INSAF RALLY

টুকরো কথা

রাজ্য ফিচার পাতা

স্ত্রীকে হাসপাতালে 
রেখেই পদযাত্রায়
এই তো সেদিন গাড়ি চালিয়ে আসা কমরেড মেঘদূতের স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে, মুর্শিদাবাদের এক হাসপাতালে অপারেশনও হয়। স্ত্রী হাসপাতালে পড়ে আছেন। তবুও কমরেড ইনসাফ যাত্রায় গাড়ি চালিয়েছেন, যেদিন ছুটি হবে সেদিন রাত্রি এগারোটার পর পদযাত্রা শেষ হয়েছে, রাত্রি একটার সময় হাসপাতাল থেকে স্ত্রীকে নিয়ে গিয়ে বাড়িতে রেখে এসেছে আবার রাত্রের মধ্যেই পদযাত্রায় শামিল হয়েছেন।
---------------------------
ঘোমটায় মুখ ঢেকে 
ইনসাফ চাইছে কে?
একমুখ ঘোমটা টেনে চা বাগানের উপকণ্ঠের এক যুবতী তার ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে ইনসাফ চাইতে এসেছিল। তৃণমূলের মাতব্বরদের মদতে লাগাতার ধর্ষণ হয় তাঁর ওপর। স্বাভাবিকভাবে এলাকার প্রশাসন থেকে শুরু করে বিজেপি’র বিধায়কের কাছে ইনসাফ চেয়েও কোনোরকম প্রতিকার পাইনি। ভরসা রেখছেন আমাদের উপর। আর আমরা শপথ নিয়েছি ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে।
-------------------------------------
‘হয় শোধ করো, নয় তো 
স্বামীর ডেথ 
সার্টিফিকেট জমা দাও’

গ্রামীণ অর্থনীতিতে থাবা বসিয়েছে নানা নামের মাইক্রো ফিনান্স সংস্থাগুলো। যা মনে করিয়ে দিচ্ছে বিগত দিনের মহাজনী প্রথা। যে দেশে সরকারের মদতে আম্বানি, আদানিদেরর ঋণ মকুব হয়, সেই দেশে মাইক্রো ফিনান্সের ঋণ শোধ করতে না পারলে পরিবারের কোনও সদস্য, স্বামীর ডেথ সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার হুমকি আসে। যা বকলমে আত্মহত্যার চাপ। এমন অভিযোগও পদযাত্রীরা পেয়েছেন।
----------------------------------------
হাতির হানায় মৃতদের স্মরণ
উত্তরবঙ্গের হাতির হানায় নিহত মানুষদের স্মরণ করেছে ইনসাফ যাত্রা। কেন জঙ্গল থেকে হাতি বাইরে বেরিয়ে আসছে? কেন বন্যপ্রাণকে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসতে হচ্ছে? তৃণমূলের নেতাদের পকেট ভরার অভিপ্রায়ে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলগুলো সাফ হয়ে যাচ্ছে, নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে বন্যপ্রাণ সঙ্কটে পড়ছে, বাঁচার সংগ্রামে বেরিয়ে আসতে হচ্ছে লোকালয়ে, এবং মানুষের সঙ্গে সংঘাত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ন্যূনতম ক্ষতিপূরণ টুকুও পাওয়া যাচ্ছে না সরকারের কাছে।
----------------------------------
‘ফড়েদের দাপট, নিস্তার চাই’
‘ফড়েরাই সব খেয়ে নিচ্ছে। নিস্তার চাই। ফসলের খরচটুকুও উঠছে না।’ এমনই অভিযোগ পদযাত্রীদের জানিয়েছেন কৃষকরা— প্রায় প্রতিটি জেলায়। হিমঘরে আলুর সংরক্ষণ নিয়েও তৃণমূলের নেতাদের দাদাগিরি। সারের কালোবাজারি বীজের অত্যাধিক মূল্য, বিদ্যুতের মূল্য লাগামহীন। ফলে কৃষকেরা কৃষিকাজ থেকে, নিরুৎসাহিত হয়ে পরিযায়ী শ্রমিকে পরিণত হচ্ছেন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে বেছে নিচ্ছে আত্মহত্যার পথ। কৃষকরা জানালেন পদযাত্রীদের প্রায় প্রতিটি জেলায়।
---------------------------------------
চাকরি প্রার্থীদের 
পাশে ইনসাফ যাত্রা

ইনসাফ যাত্রার ৩৭ তম দিনে পদযাত্রীরা হাওড়ার উলুবেরিয়ায়, ধর্মতলায় অবস্থানরত চাকরিপ্রার্থীদের ১০০০ দিনের অবস্থানের সংহতিতে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। সরকারি বঞ্চনার প্রতিবাদে যুবতী চাকরি প্রার্থীর মাথা ন্যাড়া করার দৃশ্য আমাদের হৃদয় বিদীর্ণ করেছে।
----------------------------------------

প্যাডেলে পা 
ইনসাফ চায় মুন্সি

পকেটে ভোটার কার্ডটা দেখে নিলেন। বাকিটা সাইলেকেই। পদযাত্রা মাঝামাঝি বললেন আকবর মুন্সি। যখন কথা হচ্ছে, ইনসাফ যাত্রা তখন পেরিয়ে গিয়েছে শেখপাড়া বাজার।  দুপুরে রানিনগর ডিএন ক্লাবের মাঠে বৃষ্টি হয়েছে। তাও মাথা মুছে চাপ দিয়েছেন সাইকেলের প্যাডেলে। ওদিকে আলো কমছে। বাড়ি ফিরতে হবে। বাড়ি মানে কাহারপাড়া। বর্ডার। বেশ কিছুক্ষণ কথার পর পরিষ্কার হলো ভোটার কার্ডের বৃত্তান্ত। জীবন এখানে যেন একটা খাতার পাতা। সীমান্ত ঘেঁষা নিজের চাষের জমিতে গেলেও সেই পাতায় লাগে বিএসএফ’এর স্ট্যাপ। গুনতিতে একটা জলের বোতল, সাইকেল  আর একটা মানুষেরও একই দাম। একেকটা দিন হিসাব করেই খরচ করতে হয়। ভরা চাষের মরশুমেও  আকবর মুন্সি মাঠ থেকে ফিরে সোজা সাইকেল নিয়ে এসেছেন ইনসাফ যাত্রায়। কিছুটা হেঁটেছেন, কিছুটা চাপ দিয়েছেন সাইকেলের প্যাডেলে। এক ভাই স্কুল ছেড়ে চলে গিয়েছে অন্ধ্র প্রদেশে, খাটতে। আসলে ওর জন্যই হাঁটছি, গম্ভীর মুখে বলছেন আকবর। রাজ্যে যদি কাজ থাকতো, ভাইটাও পড়াশোনা করতো। আমাদের জীবনেও শান্তি থাকতো। আপনিই বলুন ? আকবর মুন্সির ভাবনার অবশ্য জবাব দিতে হয়নি। উত্তর দিয়েছে রাস্তাই।

 

Comments :0

Login to leave a comment