কাতারের আল বায়াত স্টেডিয়ামে, জার্মানির কাছে এই ম্যাচ ছিল ডু অর ডাই। তাই তারা কিছুটা সাবধানী ছিল। কিন্তু স্পেন শুরু থেকেই প্রেসিং ফুটবল খেলা শুরু করে। ম্যাচের ৬ মিনিটেই প্রায় গোলের দরজা খুলে ফেলেছিল স্প্যানিশ ব্রিগেড। গাভি এবং আসেনসিও ডুও যেন রীতিমতো ত্রাসের সঞ্চার ঘটাচ্ছিলেন জার্মান রক্ষণভাগের ওপরে। ম্যাচের একেবারে শুরুতে, তাদের থেকে তৈরি হওয়া আক্রমণ এবং ঠিকানা লেখা পাস রিসিভ করেই দানি অলমোর জোরালো শট। কিন্তু জার্মান গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যারের হাতে লেগে সোজা ক্রসবার এবং প্রতিহত।
যদিও পাল্টা আক্রমণে যায় জার্মানিও। আক্রমণ এবং প্রতি আক্রমণে শুরু থেকেই জমে ওঠে এই হাইভোল্টেজ ম্যাচ। স্পেনের লক্ষ্য ছিল তরুণ ব্রিগেড নিয়ে মাঝমাঠের দখল নেওয়া। কিন্তু জার্মানরাও পাল্টা চাপ বাড়াতে থাকে।
কিন্তু স্প্যানিশ ব্রিগেডের মুহুর্মুহু আক্রমণ, বুসকেটস, সিমনের যৌথ আক্রমণ ফলায় রীতিমতো নাজেহাল হতে হয় জার্মান ডিফেন্ডারদের। ৩৪ মিনিটে আবার দানি অলমোর স্কোয়ার পাস থেকে জোরালো শট ফেরানের কিন্তু তা বাইরে চলে যায়। যদিও এটি অফসাইড ছিল। কিন্তু স্প্যানিশরা লাগাতার আক্রমণ তুলে নিয়ে আসছিল। এরই মধ্যে ফাউলের দায়ে হলুদ কার্ড দেখেন জার্মান ডিফেন্ডার টি কেহরার। ম্যাচের ৪০ মিনিটে, রুডিগারের হেডে গোল বাতিল হয় অফসাইডের জন্য। প্রথমে রেফারি গোল দিলেও পরে ভিএআর প্রযুক্তির মাধ্যমে তা বাতিল ঘোষণা করা হয়। প্রথমার্ধ গোলশূন্যভাবেই শেষ হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ফের চাপ বাড়াতে শুরু করে স্পেন। তবে ছাড়বার পাত্র নয় জার্মানিও। স্প্যানিশ হেডস্যার একটি পরিবর্তন করেন, ফেরান টোরেসকে তুলে মাঠে নামান আলভারো মোরাতাকে। গুণ্ডোগাঁওয়ের পাস ধরেই কিমিচের জোরালো শট দুরন্ত সেভ করেন স্পেন দলের তিনকাঠির প্রহরী সিমনে। কিন্তু জার্মানির দুটি হলুদ কার্ডও হয়। আসেনসিওকে ফাউল করার অপরাধে কার্ড দেখেন গোরেতজকা এবং অলমোকে ফাউল করার জন্য হলুদ কার্ড দেখেন কিমিচ।
ম্যাচের ঠিক ৬২ মিনিটে ডেডলক ভাঙলেন, পরিবর্ত হিসেবে নামা মোরাতা। বলা যেতে পারে সুপার-সাব। বুসকেটসের পাস থেকে বল নিয়ে এগোন জর্ডি আলবা এবং ক্রস বাড়ান মোরাতাকে। ভুল করেননি তিনি এবং সোজা বল জালে জড়িয়ে দেন। স্পেন এগিয়ে যায় ১-০তে। এই গোলের পরেই আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায় গোটা স্প্যানিশ দলের। আসেনসিওর বদলে মাঠে আসেন কোকে।
অন্যদিকে জার্মান কোচ হ্যান্সি ফ্লিক থমাস মুলারকে তুলে নামান ফুলক্রাগকে। ম্যাচের ৭৩ মিনিটে মুসিয়ালার আক্রমণ রুখে দেন স্পেন গোলরক্ষক সিমনে। কিন্তু আবার সেই মুসিয়ালা, ম্যাচের ৮৩ মিনিটে তাঁর অ্যাসিস্ট থেকেই ডানপায়ের জোরালো শটে গোল করে জার্মানির হয়ে সমতা ফেরান ফুলক্রাগ। এরপর আর কোনো গোল হয়নি, ফলে ম্যাচ শেষ হয় ১-১ গোলে অমীমাংসিত ভাবে।
তবে বলপজিশনে অনেকটাই এগিয়ে ছিল স্পেন। প্রায় ৬৪% বল পজিশন নিজেদের দখলে রেখেছিল স্প্যানিশরা। এই বিষয়টি ভীষণই তাৎপর্যপূর্ণ, মাঝমাঠ এবং আক্রমণভাগের অনেকটাই কিন্তু স্পেন তাদের নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছিল। অর্থাৎ, এই ট্রেণ্ড বজায় থাকলে আগামী ম্যাচগুলিতে আরও ভয়ঙ্কর স্পেনকে দেখা যেতে পারে।
Comments :0