিছিল আটকাতে পদক্ষেপ নেওয়া গেলো না? অস্ত্র বন্দুক নিয়ে মিছিলকারীদের আটকানো গেলো না? আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কোনো নির্দেশ যথেষ্ট নয়, যদি তা প্রয়োগ না হয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এরাজ্যে অপদার্থ প্রমাণিত হয়েছে, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীই এর জন্য দায়ী। পুলিশকে ব্যর্থ বলে মুখ্যমন্ত্রী ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারেন না।


কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নামানোয় তৃণমূল এবং মুখ্যমন্ত্রীও আপত্তি নেই বলে যা জানিয়েছে সেই সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সেলিম বলেছেন, তাহলে পঞ্চায়েত নির্বাচনেও কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইবেন তো? যে অপদার্থ পুলিশ সাম্প্রদায়িক মিছিল আটকাতে পারে না, তারা পঞ্চায়েতে ভোট লুট আটকাবে? 
আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্যপালের বার্তা সম্পর্কেও সেলিমের জবাব, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কোনো পর্যবেক্ষণ থাকলে রাজ্যপাল মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিবকে ডেকে বলতে পারতেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে জানাতে পারতেন। তা না করে উনি প্রশাসন পরিচালনার যে দায়িত্ব নিচ্ছেন তাতে মমতা ব্যানার্জি আপত্তি করেছেন? কেন করেননি? মুখ্যমন্ত্রী হাতে খড়ি দিয়েছিলেন, এখন রাজ্যপাল বর্ণপরিচয় নিয়ে নেমে পড়েছেন। আবারও প্রমাণ হচ্ছে নবান্ন থেকে আর রাজ্য চালানো হচ্ছে না, দুর্নীতির সাজা থেকে ভাইপো ও পরিবারকে বাঁচাতে রাজ্যটাকে আরএসএস আর কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির হাতে তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীই। 
রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদলের ভরসায় না থেকে এখনই মানুষকে একজোট হওয়ার আবেদন করেছেন মহম্মদ সেলিম।

Comments :0

Login to leave a comment