London Book of World Record

মাউথ অর্গান বাজিয়ে বাজিমাত মহিষাদলের অভিনব’র

রাজ্য

রামশংকর চক্রবর্তী- তমলুক


ক্লান্তিহীন ভাবে একটানা মাউথ অর্গান বাজিয়ে বিভিন্ন গানের সুর তুলছে শিল্পী। মুগ্ধ হয়ে শুনছে সবাই। রবীন্দ্র সঙ্গীত থেকে বাংলা আধুনিক গান অথবা হিন্দি গান সব মিলিয়ে ১৩০ টি গান স্বরলীপি না দেখেই বাজাতে পারে সে। শিল্পীর বয়স মাত্র ১০।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল ব্লকের হরিখালী গ্রামের চতুর্থ শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র অভিনব মাল। ছোট্ট বয়সে তার অতুলনীয় কীর্তিতে মন ছুঁয়েছে জেলাবাসীর। তার নজিরবিহীন প্রয়াসকে কুর্নিশ জানিয়েছে লন্ডন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস। আর এই ঘটনায় পরিবারের সদস্য থেকে এলাকাবাসীরা গর্বিত।
স্থানীয় সুশীল ধাড়া স্মৃতি শিশু মন্দির বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র অভিনব। পরিবারে মা, বাবা, দিদি ও অন্যান্যরা রয়েছেন। বাবা সুব্রত মাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মা সোনালী মাল তথ্য মিত্র কর্মী।
সোনালী দেবী জানান, ‘‘ছোটবেলায় শ্বাস কষ্টের সমস্যা ছিল অভিনবর। বাড়িতে সংগীত চর্চা ছিল। মেয়ে হারমোনিয়াম বাজাচ্ছে দেখে ছেলেও মাঝেমধ্যেই হারমোনিয়াম বাজানোর চেষ্টা করত। এর মাঝেই অভিনব বাবা একটি মাউথ অর্গান কিনে আনে তা মুখে দিয়ে বাজানোর চেষ্টা করত অভিনব। শুরুটা সেখান থেকেই। ৬ বছর বয়স থেকে মাউথ অর্গানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল তাকে। বর্তমানে বাংলা ও হিন্দি মিলিয়ে প্রায় ১৩০টির মতো গানের সুর মাউথ অর্গানে বাজাতে পারে অভিনব। টানা বেশ কয়েক ঘন্টা মাউথ অর্গান বাজাতে পারে অভিনব। জেলা , রাজ্য বিভিন্ন স্তরের প্রতিযোগিতায় বহু পুরস্কার জিতেছে। লকডাউনের সময় অনলাইনে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে নজর কাড়ে। এবার 'লন্ডন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস'-এর সম্মান পেল সে’’। 


ইতিমধ্যেই সেই সম্মান বাড়িতে পৌঁছেছে। বাড়ির ছেলের এমন কীর্তিতে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত পরিবারের লোকজন থেকে প্রত্যন্ত গ্রামীণ এই এলাকার মানুষজন। ছাত্রের এই কীর্তিতে খুশি মাউথ অর্গান শিল্পী চয়ন চক্রবর্তীও।
অভিনব মালকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে বঙ্গীয় সাক্ষরতা প্রসার সমিতি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটি, সিপিআই(এম) মহিষাদল ১ এরিয়া কমিটির পক্ষ থেকে বাড়িতে গিয়ে শুভেচ্ছা জানান শচীনন্দন কাঁপ। অভিনবর এখন লক্ষ্য গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ডে নাম তোলা। পরিবারের লোকেরাও বাড়ির ছেলের পাশেই রয়েছেন।
অভিনবর মা সোনালী মাল জানান, ছেলের এই সাফল্যে তিনিও ভীষণ খুশি। তিনি বলেন, "পড়াশোনাতেও অত্যন্ত মেধাবী আমার ছেলে। ছোটবেলা থেকেই সুরের প্রতি টান ছিল তার। হারমোনিয়ামে নিজে নিজেই সুর তুলত। তারপর মাউথ অর্গান যখন হাতে পায় সেটাই ধ্যান-জ্ঞ্যান হয়ে যায়। আমরাও ছেলের এমন প্রতিভাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। প্রশিক্ষকও যথেষ্ট যত্নশীল আমার ছেলের বিষয়ে। কিশোর কুমারের ৩০ টি গান না দেখে সুর করার প্র্যাকটিস চলছে। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড এ নাম নথিভুক্ত করনের কাজ করছি। পড়াশোনার সাথে আগামী দিনে এইটা নিয়েই এগিয়ে যাক সেটাই চাই আমরা।"
 

Comments :0

Login to leave a comment