ভাঙন অব্যাহত বলাগড় ব্লকে। বাড়ি থেকে শুরু করে চাষের জমি সবই গ্রাস করছে গঙ্গা। আর এই ভাঙন পরিদর্শনে গিয়ে এই ক্ষোভের মুখে পড়েন হুগলির সাংসদ।
হুগলির শ্রীপুর বলাগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদরা কলোনী, মিলনগর গ্রামে ভাঙন কবলিত এলাকায় পরিদর্শনে যান সাংসদ। মাটির বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা নিয়ে ক্ষোভ গ্রামবাসীদের। বস্তা ফেলার পরেই তা ভেসে যায়।
সাংসদের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন গ্রামবাসীরা। গঙ্গার ভাঙনে তলিয়ে গেছে বাড়ি। পার ভাঙছে প্রতিনিয়ত। ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটে গ্রামবাসীদের। বুধবার সাংসদকে দেখতে পেয়ে ক্ষোভের সুরে দুঃখের কথা জানান গ্রামের মহিলারা।
গ্রামবাসী কল্যাণী কোলে, নির্মলা বারিকরা বলেন, ‘‘আগের যিনি সাংসদ ছিলেন তার সময়ে বালি ও মাটির বস্তা দিয়ে কিছুটা ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন থাকার পর তা ভেসে চলে যায়। কিন্তু এবার যদি আগের মতো একই ভাবে তৈরি হয় তবে আমরা তা আটকে দেব কারণ আমরা চাই শহরে যেমন ইট দিয়ে কংক্রিটের বাধানো হয় তেমন তৈরি করতে হবে। এই টুকু জমি সম্বল সেটাও যদি চলে যায় তাহলে কি করে বাঁচবো। বাড়িতে একাধিক জায়গায় ফাটল ধরেছে,ঘরের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। পাশের মন্দির ছিল সেটাও ভেঙে চলে গেছে। এখন এই জায়গাটাও যদি চলে যায় কোথায় থাকবো।’’ যাদের বাড়ি তলিয়ে গেছে তাদের আবাসের ঘর মেলেনি বলে অভিযোগ করেন তারা।
গঙ্গার ভাঙ্গন গ্রাস করেছে চাঁদরা কলোনিকে।
শ্রীপুর বলাগড় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চাঁদরা কলোনিতে গঙ্গার ভাঙন প্রবল। ওই এলাকার বাসিন্দাররা আরো জানান, ৭ কাটা জমি ছিলো এখন ২ কাটা অবশিষ্ট অছে। গত কয়েক মাস ধরে ভাঙন বেড়েছে। গঙ্গার পাশে থাকা ৯ টা বাড়ি তলিয়ে গেছে গঙ্গার জলে। এক সময় যখন জ্যোতি বসু এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন এখান কার বেশ কিছু গঙ্গার পাড় কংক্রিটের বাধানো হয়েছিলো। তার পর সেও নষ্ট হয়েছে। বোল্ডার দিয়ে ও বাধানো হয়েছে। কিন্তু এই জমানায় নেতারা আসে আর ঘুরে যায়। কোন কাজ হয়নি।
মানুষের সমস্যা এই ব্লকে এতোটাই তীব্র যে,ভাঙনের নাম শুনলে চমকে ওঠে এই ব্লকের গঙ্গা পাড়ের মানুষ জন। বলাগড়ের গুপ্তিপাড়া ও জিরাটের গঙ্গার ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে বিঘার পর বিঘা জমি। শ্মশান ঘাট, ঘাটের সিঁড়ি, ইট ভাঁটার জমি তলিয়ে গেছে গঙ্গায়। গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাটের খুব কাছে ভাঙনের আশঙ্কা। বলাগড় ব্লকের কুন্তিরঘাট, ডুমুরদাহ, জিরাট, শ্রীপুর, বেহুলা এলাকায় গঙ্গা ভাঙন অব্যাহত। জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চর খয়রামরি এলাকায় ভাঙন তীব্র। ভাঙনের ফলে গঙ্গায় তলিয়ে গেছে হাজার হাজার বিঘা চাষের জমি। বাড়ি থেকে শুরু করে স্কুলের খেলার মাঠ। গঙ্গা তার নিজের গতিতে বয়ে যাওয়ার ফলে ভাঙনের কবলে পরেছিলো স্কুল বাড়িও।
Comments :0