স্বামী বাজার গিয়েছেন ঘরে শিকল দিয়ে। বাড়িতে কেউ ছিলো না। সেই সুযোগে এক মহিলাকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ তিন জনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ সারা শরীর জুড়ে সিগারেটের ছেঁকা দিয়ে অত্যাচার করা হয়েছে। ঘাটালে নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে। নির্যাতিতা ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ঘাটাল মহকুমা হাডপাতালের নির্যাতিতার স্বামী চিৎকার করে বলছেন, তাঁর স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করছে তিনজন। সারা শরীর জুড়ে সিগারেটের ছেঁকা দিয়ে অত্যাচার করা হয়েছে। বহু কষ্টে তিনি অভিযুক্তদের থেকে তাঁর স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে পেরেছেন। তিনি হাসপাতালের সামনে থাকা সকলকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে বলেন। ঘটনায় হাসপাতাল চত্বরে শোরগোল পড়ে যায়। খবর পেয়ে হাসপাতালে চলে আসে ঘাটাল থানার পুলিশ।
নির্যাতিতার স্বামী বলেন, তারা স্বামী স্ত্রী ঘাটাল শহর এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। সেই বাড়ির অন্য ঘরে মাস খানেক হলো কিছু লোক থাকেন। বৃহস্পতিবার রাত নটা দিকে তিনি প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে ঘর থেকে বের হোন। তাঁর স্ত্রী কানে শুনতে পান না। তাই বাইরের গেটে শিকল লাগিয়ে বাজারে যান। ফিরে এসে দেখেন বাইরের শিকল ভাঙা। ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। দরজায় ধাক্কা দিলেও কোনো সারাশব্দ না মেলায় তিনি দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেন। সেই সময় তিন যুবক দরজা খুলে আড়াল হওয়ার চেষ্টা চালায়। আর রুমের মধ্যে তার স্ত্রী অর্ধ নগ্ন অবস্থায় যন্ত্রনায় কাতরাতে থাকেন। হাত পা বুকে সহ শরীরে নানান স্থানে সিগারেটের ছেঁকা চিহ্ন দেখা যায়। স্ত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসার চেষ্টা করলে ওই তিন যুবক বাধা দিয়ে আটক করে রাখে। মোবাইল কেড়ে নেয়। এরপর গভীর রাতে বহু কসরত করে স্ত্রীকে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাঁর অভিযোগ তিনজন তাঁর স্ত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে। তাঁর উপর জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে অত্যাচার করে।
ঘটনায় অভিযুক্ত তিন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানানো হয় ঘাটাল থানার পুলিশ প্রসাশনের পক্ষ থেকে। নির্যাতিতা মহিলা ডাক্তারি পরীক্ষার সঙ্গে চিকিৎসাও চলছে।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে দলবেঁধে ধর্ষণ সেই সঙ্গে শারীরিক নির্যাতনের প্রমাণ মেলায় শুক্রবার দুপুর নাগাদ তিন জনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ঘাটাল এস ডি পি ও দুর্লভ সরকার বলেন, ‘তিন যুবকের টিআই প্যারেডের জন্য এদিন কোর্টে আনেদন করা হয়েছে। নেওয়া হবে নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দিও।’
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতরা হলো বাপন বাউরি, আকাশ কর্মকার ও জগন্নাথ কর্মকার। বাপন ও আকাশের বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনি এলাকায়। জগন্নাথ ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া এলাকার বাসিন্দা। ওই বাড়িতেই তারা ভাড়া থাকত। ঘাটালে সোলার প্যানেল লাগানোর কাজ করত এক সংস্থার হয়ে। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। অভিযুক্তরা অন্যকোনো অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ প্রসাশন।
শনিবার তিনজনকেই ঘাটাল মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে বলে জানানো হয় প্রসাশনের পক্ষ থেকে।
Comments :0