Siliguri Municipal Corporation

হকার উচ্ছেদ থেকে পানীয় জল, শিলিগুড়ি কর্পোরেশনে সরব বামপন্থীরা

রাজ্য জেলা

পানীয় জলের সঙ্কট আছেই। নতুন করে শুরু হয়েছে হকার উচ্ছেদ। প্রান্তিক মানুষের ওপর জীবন জীবিকা শেষ করে দেওয়া হচ্ছে কেন। 
শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের বোর্ড সভায় এমনই একের পর এক প্রশ্ন তুলে সরব হলে বামপন্থী কাউন্সিলররা। শহরবাসীর জ্বলন্ত সমস্যা নিয়ে সরব হয়েছেন বামপন্থীরা। বেআইনি নির্মান,  প্রমোটাররাজের মতো বিষয়েও প্রশ্ন তুললেন বিরোধী বামপন্থী কাউন্সিলররা। 
শনিবার দুপুরে শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের মাসিক বোর্ড সভায় মোট সাতটি মোশন, একটি কলিং অ্যাটেনশন ও ৪টি প্রশ্ন তোলেন বামপন্থীরা। 
বামপন্থী কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, দলীয় সভা করা হচ্ছে কর্পোরেশনে। সম্প্রতি রাজ্যের পৌর নগরোন্নয়ন মন্ত্রী শিলিগুড়ি কর্পোরেশনে সভা করেছেন দলের কাউন্সিলরদের নিয়ে। সেই সভাতে তৃণমূলের জেলা সভানেত্রীও ছিলেন। কিন্তু বিরোধী বামপন্থী কাউন্সিলারদের ডাকা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর অনলাইন সভাতেও কেবল তৃণমূলের কাউন্সিলররাই উপস্থিত থেকেছেন। তা’হলে তৃণমূলের দলীয় সভা কেন কর্পোরেশনে করা হলো? 
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হকার উচ্ছেদ হয়েছে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, পানীয় জল সঙ্কটে শহরবাসী গত প্রায় এক মাস ধরে ভুগছেন। শহরের ৪৭টি ওয়ার্ডের সবকটিতেই কম বেশি জলসঙ্কট এখনও রয়েছে। সম্প্রতি ১৫ দিন ধরে একটি ওয়ার্ডে জল যাচ্ছে না। ইঞ্জিনিয়াররা যাচ্ছেন, দেখে ফিরে যাচ্ছেন। কিন্তু কর্পোরেশন নির্বিকার। 
এছাড়াও প্ল্যাস্টিক, থার্মোকলের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার খামতির বেশ কিছু খুঁটিনাটি বিষয় তুলে ধরে বেশ কিছু প্রস্তাবও উত্থাপন করেছেন তিনি। জানতে চান মেয়র পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেও দীর্ঘ এগারো মাস পেরিয়ে গেছে। কেন ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিনিয়ার সিজিটেন পার্ক নির্মানের টেন্ডার হয়নি। 
পৌর কর্পোরেশনে কর্মরত কমিশনভিত্তিক কর সংগ্রহকারীদের কমিশন ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে নিয়ে আসা হয়েছে কেন তা বোর্ড সভায় জানতে চান ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআই(এম) কাউন্সিলর জয় চক্রবর্তী। বিভিন্ন দোকান থেকে শহরবাসীরা যে জারবন্দি জল কিনে পান করছেন সেই জলের গুনগত মান যাচাই করার দাবি তোলেন তিনি। শহর জুড়ে অবৈধ পার্কিং ও হকার উচ্ছেদের নামে ছোট ব্যবসায়ীদের জীবন জীবিকায় আক্রমণ নামিয়ে আনার বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। 
শহরের তীব্র যানজট সমস্যা বিষয়ে বামপন্থী মহিলা কাউন্সিলার মৌসুমী হাজরা মোশন তুলে বলেছেন, বাড়ন্ত শহর। নতুন কোন রাস্তা নেই। গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। কোর্ট মোড় থেকে শুরু করে শহরের যে প্রান্তে যাওয়া যাক না কেন যানজটের ভয়ঙ্কর চিত্র। এক্ষেত্রে ট্র্যাফিক ব্যবস্থার পাশাপাশি কর্পোরেশনের সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। অনিয়ন্ত্রিত টোটোর দাপটে অস্থির শহরবাসী। পণ্যবাহী গাড়ি দাঁড় করিয়ে মাল ওঠানো নামানোরও সময়ও বেঁধে দিতে হবে। শহরের কলেজ স্কুলগুলির সামনে সকাল দশটার পরে যানজট সমস্যা প্রকট আকার নেয়। বামফ্রন্টের সময়ে শহরের মূল রাস্তায় রিক্সা চলাচলে সময়সীমা চালু করা হয়েছিল। উদ্যোগ নিয়ে অবিলম্বে এই জলন্ত সমস্যার সমাধান করা উচিৎ।  
দীপ্ত কর্মকার প্রশ্ন তোলেন, ২২ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝে যে ছোট সেতু রয়েছে সেখানে নদীর মধ্যে ঢালাই করে গার্ড ওয়াল হচ্ছে। কার অনুমতি নিয়ে পুরোনো গার্ড ওয়াল থাকা সত্ত্বেও নতুন করে নদীর মাঝে ঢালাই করা হচ্ছে। প্ল্যান ছাড়াই বহু বাড়ি তৈরি হয়ে যাচ্ছে। প্রমোটাররাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

Comments :0

Login to leave a comment