RAIL ACCIDENTS CAG

দুর্ঘটনার রিপোর্ট সময়ে জমাই পড়ে না,
গাফিলতি ধরে বলেছিল সিএজি

জাতীয়

যাত্রী সুরক্ষার নামে ঢাউস তহবিলের ঘোষণা হয়। কিন্তু বরাদ্দ হয় না। বরাদ্দ যা হয় তা খরচ হয় না। কর্মী নিয়োগ হয় না। দুর্ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট সময়ে জমা পড়ে না। রিপোর্টে যে ফাঁক ধরা পড়ে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

রেল মন্ত্রক এবং রেলওয়ে বোর্ডের ভূমিকার ত্রুটিতে এমন বিষয়গুলির দিকে আঙুল তুলেছিল কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল বা সিএজি। সরকারি আয় এবং খরচের হিসেব পরীক্ষক সিএজি জানিয়েছে রেলের ট্র্যাকের অবস্থা নজরদারিতে ত্রিশ থেকে একশো শতাংশ পর্যন্ত ঘাটতি রয়েছে। 

বালেশ্বরের বাহানগা বাজার স্টেশনে, শুক্রবার যেখানে তিন ট্রেনের সংঘর্ষে প্রায় তিনশো যাত্রী নিহত হয়েছেন, সেই দক্ষিণ-পূর্ব রেলের রুটেও ট্র্যাকে নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সিএজি এই রিপোর্ট পেশ করেছিল ২০২২-এ। সংসদে সেই রিপোর্ট পেশ করা হয়। 

রিপোর্টে বলা হয়, ‘‘২০১৭-১৮ ‘থেকে রাষ্ট্রীয় রেল সংরক্ষা কোষ’ নামে তহবিল চালু হয়েছে যাত্রী সুরক্ষার জন্য। ১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ঘোষণা অনুযায়ী টাকা তহবিলে আসেনি। যা এসেছে তার সম্পূর্ণ অংশ খরচ করা হয়নি। নতুন ট্র্যাক বসানোর খরচ কমেছে।’’

রেল মন্ত্রককে সতর্ক করে সিএজি আরও বলেছিল, ‘‘যাত্রী সুরক্ষার জন্য পরিকাঠামো গড়ার কাজে এই তহবিল তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু খরচের বেলায় কম গুরুত্বপূর্ণ খাতে টাকা দেওয়া হচ্ছে। কোনও তহবিল নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে তৈরি করা হলে খরচ সেই কাজেই হওয়া উচিত।’’ 

রিপোর্ট প্রশ্ন তুলেছে কর্মীর কম সংখ্যা নিয়েও। বলা হয়েছে, ‘‘নজরদারি এবং রক্ষণাবেক্ষণ, যার সঙ্গে যাত্রী সুরক্ষার প্রশ্ন গভীরভাবে জড়িত, তার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে না। বিপদ হলো, প্রয়োজনীয় কর্মী না থাকলে রক্ষণাবেক্ষণের মান নেমে যায়।’’ 

২০১৭ থেকে ২০২২’র মধ্যে ৪২২ বার ট্রেন বেলাইন হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে দায়ী করা হয়েছে। সিএজি’র পর্যবেক্ষণ, ১৭১টি দুর্ঘটনার জন্য ট্র্যাক রক্ষণাবেক্ষণে ত্রুটি জড়িত। ট্র্যাকে অনুমির সীমার বাইরে বিচ্যুতির জন্য ১৫৬টি দুর্ঘটনা হয়েছে। 

দুর্ঘটনার রিপোর্ট সময়ে জমা পড়ে না কেন, সেই প্রশ্নও তুলেছে স্ট্যান্ডিং কমিটি। রেলওয়ে বোর্ড তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করে। সিএজি বলেছে, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ে রিপোর্ট জমা পড়েনি ৬৩ শতাংশ ক্ষেত্রে।’’ রিপোর্ট জমা পড়ার পর মন্ত্রক তা গ্রহণ করতেও দেরি করেছে অনেক ক্ষেত্রে। দুর্ঘটনা এড়াতে নজরদারি বিধি, কর্মীদের প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের মতো বিষয়গুলিতে জোর দিতে সুপারিশ করেছিল সিএজি। 

বালেশ্বরের দুর্ঘটনার প্রাথমিক কারণ হিসেবে সিগন্যালিং ব্যবস্থার ত্রুটি ধরা পড়েছে। তদন্ত যদিও চূড়ান্ত পর্যায়ে যায়নি।  

Comments :0

Login to leave a comment