সাম্বা ম্যাজিকের পতন। ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৪-২ ব্যাবধানে পেনাল্টি শুট আউটে হেরে কাতার বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ব্রাজিলের।
শুক্রবার কাতারের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে প্রি কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় ব্রাজিল এবং ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচের শুরর দিকে দুই দলের লড়াইই সমানে সমানে ছিল। ম্যাচের ১৩ মিনিটে প্রথম আক্রমণটি আসে ক্রোয়েশিয়ার তরফ থেকে। পেরিসিচ বিপজ্জনকভাবে আক্রমণে উঠে আসেন কিন্তু শেষপর্যন্ত গোল হয়নি। ব্রাজিলের রিচার্লিসন এবং ক্যাসেমিরো প্রথম থেকেই মাঝমাঠের দখল নেওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। অন্যদিকে ক্রোয়েশিয়ার পেরিসিচ এবং মডরিচ জুটিও পাল্টা আক্রমণে আসার চেষ্টা করেন।
ম্যাচের ২০ মিনিটে ভিনসিয়াস এবং রিচার্লিসনের ওয়ান-টু খেলে আক্রমণের চেষ্টা কিন্তু রুখে দেন ক্রোয়েশিয়ান গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। জুরানোভিচের সাথে অফ দ্যা বল চ্যালেঞ্জে জড়িয়ে পড়ে হলুদ কার্ড দেখেন ব্রাজিলের দানিলো। ম্যাচের ৩০ মিনিটে জুরানোভিচের শট বারপোস্টের ওপর দিয়ে না গেলে তখনই খেলার ফলাফল বদলে যেতে পারত। ম্যাচের ৪২ মিনিটে আবার নেইমারের শট আটকে দেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক। প্রথমার্ধ গোলশূন্য ভাবেই শেষ হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে মুহুর্মুহু আক্রমণ তুলে আনে ব্রাজিল। কিন্তু সেই ক্রোয়েশিয়ান গোলকিপার লিভাকোভিচ। তিনকাঠির নীচে যেন পরিত্রাতা হয়ে উঠলেন তিনি। দুর্দান্ত বেশ কিছু সেভ। নাহলে সেই মুহূর্তেই ম্যাচের রঙ বদলে যেতে পারত। ম্যাচের ৫৫ মিনিটে, নেইমার এবং রিচার্লিসন জুটি ফের একবার বন্দী লিভাকোভিচের হাতে।
এবার কিছুটা বাধ্য হয়েই পরিকল্পনায় বদল আনেন ব্রাজিল কোচ তিতে। অ্যান্টনির বদলে মাঠে নামেন র্যাপিনহা। আবার একটু পরেই ভিনসিয়ার জুনিয়রের বদলে মাঠে আসেন রডরিগো। ক্রোয়েশিয়া হেডস্যারও দুটি পরিবর্তন করেন। প্যালাসিচের বদলে আসেন ভ্লাসিচ এবং পেটকোভিচের বদলে আসেন ক্র্যামারিক। মূলত আক্রমণভাগে আরও জোর বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত।
ম্যাচের ৭৬ মিনিটে আবার সেই লিভাকোভিচ, ব্রাজিলের আক্রমণ রুখে দিলেন আবার। দ্বিতীয়ার্ধের শেষেও ম্যাচের ফলের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
স্বভাবতই ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়।
১০৩ মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার তরফ থেকে পেটকোভিচ আক্রমণে উঠে আসেন। কিন্তু গোল হয়নি শেষপর্যন্ত। শেষমেশ ১০৫ মিনিটের মাথায় লুকাস পাকুইয়েতার অ্যাসিস্ট থেকে ডেডলক ভাঙেন নেইমার।
কিন্তু ক্রোয়েশিয়া কী এত সহজে কি হারিয়ে যেতে পারে? না, পারে না। অনেক নাটক বাকি ছিল যে তখনও। ম্যাচের ১১৭ মিনিটে ওরসিচের অ্যাসিস্ট থেকে পেটকোভিচের দুর্দান্ত গোল এবং ফলাফল ১-১। জমে গেল কোয়ার্টার ফাইনাল। শেষপর্যন্ত অতিরিক্ত সময়ের শেষে ফলাফল ১-১ থাকায় ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুট আউটে।
পেনাল্টি শুট আউটে ব্রাজিলের প্রথম শটই রুখে দেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক। অন্যদিকে মারকুইনহসের মিস, হার ব্রাজিলের। ব্রাজিলকে ৪-২ ব্যাবধানে পেনাল্টি শুট আউটে হারিয়ে সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়া।
Comments :0