Barun Biswas

ভাইয়ের খুনে জ্যোতিপ্রিয়র হাত আছে, ফের সরব বরুণের দিদি

রাজ্য

 গাইঘাটার সুটিয়ায় শিক্ষক বরুণ বিশ্বাসকে খুনের ঘটনায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত আছে। বৃহস্পতিবার একথা আবার বলেছেন নিহত শিক্ষকের দিদি প্রমিলা বিশ্বাস। তিনি বলেন, অতীতে একথা বলার জন্য জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাঁর বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকার মানহানির মামলা করে হেনস্তা করেছিলেন। তিনি এদিন অভিযোগ করে বলেন, মামলাটিকে গুরুত্বহীন করে দিচ্ছে পুলিশ। কারণ, এই খুনের মামলায় ৫২ জন সাক্ষীর মধ্যে দীর্ঘ ১১ বছরে মাত্র ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। 
শিয়ালদহ মিত্র ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার সুটিয়ার বাসিন্দা বরুণ বিশ্বাসের খুনের মামলায় সাক্ষী হতে চেয়ে বৃহস্পতিবার বনগাঁ আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বরুণের দিদি প্রমিলা বিশ্বাস। বরুণ বিশ্বাস খুনের মামলায় গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী তাঁর বাবা জগদীশ বিশ্বাস। তাঁকে সাক্ষী হিসাবে ডাকা বা তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের পথে হাঁটছে না পুলিশ। জগদীশ বিশ্বাসকে কোভিডের আগে আদালতে ডাকা হয়েছিল। সেই সময়ে তিনি শরীর খারাপের কারণে হাজিরা দিতে পারেননি। এরপর তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য বারংবার আদালতে অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও তাঁকে ডাকা হয়নি। এদিন বরুণ বিশ্বাসের খুনের মামলার আইনজীবী জানিয়েছেন, বরুণ বিশ্বাসের বাবার বয়স প্রায় ৮০ বছর। আগামীদিনে তাঁর স্মৃতিভ্রম হতে পারে। আবার জীবনাবসানও হতে পারে। এসব সত্ত্বেও জগদীশ বিশ্বাসকে ডাকা হচ্ছে না। তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হচ্ছে না।
এদিন প্রতিবাদী মঞ্চের সদস্য বরুণের দিদি জানিয়েছেন, ‘‘এই খুনের মামলায় সাক্ষীদের চিনি না। তা সত্ত্বেও গুরুত্বপূর্ণ এই মামলায় ইচ্ছে করে গাফিলতি করা হচ্ছে। কারণ, এই খুনের ঘটনার পেছনে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত আছে। এই কথা বলার জন্য অতীতে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আমার বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকার মানহানির মামলা করে আমাকে হেনস্তা করেছিলেন।’’  তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘‘এই খুনের মামলায় এফআইআর করেছিলেন আমার বড় ভাই। পুলিশ একটি সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছিল আমার দাদাকে দিয়ে। তারপর ওই সাদা কাগজে পুলিশ নিজে এফআইআর লিখে নেয়। কিন্তু ‌এফআইআর’র কপিতে সই আমার বড় ভাইয়ের থেকে যায়।  জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে আড়াল করতেই এই মামলার তদন্তে ঢিলেমি হচ্ছে। এই রাজ্যের পুলিশ এবং সিআইডি মিলে এই কাজ করছে।’’  
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ৫ জুলাই গোবরডাঙা স্টেশনের বাইরে সুটিয়া প্রতিবাদী মঞ্চের সদস্য প্রতিবাদী শিক্ষক বরুণ বিশ্বাস দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয়েছিলেন। খুনের পর দীর্ঘক্ষণ মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন তিনি। অনেক পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছিল। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই খুনের ঘটনায় ৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছিল। এদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এই খুনের মামলায় ৫২ জন সাক্ষীর মধ্যে দীর্ঘ ১১ বছরে মাত্র ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এদিনও এক সাক্ষীকে ডাকা হয়েছিল, কিন্তু শুনানি হয়নি। সাক্ষ্য গ্রহণের কাজ হয়নি। ২০১২ সাল থেকে ৪ বার সরকারি আইনজীবী বদলানো হয়েছে। 
এদিন নিহত বরুণ বিশ্বাসের দিদি প্রমিলা বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘‘এই খুনের মামলায় তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলে মামলা যথেষ্ট গুরুত্ব পাবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৭ মার্চ। এই খুনের ঘটনার ঠিকভাবে তদন্ত করতে সিআইডি নয়, সিবিআই তদন্ত চাইছি। নচেৎ এই খুনের মামলায় দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি পাবে না। আর এই খুনের আড়ালে কে, সেটাও জানা যাবে না।’’

Comments :0

Login to leave a comment