মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি এবং অর্থনীতির অধোগতির মতো সমস্যা এড়িয়ে গিয়েছে কেন্দ্রের বাজেট। বুধবার এই অভিযোগ করেছেন সিপিআই(এম)-র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, অতি ধনীদের ওপর কর বেশি করে চাপানোর পাশাপাশি যুব সম্প্রদায়ের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। তিনি মনে করেন, বাজেটের লক্ষ্যই হওয়া উচিত ছিল জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানো এবং এরই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি।
এদিন সংবাদ সংস্থা পিটিআই’কে দেওয়া এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে ইয়েচুরি বলেছেন, গত দু’বছরে সৃষ্ট ১৪.৫ শতাংশ সম্পদ কুক্ষিগত হয়ে রয়েছে অতি ধনী ১ শতাংশের কাছে। এঁদের ওপরেই বেশি করে কর চাপাতে হবে। এই বিষয়ে সরকার কতটা আগ্রহী সেই প্রশ্ন তুলে ইয়েচুরি বলেছেন, ধনীদের কর ছাড়ের পরিবর্তে কেন্দ্রের উচিত কর্মসংস্থানমুখী পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়ানো। কিন্তু ধনীদের বেশি করে কর ছাড় দিতে গিয়ে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা, একথা নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন অর্থ মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এর ফলেই অর্থনীতি আরও সঙ্কুচিত হচ্ছে বলে অভিযোগ সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক।
আয়কর ছাড় দিয়ে বেতনভুকদের সামান্য স্বস্তি দেওয়ার প্রস্তাবকে ইয়েচুরি ভালো বললেও মুদ্রাস্ফীতি এবং সামাজিক পরিষেবা খাতে বরাদ্দ হ্রাসের ফলে প্রতিটি ব্যক্তি এবং পরিবারকে আরও বেশি খরচ করতে হবে বলে মনে করেন ইয়েচুরি। তিনি বলেন, সরকারি মূলধনী খাতে ব্যয় মাত্র ৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আয়ের আনুপাতিক কর কাঠামো তৈরি করলে আরও বেশি সম্পদ বিনিয়োগ, পরিকাঠমো গড়ে তোলা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনীতির চাঙ্গা করতে সাহায্য হতো। তিনি অভিযোগ করেন, কোষাগারীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা আরও বেশি কোণঠাসা অবস্থায়। জিএসটি ক্ষতিপূরণকে এখন রাজ্যগুলিকে ঋণ হিসাবে দেওয়া হচ্ছে। জিএসটি চালুর পর রাজ্যগুলি আর সম্পদ সৃষ্টি করতে পারছে না। তাদের ঋণ নেওয়ার অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে না। রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রের কাছে ভিক্ষার পাত্র হাতে করে দাঁড়ানোর পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে।
ইয়েচুরি অভিযোগ করেন, কর্ণাটকের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হলো। এর থেকেই পরিষ্কার, যে রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আছে তারা যাবতীয় সুবিধা ভোগ করবে। আর অ-বিজেপি রাজ্যগুলিকে আরও বেশি কোণঠাসা করা হবে।
এদিকে, কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বাজেট প্রসঙ্গে বলেন যে, ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার কোনও দিশা নেই। কর্পোরেটদের হাতে আরও বেশি সম্পদ কুক্ষিগত হবে এই বাজেটের ফলে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এমনকি বাজেটে আঞ্চলিক ভারসাম্য গড়ে তোলার কথাও উল্লেখ নেই বলে জানান বিজয়ন।
Comments :0