আড়াইশো টনের বিজ্ঞাপনী বোর্ড রেলের জমিতে লাগানো হয়েছিল। অনুমতি দিয়েছিল বিজেপি জোট সরকার পরিচালিত প্রশাসক বোর্ড। বৃহণ্মুম্বাই কর্পোরেশনে আটকে রাখা হয়েছে নির্বাচন। কেন এমন বিপজ্জনক বোর্ড লাগানোর অনুমতি দেওয়া হলো? এই বোর্ড পড়েই তো ঘাটকোপারে ১৪ জনের প্রাণ গিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে এমনই কড়া প্রশ্ন ছুঁড়েছেন কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ। বুধবার মহারাষ্ট্রে নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। নাসিকের ডিন্ডোরিতে বিজেপি’র নির্বাচনী জনসভায় দিয়েছেন বক্তৃতা। সন্ধ্যায় ‘রোড শো’ করবেন মুম্বাইয়ে। মোদীর কর্মসূচির কারণে দুপুর দু’টো থেকে রাত দশটা পর্যন্ত যান নিয়ন্ত্রণে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ জারি করেছে পুলিশ। ঘাটকোপার থেকে জাগ্রুতি নগর পর্যন্ত মেট্রো চলাচল সন্ধ্যা ৬টা থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে।
মোদী ডিন্ডোরিতে যদিও জবাব দেওয়ার ধারকাছ দিয়ে যাননি। শেষবেলায় টেনে আনছেন সেই রামমন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গ। মোদী বলেছেন, ‘‘নকল শিবসেনা (উদ্ধব থ্যাকারের) এবং নকল এনসিপি (শারদ পাওয়ারের) শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে যাবে।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘অযোধ্যায় রামমন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েও উদ্ধব থ্যাকারে যাননি, কংগ্রেসকে অনুসরণ করেছেন। শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বাল থ্যাকারের স্বপ্ন ছিল রামমন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠা।’’
শিবসেনাকে ভাঙিয়ে একনাথ শিন্ডের অনুগামী এবং এনসিপি-কে ভাঙিয়ে অজিত পাওয়ারের অনুগামীদের পক্ষে টেনে জোট করেছে বিজেপি। সেই জোটই চালাচ্ছে সরকার। থ্যাকারে আগেও বলেছেন যে অযোধ্যায় কোনও হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়নি। হয়েছে বিজেপি’র রাজনৈতিক কর্মসূচি। আরও ঠিক করে বলে নরেন্দ্র মোদীর নিজস্ব কর্মসূচি। সেখানে যোগ দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় দল ভাঙানোয় বিজেপি’কে ঘিরে অসন্তোষ রয়েছে। বেরিয়ে যাওয়া শিন্ডে এবং অজিত পাওয়ারও ক্ষোভের আঁচ টের পাচ্ছেন বলে জানাচ্ছে রাজনৈতিক মহল।
মোদী আবার বলেছেন, ‘‘আমাকে স্বৈরাচারী বলে দেশের ১৩০ কোটি মানুষকে অপমান করছে বিরোধীরা।’’ আর বিরোধীরা বলছেন, অতীতে গুজরাটের গণহত্যার প্রসঙ্গ তুললেই ১৩ কোটি গুজরাটির অপমানের কথা বলতেন সে সময়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন মোদী। মোদীর নীতি সব ভারতীয়ই সমর্থন করেন কোথায় ঠিক হলো! সংবিধান, সংসদের তোয়াক্কা না করে দেশ চালিয়েছেন। ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধুলোয় মিশিয়ে ধর্মের নামে ভোট চাইছেন, স্বৈরাচারী বলা অন্যায়?
জয়রাম রমেশ বড় অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের বিজেপি জোট সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি বলেছেন, ‘’১৮ মাস ধরে কর্পোরেশনের ভোট আটকে রেখেছে বিজেপি জোট সরকার। আসন পুনর্বিন্যাস আর ওবিসি সংরক্ষণের যুক্ত দিচ্ছে। আসলে লোকসভা ভোটের আগে হারের ভয়ে মুম্বাইয়ে পৌর নির্বাচন করায়নি। এই সরকারই বোর্ড চালাচ্ছে। তারাই এমন বিপজ্জনক বিজ্ঞাপনী বোর্ড লাগাতে দিয়েছে। প্রাণ গিয়েছে ১৪ জনের। আর মোদী মুম্বাইয়ে এখনই গিয়েছেন ‘রোড শো’ করতে।’’
রমেশের অভিযোগ, ‘‘এনডিএ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ১৪ মে বারাণসীতে চলে গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদীর মনোনয়ন জমা দেওয়ার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। তখনও মুম্বাইয়ে বিজ্ঞাপনী বোর্ডের নিচ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার হচ্ছে।’’
Comments :0