বিশ্বে অপুষ্টি, রক্তাল্পতার শিকার মহিলা-শিশুদের প্রতি চারজনের একজনই কী ভারতীয়? সংসদে তোলা ঠিক এই প্রশ্নই এড়িয়ে গেল কেন্দ্র। জাতীয় স্বাস্থ্য পরিবার সমীক্ষার কিছু তথ্য পেশ করলেন বটে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ (WOMEN AND CHILD DEVELOPMENT )মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। কিন্তু আসল প্রশ্নটির নির্দিষ্ট জবাব দিলেন না।
২০১৮ সালে মোদী সরকার নতুন করে দেশে রক্তাল্পতার শিকার মহিলা ও অপুষ্ট শিশুদের সংখ্যা শূণ্যে নামিয়ে আনার কর্মসূচি নিয়েছিল। ২০২৫ সালের মধ্যেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে বলেও জানিয়েছিল। কিন্তু ‘ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভে-৫’র (NHFS) রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতে দেখা গিয়েছিল বাস্তবে ভারতীয় মহিলা বা শিশুদের মধ্যে রক্তাল্পতা বা অপুষ্টি কমেনি। বরং করোনা অতিমারীর জেরে সেই সংখ্যা বেড়েছে।
২০১৯-২০২১ সালে ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভে-৫’র তথ্য অনুযায়ী বলছে প্রায় ৩৩ লক্ষ ভারতীয় শিশু অপুষ্ট তার মধ্যে ১৭ লক্ষ মারাত্মকভাবে অপুষ্টিজনিত (Malnourished)রোগে ভুগছে। শতাংশের হিসেবে ৩৫ শতাংশ শিশু অপুষ্টির শিকার। ওই সমীক্ষাতেই প্রকাশ হয়েছে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ভারতীয় মহিলাদের ৫৭ শতাংশই রক্তাল্পতায় ভুগছেন।
ওই সমীক্ষার ভিত্তিতেই শীতকালীন অধিবেশনে শনিবার সংসদে বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন যে করোনা পরবর্তী সময়ে কি ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে রক্তাল্পতা ও শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার কমানো সম্ভব হয়েছে। প্রশ্ন করা হয়, বিশ্বে রক্তাল্পতায় ও অপুষ্টজনিত রোগে ভোগা শিশু ও মহিলাদের এক তৃতীয়াংশই কী ভারতীয়, এই তথ্য কী সঠিক?
উত্তরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি (Smriti Irani)এই প্রশ্নের নির্দিষ্ট উত্তর দেননি। বরং ২০২১ সালে প্রকাশিত হওয়া ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভে-৫’র তথ্যটাই তুলে ধরেন। কেন্দ্রীয় সরকারের এাকাধিক যোজনার উল্লেখ করেন লোকসভায়।
প্রসঙ্গত শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি ও ১৫-৪৯ বয়সী মহিলাদের মধ্যে রক্তাল্পতা হার নিয়ে সারা বিশ্বে ল্যানসেট (Lancet)একটি সমীক্ষা করেছে। তাতে শীর্ষে রয়েছে ইয়েমেন, তারপরেই ভারত। ভারতের মধ্যে সর্বাধিক অপুষ্ট শিশু ও রক্তাল্পতার শিকার মহিলারা রয়েছেন বিহার ও গুজরাটে। যে গুজরাট মডেলকে বারবার উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে মোদী সরকার। আরও বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় মূলত গ্রামের দিকে তপশিলি ও আদিবাসী মহিলা ও শিশুরা মারাত্মক ভাবে অপুষ্টির শিকার।
Comments :0