Tamluk Hospital

চিকিৎসকদের মারধর, প্রতিবাদে কর্মবিরতি তমলুক হাসপাতালে

জেলা

তমলুক মেডিক্যাল কলেজে কর্মবিরতি চিকিৎসকদের

রোগী মৃত্যু নিয়ে রাতভর তাণ্ডব। মারধরের ঘটনা ঘটেছে তমলুক মেডিক্যাল কলেজে। মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেল ভাঙচুর, পড়ুয়া চিকিৎসকদের মারধরের করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। বুধবার গভীর রাতে তমলুকের তাম্রলিপ্ত গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে পাল্টা বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন চিকিৎসকরা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে তমলুকের চক্ শ্রীকৃষ্ণপুরের বাসিন্দা এক যুবক সেখ আরিফ আলিকে পথ দুর্ঘটনার কারণে তমলুক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছু সময় পর তার মৃত্যু হয়। চিকিৎসার গাফিলতির কারণেই মৃত্যু হয়েছে এমন অভিযোগে মৃত ব্যক্তির বাড়ির লোকজন বিক্ষোভে সামিল হয় রাতেই। বিক্ষোভ এমন পর্যায়ে পৌঁছায় হাসপাতালে ও মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলে ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা। ঘটনায় দুই চিকিৎসক গুরুতর আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।
রাত প্রায় সাড়ে বারোটায় এমন ঘটনায় রাতের শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়। শতাধিক মানুষ জড়ো হয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানান চিকিৎসকদের একাংশ। এই ঘটনার প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছেন পড়ুয়া চিকিৎসকরা।
মৃত যুবকের পরিবারের লোকেরা বলেন, ‘‘তমলুকের নিমতৌড়িতে পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর যখন হয়েছিলেন শেখ আরিফ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকরা বলেন বুকের এক্সরে করতে হবে। আরিফ তখন কথা বলছিল। কিছু পরেই চিকিৎসকরা বলে তার মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকরা আর একটু ভালো ভাবে চিকিৎসা করতে পারতো।’’ 
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন ‘‘চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগী আত্মীয় পরিজনেরা। এই অভিযোগেই গভীর রাতে শুরু হয় তাণ্ডব। মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলে চড়াও হয়ে ভাঙচুরের পাশাপাশি দুই চিকিৎসককে বেধড়ক মারধর করা হয়। এই ঘটনায় বাধা দিতে এসে কর্তব্যরত এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকেও হেনস্তা করা হয়েছে।’’ 
আক্রান্ত এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার পর শেখ আরিফ আলী নামে এক যুবককে নিয়ে আসা হয়। আমরা তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা শুরু করি। কিছুক্ষণ পরেই ওই যুবকের বাড়ির লোকজন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কোনও কিছু না বলে ডিসচার্জ না করিয়েই বাইরে বের করে নিয়ে চলে যায়। পরে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসে। তখন রোগী মৃত। তাঁর বাড়ির লোকজন বলছে বাঁচিয়ে দিন। এ পেসেন্ট যদি না বাঁচে বাইরে বেরোলে মেরে দেবো সবাইকে। এই ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত কোন সুরক্ষা নেই হাসপাতালে। আমাদের দুই সহকর্মীদের মারা হয়েছে। যথার্থ সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকলে আগামী দিনে কিভাবে কাজ করবো আমরা।’’
এদিকে এই ঘটনার তদন্তে নেমে চিকিৎসকদের ওপর হামলার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে তমলুক থানার পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় ছয়টি বাইকও। তাম্রলিপ্ত মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল শর্মিলা মল্লিক বলেন, ‘‘তুলকালাম কান্ড বেধে যায়। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে যাই। সব ঘটনা পুলিশকে জানানো হয়েছে।’’

Comments :0

Login to leave a comment