রাধাগোবিন্দ মান্না: দিঘা
দিঘায় মন্দির উদ্বোধনের দিন ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ৩০ এপ্রিল দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন। প্রতি বছর রথযাত্রা উৎসব হবে, সে ঘোষণাও করলেন সরকারের প্রধান। তবে ভিটে হারানো ২২টি পরিবারের সু্ষ্ঠু পুনর্বাসনের পরিকল্পনা মমতা ব্যানার্জির বক্তব্যে শোনা গেল না বুধবার।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ধর্মীয় উপাসনাস্থল তৈরির এই প্রকল্পের কাজ কতটা এগিয়েছে তা দেখতেই এদিন দিঘায় এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
পুরীর অনুকরণে প্রায় ২০ একর জমির ওপর তৈরি দীঘার নির্মীয়মান ‘জগন্নাথ ধাম’।
কয়েক বছর আগে এই জমির উপর ছোটখাটো দোকান নিয়ে সংসারের রুটি রুজি কোন ভাবেই চালিয়ে যাচ্ছিল পদিমা ও আশেপাশের গ্রামের গরিব বাসিন্দারা।
মন্দিরের পরিকল্পনা হতেই ২২টি পরিবারকে ভিটেচ্যুত হতে হয়েছে। তাঁদের পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এলাকার প্রভাবশালী মহল। কিন্তু উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলির অভিযোগ, হাসপাতালের পাঁচিল লাগোয়া ২০ ফুট জায়গা মাত্র দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের ঠাঁই সেই পলিথিন ও কাপড় ঘেরা হাসপাতালের পিছনে আবর্জনার স্তূপে।
প্রান্তিক এই পরিবারগুলির দিন চলত পর্যটকদের মুখে চা, মুড়ি, চপ তুলে দিয়ে।
জানা গিয়েছে, মন্দির সংলগ্ন জেলা পরিষদের ভবনও নিয়ে নেওয়া হবে ট্রাস্টির প্রয়োজনে।
পুরীর মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে দিঘার এই জগন্নাথ মন্দির। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর বলেছেন, পুরীর সঙ্গে দিঘার মন্দিরের তুলনা করব না। কারণ বহু পুরোনো সেই মন্দির। রাজ রাজাদের আমলে তৈরি। দিঘায় মন্দির তৈরি হচ্ছে সরকারি উদ্যোগে। দুশো পঞ্চাশ কোটি টাকার বেশি খরচ হবে। মুখ্যমন্ত্রী সরকারি টাকায় মন্দির বানাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার মেদিনীপুরের কৃষকদের জমি দিয়েছিল। আবার শিল্পাঞ্চলও তৈরি করেছিল। বিভিন্ন অংশেরই মত, মুখ্যমন্ত্রী সেসব ভুলিয়ে দিতে চাইছেন। ১৯৮৪-র জানুয়ারিতে উৎপাদন শুরু করা কোলাঘাট থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের কথা ভুলিয়ে দিতে চাইছেন। তমলুক জেলা সদর বা পেটুয়াঘাট মৎস্য বন্দরকে ভুলিয়ে দিতে চেয়েছেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইসকন কলকাতা) রাধারমণ দাস, সনাতন ধর্মের প্রতিনিধি, স্থানীয় পুরোহিত অনেকেই থাকবেন সেই বোর্ডে। ট্রাস্টিতে থাকবেন ইসকনের পাঁচজন , চার জন স্থানীয় প্রতিনিধি এবং চারজন সনাতন ধর্মাবলম্বী।
Comments :0