বেকারির হার সর্বোচ্চ স্তরে। মূল্যবৃদ্ধি চড়া। এই এলাকাতেও রয়েছে বন্ধ কারখানা। আর ঘৃণা বিদ্বেষের চাষ মেহনতি মানুষের একতাকে ভেঙে দিচ্ছে। একে হারাতে হবে। হারাতে হবে তৃণমূলকেও, বারাকপুর কেন্দ্রে জয়ী করতে হবে বামপন্থীদের।
বারাকপুরে নির্বাচনী জনসভায় এই মর্মে আহ্বান জানালেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। এই কেন্দ্রে সিপিআই(এম) প্রার্থী দেবদূত ঘোষের সমর্থনে বক্তব্য রাখেন তিনি। বৃহস্পতিবার দেবদূত ঘোষের সমর্থনে প্রচার করবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও।
ইয়েচুরি বলেন, ‘‘আমরা গণতন্ত্রকে, সংবিধানকে বাঁচাতে চাই, দেশকে বাঁচাতে চাই। সেজন্যই ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ। বামপন্থীরা এবং কংগ্রেস এরাজ্যে ‘ইন্ডিয়া’-র বোঝাপড়া অনুযায়ী চলছে। এই সমঝোতাই দেশকে বাঁচানোর লড়াইয়ের অংশ। একদল দেশকে বাঁচাতে চাইছেন, সংবিধান বাঁচাতে চাইছেন, তারা সব একদিকে। তাই বাম কংগ্রেসকে শক্তিশালী করা জরুরি। জরুরি দেশকে বাঁচাতে, বাংলাকে বাঁচাতে। তাই হারাতে হবে বিজেপি এবং তৃণমূল, দুই পক্ষকেই।’’
ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘স্বাধীনতার পর বেকারির হার দেশে সবচেয়ে বেশি। জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। সেই সঙ্গে কর্পোরেটের সঙ্গে দেওয়া নেওয়ার দুর্নীতি। তার জন্য নির্বাচনী বন্ড। আমরা বামপন্থীরা নির্বাচনী বন্ডে অর্থ নেইনি। আর এরাজ্যে তৃণমূল বিজেপি’র মধ্যে বোঝাপড়া চলছে।’’
‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ প্রসঙ্গে ইয়েচুরি বলেন, ‘‘দেশকে গভীর বিপদের মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। সম্পদ লুট হচ্ছে, ভ্রষ্টাচার হচ্ছে। মানুষ লুটের শিকার। আর চলছে বিদ্বেষ। দেশকে বাঁচাতে তৈরি হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ।’’
তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলছেন তিনি ‘ইন্ডিয়া’ বানিয়েছেন। এখন বলছেন বাইরে থেকে সমর্থন করবেন। ‘ইন্ডিয়া’-তে নেই, আবার ‘ইন্ডিয়া’-র বিরোধীও না, দু’রকম বার্তা দিচ্ছেন মমতা। ইন্ডিয়া আপনি বানিয়ে থাকলে, নাম দিয়ে থাকলে সরে রয়েছেন কেন?’’
ইয়েচুরি ‘ইন্ডিয়া’-র লক্ষ্য জানিয়ে বলেন, ‘‘মূল্যবৃদ্ধি কমাতে হবে। কাজ দিতে হবে। শান্তি তৈরি করতে হবে। মোদীকে হটাতে হবে। এটাই ইন্ডিয়া-র লক্ষ্য। কংগ্রেস, বামপন্থীরা, ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলি সে কারণেই এক জায়গায় এসেছে।’’
প্রার্থী দেবদূত ঘোষ বলেন, ‘‘মানুষকে পাওনা থেকে বঞ্চিত করে নিজেদের পকেট ভরানোর সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে এরাজ্যে। চোরেরা লুটেরারা ছাত্র যুবদের ভবিষ্যৎ, মহিলাদের ভবিষ্যৎ, কৃষক-শ্রমিকের ভবিষ্যৎ কেড়ে নিয়েছে। মানুষের বিষয় নিয়ে সংসদে সোচ্চার হতে দেখেছেন?’’
তিনি বলেন, ‘‘বিজ্ঞাপন দেখছি ১ হাজার টাকায় পড়াতে হবে। চার লক্ষ ছাত্রছাত্রী কম পরীক্ষা দিয়েছে মাধ্যমিকে। পড়াশোনা শিখে কী হবে, এই ভাবনা বাড়ছে। শিক্ষক নিয়োগ হয়নি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়ছে। সমাজে হতাশা বেড়েছে। বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে প্রতি বছর পরীক্ষার ভিত্তিতে নিয়োগ হয়েছে স্কুলে, মাদ্রাসায়। স্কুলে মাদ্রাসায় আজকে শিক্ষক নেই।’’
দেবদূত ঘোষ বিজেপি প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘গুজরাটে ডবল ইঞ্জিনের সরকার। মাধ্যমিকের সমতুল পরীক্ষায় ১৭০টি স্কুলে একজনও পাশ করেনি। কারণ শিক্ষক নিয়োগ হয়নি।’’ তিনি বলেন, ‘‘মিড ডে মিলের টাকা স্কুলে পৌঁছাচ্ছে না। শোনা যাচ্ছে সেই টাকাও পকেটে পুরে ফেলছে। ইউপিএ-১ সরকারের সময় খাদ্য সুরক্ষা আইন করেছিলাম। রেগা আইন করেছিলাম। কিন্তু লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো নয়। আইনি অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছিল জনতার।’’
BARRACKPUR SITARAM YECHURY
এরাজ্যে ‘ইন্ডিয়া’ মানে বাম-কংগ্রেস, বারাকপুরে ইয়েচুরি
×
Comments :0