বকেয়া বেতন চাওয়ায় ইটভাটার জ্বলন্ত চুল্লিতে শ্রমিককে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ইটভাটার মালিকের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থানা এলাকায়। পুলিশ ঘটনায় এফআইআর নেয় নি বলেও অভিযোগ করেছেন আহত শ্রমিকের পরিবার।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় শ্রমিক শুভঙ্কর কোটালকে (২৩) তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। আহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে শুভঙ্কর কোটাল হলদিয়ার সুতাহাটা থানার কুঁকড়াহাটির মতিরামপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর মামা কার্তিক সরকারের অভিযোগ, ‘‘মাস তিনেক আগে প্রায় ১৪ হাজার টাকা বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শুভঙ্করকে কাজে নিয়ে যায় কেজিবি ইটভাটার মালিক গোপাল বর্মণ এবং রাম হাজরা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছিল না। এর পর বাড়ি ফিরে আসে শুভঙ্কর।’’
কার্তিক সরকার জানান ‘‘এর পর শুভঙ্করকে আবার কাজে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভাটা মালিকরা বাড়িতে এসে ৫ হাজার টাকা মিটিয়ে দেন। প্রতিশ্রুতি দেন বকেয়া টাকাও মিটিয়ে দেওয়ার। কিন্তু ওঁরা টাকা দেননি। এর পর গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাতের দিকে দুই ভাটার মালিকের সঙ্গে টাকা নিয়ে শুভঙ্করের বচসা হয়। সেই সময়ই আমার ভাগ্নেকে ভাটার আগুনে ঠেলে ফেলে দেন দুই মালিক। ভাটার কয়েক জন কর্মী গুরুতর জখম অবস্থায় শুভঙ্করকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।’’
কার্তিক সরকার আরও অভিযোগ করেন ‘‘হাসপাতালে অত্যন্ত আশঙ্কাজনক আমার ভাগ্নে। অথচ পুলিশ প্রভাবশালী ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতেই অস্বীকার করেছে।’’ এ নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘‘এই ঘটনার খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’ তৃণমূলের শাসনে মালিকদের সাহস কতদূর বেড়েছে তার অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে এদিনের এই ঘটনা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়না থানার রামচক গ্রাম পঞ্চায়েতের ছপুকার এলাকায় ইট ভাটায় কাজের বাকি থাকা টাকা চাওয়ায় শ্রমিককে জলন্ত আগুনে চুল্লিতে ঠেলে ফেলে দেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর প্রায় ৮৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় অত্যন্ত আশঙ্কাজনক এই শ্রমিক। পরিবারের পক্ষ থেকে ময়না থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে অভিযোগ নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। ভাটার মালিক গোপাল বর্মন এবং রাম হাজরা পলাতক প্রথমে পলাতক ছিল। পরে পুলিশ দুজনকেই গ্রেপ্তার করেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। ঘটনায় উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়।
Comments :0