হুগলির দাদপুর চক কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা সনাতন ও পূর্নিমা দুর্লভ। তাদের প্রতিবেশি এক বছর ১৩ র নাবালিকা টুম্পা দুর্লভের জ্বর হয় গত সপ্তাহে। নাবালিকার বাবা সনৎ দুর্লভ ওঝা ডাকেন মেয়ের জ্বর ঠিক করতে। ঝাড়ফুঁক করে ওঝা নিদান দেয় নাবালিকাকে ডাইনি ধরেছে। সেই ডাইনি হল পূর্নিমা যার এক ছেলে মারা গেছে কয়েক বছর আগে। গ্রামে সালিশি ডেকে দম্পতিকে জানিয়ে দেওয়া হয় তাদের গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হবে। প্রতিবাদ করায় মারধর করা হয় তাদের। দাদপুর থানার পুলিশ গিয়ে দম্পতিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ তাদের কিছুদিন কোন আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতে বলেন। আত্মীয় বাড়ি গেলে সেখানেও ভয় দেখানো হয়। এরপর ওই দম্পতি চুঁচুড়া স্টেশনে গিয়ে আশ্রয় নেন। চারদিন সেখানে চা বিস্কুট খেয়ে দিন কাটে। গ্রামে চাষের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাড়ি ফিরতে চেয়ে দাদপুর পঞ্চায়েত ও থানায় আবেদন জানান দম্পতি। গ্রামে ফিরলে তাদের উপর আবার আক্রমন হতে পারে মনে করে ঝুঁকি নিতে চায়নি প্রশাসন।
দাদপুর পঞ্চায়েতের প্রধান জয়া মির্দা বলেন,‘ঘটনা পোলবা-দাদপুর বিডিওকে জানানো হয়েছে। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে প্রৌঢ় দম্পতির বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হবে।’
গত শুক্রবার থেকে দাদপুরের শিক্ষক সফিউল ইসলামের বাড়িতে রয়েছেন দম্পতি। সফিউল ইসলাম বলেন, কুসংস্কার এখনো রয়েছে গ্রামে। তাই দম্পতিকে জোর করে গ্রামে ফিরিয়ে দিলেই হবে না। গ্রামবাসীদের মন থেকে ডাইনির কুসংস্কার দূর করতে হবে। এর জন্য বিজ্ঞান মঞ্চকে নিয়ে প্রশাসনকে কাজ করতে হবে। আর এই ধরনের ওঝা গুণিনদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
ছবি:- ডাইনি সন্দেহে বাড়ি ছাড়া সনাতন ও পূর্নিমা দুর্লভ।ছবি অভীক ঘোষ।
Comments :0