UKRAINE WAR

ইউক্রেন নিয়ে ফের ভোটদানে বিরত ভারত

আন্তর্জাতিক

ukraine war india russia ukraine usa united nations bengali news

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে রাষ্ট্রসঙ্ঘে আনা প্রস্তাবে ফের ভোট দিল না ভারত। সাধারণ পরিষদের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে প্রস্তাবটির পক্ষে ১৪১ টি দেশ ভোট দেয়। বিরুদ্ধে ভোট দান করে ৭ টি দেশ। ভারত, চীন, বাংলাদেশ সহ ৩২টি দেশ ভোট দানে বিরত থাকে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধবাজ জোট ন্যাটোর লাগাতার পূর্ব ইউরোপে বিস্তার এবং ইউক্রেনকে সেই চক্রান্তের শরিক করার বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স সহ উন্নত পশ্চিমী দেশগুলির শুরু থেকেই ইউক্রেনকে অস্ত্র, প্রযুক্তি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দিক থেকে সাহায্য করতে থাকে। 

সাম্রাজ্যবাদী শিবিরের লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনকে লেলিয়ে ক্রমশ সঙ্ঘাতের পথে রাশিয়ার বিশাল প্রাকৃতিক জ্বালানি সম্পদে থাবা বসানো। অতীতে ঠিক যেভাবে ইরাক, লিবিয়ার মতো আরব ভূখণ্ডের দেশগুলিতে মার্কিনীরা বেপরোয়াভাবে আগ্রাসন চালিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে (ইউএনজিএ) রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে আনা প্রস্তাবটিতে সার্বিক, ন্যায়সঙ্গত ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্টার উপদান নেই জানিয়ে ভোট দেয়নি ভারত।

 রাষ্ট্রসঙ্ঘে আলোচনার সময়ে ভারতের প্রতিনিধি প্রস্তাবটির সীমাবদ্ধতার দিকটি উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে তিনি জানান, এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধে ও সুদূরপ্রসারী শান্তির জন্য নয়াদিল্লির কাঙ্ক্ষিত সমাধান ভাবনার সঙ্গে যা সামঞ্জস্যপূর্ণও নয়।
রাষ্ট্রসঙ্ঘে প্রস্তাবটির পক্ষে ভোটদানের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি এবং ইউক্রেনের পক্ষ থেকে ভারতকে জানান হয়। ওই প্রস্তাবে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ বন্ধ এবং অধিকৃত অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যহারের কথা উল্লেখ ছিল। কিন্তু খুব অদ্ভুতভাবে গত প্রায় এক বছর ধরে ইউক্রেনকে ঢাল করে হানাদার ন্যাটো জোটের কার্যকলাপ নিয়ে টুঁ’ শব্দটি পর্যন্ত করা হয়নি। উল্লেখ’ই ছিল না রাশিয়ায় ঘটে চলা একের পর এক নাশকতার। আন্তর্জাতিক মহলে যার নেপথ্যে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার মদতে কিয়েভের হাত আছে বলেই মনে করা হয়।


অধিবেশনে প্রস্তাবটি সংখ্যাধিক্য ভোটে গ্রহণের পরে রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিরা কাম্বোজ জানান, ‘‘ইউক্রেন সংঘাতের বর্ষপূর্তি হলো। এখন সময় এসেছে আমাদের নিজেদের কিছু প্রসাঙ্গিক প্রশ্ন করার।’’

তিনি আরও বলেন,‘‘উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য এমন কোনও সম্ভাব্য সমাধান সূত্রের ধারে কাছে ও কি আমরা যেতে পেরেছি। এমন কোনও প্রক্রিয়া যাতে দুই পক্ষ জড়িত নয় তার মধ্য দিয়ে কোনও মীমাংসায় আসা কি সম্ভব।’’

ভারতের তরফে জানানো হয়, ইউক্রেন সংঘাতের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাক্রম সমগ্র দক্ষিণ গোলার্ধকে ভুগতে হচ্ছে। তাই দক্ষিণের কণ্ঠ শোনা প্রয়োজন। তাঁদের ন্যায্য উদ্বেগের যথাযথ উত্তর দেওয়া জরুরি।
অন্যদিকে প্রস্তাবটির ওপরে ভোটদানের আগে সাধারণ পরিষদে বেলারুশের আনা দুটি পৃথক প্রস্তাব বিবেচনা করা হয়। কিন্তু পশ্চিমী শক্তির সক্রিয় বিরোধিতার মুখে গৃহীত হয়নি দুটি প্রস্তাবই। প্রস্তাবগুলির বিরুদ্ধে ভোট দেয় ৯০ টি দেশ। ৫০ টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। প্রসঙ্গত, ইউএনজিএ’র অধিবেশনে কোন খসড়া সংশোধনী এবং প্রস্তাব পাশের পক্ষে মোট সদস্য দেশের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন প্রয়োজন। 

Comments :0

Login to leave a comment