CPIM Polit-Bureau

৮১ কোটি দেশবাসীকে আরও ৫ কেজি শস্য ভর্তুকিতেই: দাবি পলিট ব্যুরোর

জাতীয়

CPIM Polit-Bureau


মাত্র ৫ কেজি শস্য বিনে পয়সায় দিলেই হবে না। আরও ৫ কেজি শস্য দিতে হবে খাদ্য সুরক্ষা আইন অনুযায়ী ভর্তুকিতে। দু’দিনের বৈঠকের পর এই দাবি জানিয়েছে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো। 
বুধবার বিবৃতিতে পলিট ব্যুরোর দাবি, সরকারি বিনিয়োগ বিপুল মাত্রায় বাড়াতে হবে। কাজের সুযোগ তৈরি হয় পরিকাঠামোর এমন ক্ষেত্রগুলিতে বিনিয়োগ করতে হবে কেন্দ্রকে। তা না হলে কর্মসংস্থান এবং ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে না। শহরে ৯.৬ শতাংশ ও গ্রামে ৭.৮ শতাংশ হারে বেকারি, শিল্প উৎপাদন ৮.৮ শতাংশ কমে যাওয়া এবং ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন কমে যাওয়ার তথ্যে জোর দিয়েছে পলিট ব্যুরো। বিবৃতিতে বলেছে, দেশের মন্দা পরিস্থিতি গভীর হচ্ছে।

বুধবার বিবৃতিতে পলিট ব্যুরো জানিয়েছে যে কলকাতায় ২৮-৩০ জানুয়ারি কলকাতায় কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হবে।
প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনাকে কার্যত তুলে দিয়েছে কেন্দ্র। খাদ্য সুরক্ষা আইনের সঙ্গে এই প্রকল্পকে মিশিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সরকারি ঘোষণায়। পলিট ব্যুরো বলেছে, ৮১.৩৫ কোটি মানুষকে ৫ কেজি শস্য বিনামূল্যে সরবরাহ করার ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু খাদ্য সুরক্ষা আইনে আরও ৫ কেজি পাওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে চালের জন্য কেজিতে ৩ টাকা, গমে ২ টাকা, এবং অন্য শস্যে ১ টাকার বিনিময়ে পাওয়ার কথা। কিন্তু তা না থাকায় এই শস্য কিনতে হবে বাজারদরে। যেখানে চালের বাজার দর কেজিতে ৪০ টাকা ছাড়িয়ে, গমের বাজারদর কেজিতে ৩০ টাকার বেশি। 
পলিট ব্যুরো বলেছে, চড়া বাজারদামে কোটি কোটি জনতার ওপর নিষ্ঠুর আঘাত নামিয়েছে কেন্দ্র।  ৫ কেজি শস্য খাদ্য সুরক্ষা আইনে ঠিক করা দামেই তাঁদের দিতে হবে। 

উল্লেখ্য, গরিব কল্যাণ যোজনা চালু হয় করোনাজনিত লকডাউন পরিস্থিতিতে। কিন্তু দেশবাসীর খাদ্যের সঙ্কট যায়নি। পলিট ব্যুরো এই প্রসঙ্গে বলেছে, বিশ্ব ক্ষুধা সূচকও দেখিয়েছে দেশের পরিস্থিতি বিপজ্জনক। কিন্তু এই ধরনের সমীক্ষাকে সমানে অস্বীকার  করে গিয়েছে কেন্দ্র। এখন খাদ্য সুরক্ষা আইনে এই তথাকথিত ‘বিনামূল্যে’ রেশন প্রকল্পের ঘোষণা করতে হলো। কেন্দ্রকে মেনে নিতে হলো এ ছাড়া ক্ষুধার তাড়না থেকে বাঁচার আর কোনও পথ নেই। 

বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে বিদ্বেষ এবং মেরুকরণে। বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর খোলাখুলি মুসলিমদের মোকাবিলা করার জন্য অস্ত্র তৈরি রাখতে বলছেন। এই বিদ্বেষভাষণের কড়া নিন্দা করে পলিট ব্যুরো বলেছে, কর্তৃপক্ষের উচিত নিজেদেরই ফৌজদারি মামলা দায়ের করে ব্যবস্থা নেওয়া। তার বদলে অভিযোগ জমা পড়ার অপেক্ষায় থাকার যুক্তি দেওয়ার হচ্ছে। ঘৃণা, হিংসা এবং সন্ত্রাস ছড়ানোয় দায়ীদের সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে। 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের ওপর বাড়তে থাকা আক্রমণে ক্ষোভ জানিয়েছে পলিট ব্যুরো। খ্রীস্টানদের ওপর আক্রমণ বাড়ছে। সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের মৌলানা আজাদ জাতীয় ফেলোশিপ কেন্দ্র বাতিল করেছে। একাধিক স্কলারশিপ দেওয়ার যুক্তি দেওয়া হয়েছে। পার্টি মনে করিয়েছে যে অনেক রাজ্যেই অন্য অনগ্রসর অংশ হিসেবে মুসলিমদের চিহ্নিত করা হয় না। এই অজুহাত একেবারে মিথ্যা। ফলে এই ফেলোশিপ চালু করার দাবি জানানো হয়েছে। 

পলিট ব্যুরো বলেছে, ত্রিপুরায় স্বচ্ছ এবং অবাধ নির্বাচন করতে হলে আগে গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। এই প্রসঙ্গে বামপন্থীদের সঙ্গে কংগ্রেসের যৌথ আবেদনের উল্লেখ করা হয়েছে পলিট ব্যুরোর বিবৃতিতে। যৌথ আবেদনে গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন ত্রিপুরায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে সিপিআই(এম)-সহ ৬ দল। 
 

Comments :0

Login to leave a comment