৫ ফেব্রুয়ারি নয়া দিল্লির যন্তর মন্তরে সুপ্রিম কোর্টকে নিশানা হিন্দুত্ববাদীদের। ওইদিন একটি বিক্ষোভে, সুদর্শন টিভির প্রধান এবং উগ্র হিন্দুত্ববাদী সুরেশ চাভাঙ্কের সমর্থকরা একত্রিত হয় একটি সভায়। সেখানে ভারতকে "হিন্দু রাষ্ট্র" করার জন্য "মারো এবং মরো" ইত্যাদি ঘৃণা বক্তৃতা করার জন্য ২০২১ সালে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ভর্ৎসনা করা হয়। রায়কে বলা হয় ‘‘অপ্রয়োজনীয় আইনি হয়রানি’’। সভায় শীর্ষ আদালতের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণেরও অভিযোগ করা হয়।
হিন্দু যুব বাহনী ও হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী দ্বারা আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানে চাভাঙ্কের ঘৃণা বক্তৃতাকে গত বছরের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্ট কড়া সমালোচনা করে। শীর্ষ আদালত দিল্লি পুলিশকেও এক হাত নেয় যে দিল্লি পুলিশ প্রাথমিকভাবে এই জানিয়েছিল ‘‘অনুষ্টানে কোনও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেওয়া হয়নি।’’
অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের কাছে ‘শপথ’ নেওয়ার সময়, চাভাঙ্কে বলেছিলেন:
‘‘যদি প্রয়োজন হয়, আমরা মারব এবং মরব। তবে আমরা যে কোনো মূল্যে দেশকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করব। আমাদের পূর্বপুরুষ এবং দেবতারা আমাদের লক্ষ্য অর্জনের শক্তি দিন।’’
গতকালের অনুষ্টানে চাভাঙ্কের সমর্থকরা যন্তর মন্তরে দাবি করেন যে উপরে উল্লিখিত শপথটিতে কিছু ভুল ছিল না। অনেক বক্তা সুপ্রিম কোর্টকে ‘‘মুসলিম তোষণ’’ এবং ‘‘হিন্দুদের প্রতি কঠোর হলেও অন্যান্য ধর্মের ক্ষেত্রে উদার’’ বলে কটাক্ষ করেন।
একজন বক্তা এবং রাষ্ট্র নির্মাণ পার্টির সভাপতি, অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার আনন্দ কুমার বলেছেন, ‘‘এটা আশ্চর্যজনক যে সুপ্রিম কোর্ট পুলিশকে জিজ্ঞাসা করছে যে তারা কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বা কাউকে গ্রেপ্তার করছে না, যখন পুলিশ ইতিমধ্যেই বলেছে যে তদন্তে চাভাঙ্কের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ ধরা পড়েনি।’’
রাগিনী তিওয়ারি, সুরজ পাল আম্মু, আস্থা মা এবং অন্নপূর্ণা ভারতীর মতো উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেতারা এই অনুষ্ঠানের অংশ ছিলেন। চাভাঙ্কে নিজে উপস্থিত ছিলেন না। আনুমানিক ৩০০ থেকে ৪০০ লোক জমায়েত হয় এই অনুষ্টানে। স্কুল পড়ুয়াদেরও আনা হয় অনুষ্ঠান শুনতে।
সুপ্রিম কোর্টের তিরস্কারের পরে, দিল্লি পুলিশ ৪ মে, ২০২২-এ সুরেশ চাভাঙ্কের বিরুদ্ধে নতুন মামলা দায়ের করেছিল।
১০ জানুয়ারী, ২০২৩-এ সুপ্রিম কোর্ট আবারও দিল্লি পুলিশকে ভর্ৎসনা করে বলে যে গত বছর এফআইআর দায়ের করার আট মাস পরেও ‘‘কোনও গ্রেপ্তার’’, ‘‘কোনও অভিযোগপত্র নেই’’ এবং ‘‘কোনও স্পষ্ট অগ্রগতি’’ হয়নি।
অনুষ্ঠানে দাসনা দেবী মন্দিরের অমৃতানন্দ বলেন যে চাভাঙ্কের নেতৃত্বাধীন সুদর্শন নিউজ হল ‘‘একমাত্র চ্যানেল যা আমাদের মা ও বোনদের রক্ষা করছে।’’
‘‘এটি আমাদের ভাইদের গলা কাটা থেকে রক্ষা করতে কাজ করে। এটি ‘লাভ জিহাদ’ এবং ‘ল্যান্ড জিহাদ’ সহ অনেক ধরনের ‘জিহাদ’এর মুখোশ খুলে দেয়,’’ অমৃতানন্দ যোগ করেছেন।
Comments :0