রাষ্ট্রপতি ভবনের ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যেই মুঘল গার্ডেন্স অমৃত উদ্যানে বদলে গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র টুইট করে বলেন, দেশ অমৃত কালে প্রবেশ করেছে। এই সময়ে দাসত্বের মানসিকতা থেকে দেশবাসীকে বের করে আনতে আরও এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। সম্বিত পাত্র ছাড়াও বিজেপির একাধিক নেতামন্ত্রী এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
সম্বিত পাত্র এবং বিজেপি নেতৃবৃন্দ মুঘল গার্ডেন্স নামটিকে দাসত্বের প্রতিশব্দ মনে করলেও ইতিহাস অন্য কথা বলছে। অন্তত এমনটাই দাবি ইতিহাসবিদদের। তাঁদের বক্তব্য, নতুন দিল্লির রূপকার বৃটিশ স্থপতি এডউইন লিউটেন ১৯১৭ সালে এই বাগান তৈরির স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু বাগান তৈরির কাজ শুরু হয় ১৯২৮-২৯ সাল নাগাদ। রাষ্ট্রপতি ভবন বা তৎকালীন বৃটিশ ভাইসরয়ের আবাসের এই বাগানটি গড়ে ওঠে ১৫ একর জমির উপর। মুঘল উদ্যানশিল্প এবং বৃটিশ উদ্যানশৈলীর সংমিশ্রণে গড়ে ওঠার ফলে এই বাগান মুঘল গার্ডেন্স নামেই পরিচিতি পায়। সেই বাগানের নাম পরিবর্তন করা একপ্রকার ইতিহাস অবমাননারই সামিল।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর এক ঐতিহাসিক শৌধ এবং জায়গার নাম বদল করা শুরু করেছে বিজেপি। কখনও কেন্দ্রীয় সরকার এই কাজ করেছে, আবার কখনও বিজেপি শাসিত রাজ্য সরকারগুলি এই নামবদলের প্রক্রিয়া চালিয়ে গিয়েছে। মূলত সুলতানি কিংবা মুঘল আমলের স্থাপত্য এবং জায়গাগুলির বিরুদ্ধেই সংঘ পরিবার এবং বিজেপির এই আক্রোশ। তারফলে মুঘলসরাই স্টেশনের নাম বদলে হয়েছে দীন দয়াল উপাধ্যায় স্টেশন। এলাহাবাদ শহরের নাম বদলে গিয়েছে প্রয়াগরাজে। দেশের প্রায় সমস্ত প্রান্তেই ছড়িয়ে রয়েছে এমন উদাহরণ। দিল্লির মুঘল গার্ডেন্সের নাম বদল সেই তালিকার সাম্প্রতিকতম নিদর্শন।
Comments :0