UCC CONGRESS

অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিতর্ককে অপ্রয়োজনীয়ই মনে করছে কংগ্রেস

জাতীয়

UCC CONGRESS

অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিতর্কে অবস্থান একই রেখেছে কংগ্রেস। এর আগে আইন কমিশন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রণয়নকে অপ্রয়োজনীয় আখ্যা দিয়েছিল। নতুন আইন কমিশন তা নিয়ে নতুন করে মতামত জানানোর বিজ্ঞাপন দিয়েছে। আইন কমিশনের অবস্থান পরিবর্তন কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। 

গত সপ্তাহে ভোপালে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিতর্ককে সামনে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে। বিয়ে, উত্তরাধিকার, পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত ব্যক্তিগত আইনে একটিই কাঠামোর প্রস্তাব রয়েছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধিতে। বিজেপি এবং আরএসএস বিভিন্ন ভোটে বিষয়টিকে সামনে এনেছে। মুখ্যত মুসলিমদের বিবাহ সংক্রান্ত ব্যক্তিগত আইনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে।

মোদী বিশদে উল্লেখ না করে ভোপালে বলেছেন এক দেশে দুই আইন থাকে কিভাবে। আরও বলেছেন যে ‘একই পরিবারে দু’রকম আইন থাকবে কেন?’ 

রবিবার জাতীয় কংগ্রেস কমিটির সাংবাদিক সম্মেলনে দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়। ভোপালে মোদীর ভাষণের পরই কংগ্রেসের বক্তব্য ছিল, প্রধানমন্ত্রী জ্বলতে থাকা মণিপুর নিয়ে চুপ। দামের জ্বালায় দেশ জ্বলছে, নরেন্দ্র মোদী তা নিয়েও চুপ। স্বাধীনতার পর লাগাতার কর্মহীনতার হার সবচেয়ে বেশি, তবু মোদী নীরব। দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরাতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি সামনে আনছেন। লোকসভা ভোট এবং তার আগে বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতে বিভাজনের কৌশল ফের নিয়েছে বিজেপি এবং আরএসএস। 

কোনও কোনও অংশের বক্তব্য, কংগ্রেস সরাসরি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে কিছু বলছে না। এদিন রমেশ বলেছেন, ‘‘গত ১৫ জুন কংগ্রেস বিবৃতি দিয়েছে। নতুন আইন কমিশন কেন বিষয়টিতে জাতীয় স্তরে মতামত চেয়ে পাঠালো তা জানতে চেয়েছে। কারণ আগের আইন কমিশন এই বিধিকে অপ্রয়োজনীয় আখ্যা দিয়েছিল। এরপর নতুন করে কিছু ঘটেনি। ওই বিবৃতির বক্তব্যই আমাদের অবস্থান।’’ 

রমেশের সংযোজন, ‘‘আইন কমিশনে বক্তব্য জানানোর সময় এ বিষয়ে বিশদ বক্তব্য জানাবে কংগ্রেস। তবে তার আগে কমিশনের থেকেও জানবে যে তাদের প্রস্তাব ঠিক কী। কিভাবে বিধি প্রণয়নের দিকে এগনোর কথা ভাবা হচ্ছে।’’ 

২০১৮’র আগস্টে একুশতম আইন কমিশন রিপোর্টে জানিয়েছিল যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি ভারতে এখন প্রয়োজনীয় তো নয়ই, এমনকি এখন তা বাঞ্ছিতও নয়।’’ এই বক্তব্য জানানো আগে বিশদে সংবিধানের নির্দেশ এবং আইনি কাঠামো বিভিন্ন স্তরে পর্যালোচনা করে একুশতম আইন কমিশন। নতুন আইন কমিশন ফের তা নিয়েই বিতর্ক আহ্বান করেছে। 

জুনে সিপিআই(এম)’র পলিট ব্যুরো বৈঠকেও এই বিষয়ে আলোচনা হয়। পলিট ব্যুরো একুশতম কমিশনের মতামতকে সামনে রেখেই জানায় যে বিতর্ক খুঁচিয়ে তোলার চেষ্টায় নতুন আইন কমিশনের এমন বিজ্ঞপ্তি। 

রমেশ বলেছেন, ‘‘সরকারে টিকে থাকতে মরিয়া মোদী ধর্মীয় বিভাজন এবং আসল সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।’’ 

এই বিতর্কে বিভিন্ন অংশই মনে করাচ্ছে যে হিন্দুধর্মের মধ্যেও ব্যক্তিগত আইনের আওতায় থাকা পরিবারে মহিলাদের অধিকারের বিষয়টিতে সংস্কার প্রয়োজন। আবার হিন্দুদেরই সব অংশ বিয়ে থেকে উত্তরাধিকারের প্রশ্নে একই রীতি পালন করে না। সিপিআই(এম)’র বক্তব্য, অভিন্ন বললেই কেউ কেউ বোঝাতে চান যেন সমতার কথা বলা হচ্ছে। অভিন্নতা মানেই সমতা নয়। প্রয়োজন সমতার দৃষ্টিভঙ্গিতে চলা।   

Comments :0

Login to leave a comment